Dr.H.Kamaly

করোনাভাইরাস রোগ (কোভিড-১৯)


Created By : Dr H Kamaly করোনাভাইরাস কি ?     নাম করোনা ভাইরাস ডিজেজ ১৯ ( কোভিড-১৯ )  ,  যা জীব অথবা প্রকৃতির বিবর্তনে  হতে পারে , আমার ব্যাক্তিগত মতে  এটি সারস -কোভ –… More

আগামী বছরের ডেঙ্গু জ্বরে প্রাণহানির পরিমাণ বেশী থাকবে !!!


                                                                  ভূমিকা ডেঙ্গু জ্বর… More

থায়রয়েড হরমোন ডিজেজ ( THD ) হরমোন -পর্ব -১৮


  থাইরয়েড গ্রন্থি একটি নালীবিহীন গ্রন্থি; যা শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। থাইরয়েড শব্দটি গ্রীক শব্দ যার অর্থ বর্ম। এটি গলার সামনে নিচের দিকে ও দু’পাশে থাকে। দেখতে প্রজাপ্রতির মত এবং বাংলায় একে অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি বলা… More

ডিসমেনোরিয়া (Dysmenorrhea) স্ত্রীরোগ ( ৪র্থ পর্ব ) Dr.H.Kamaly


ডিসমেনোরিয়া ( Dysmenorrhea) হল নারীর মাসিক ঋতুস্রাবের সময় হওয়া যন্ত্রনা ( গ্রীক শব্দ “ডিস” মানে হ’ল কষ্টকর, “মেন'” মানে হ’ল মাসিক ও “রিয়া” মানে হ’ল প্রবাহ ) -অর্থাৎ মাসিক শুরু হবার আগে বা মাসিক চলাকালীন সময়ে নারী যে তীব্র ব্যাথা অনুভব করে থাকেন তাকে ডিসমেনেসিয়া বলে এবং ঋতুস্রাব শেষ হওয়ার সাথে সাথে যন্ত্রনাও কমে যায় । সাধারনত যৌবন সুচনার ( বয়ঃসন্ধির ) পর থেকে ২০-২৫ বছর বয়স পর্যন্ত সাধারণত প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ার সমস্যা থাকে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যথা এবং তীব্রতা কমে আসতে থাকে । ইহাই প্রকৃতির নিয়ম ।

 

কেন এই ব্যাথা হয় ? ( ফিজিওলজি অনুসারে ) ঃ

dys-03
জরায়ুর U ভিতরে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন এফ-২ আলফা রস্টাল্ড নামক রাসায়নিক পদার্থ গুলির ক্রিয়ার ফলে জরায়ুর ভিতরের লাইনিং ছোট হয়ে যায় এবং প্রস্তুত হয় গর্ভধারণের জন্য , কিন্তু তা গর্ভসঞ্ছারিত না হলে যতক্ষণ পর্যন্ত লাইনার গুলো প্রসারিত না হয় ততক্ষন জরায়ুর মাংসপেশীর সংকোচিত থাকে এবং জরায়ুতে রক্ত সঞ্চালন কমে যায় । মুলত সে কারনেই মাসিকের রক্তস্রাবের সাথে যন্ত্রনা হয়ে থাকে ।
যন্ত্রনা বেশী হয় কেন ? যাদের ক্ষেত্রে এই সব রাসায়নিক পদার্থ হয় বেশি পরিমাণে নির্গত হয় অথবা মহিলার প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের প্রতি বেশি সংবেদনশীল (sensitive )হয়ে তা হয়ে থাকে অথবা মস্তিষ্কের পিটুইটরি গ্রন্থি থেকে ভেসোপ্রসিন নামক হরমোন প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের উৎপাদনে বেশী কাজ করে বিধায় যন্ত্রণা বেশী হয়ে থাকে ।
অন্য থিওরি মতে , জরায়ুর রক্তপ্রবাহ হ্রাস পেলে কয়েকটি রাসায়নিক পদার্থের উৎপত্তি হয় , যার ফলে টাইপ-সি যন্ত্রনার কোষসমূহ সক্রিয় হয়ে উঠে এবং সে কারনে ঠিক মত অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারেনা , এছাড়াও লিউকোট্রিন লিউট নামক অন্য একধরণের রাসায়নিক তত্ত্বের উৎপত্তির জন্যও ডিসমেনোরিয়া হয় বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন ৷

 
ডিসমেনোরিয়া বা মাসিককালীন ব্যথা দু’প্রকার। প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি।

dys-04


প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া হল- এতে জরায়ুর অসুখ থাকেনা । মাসিক শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যথা শুরু হয়ে ( ২-৩ দিন ব্যথা থাকে ) মসিক শেষ হওয়ার সাথে সাথে তা চলে যায় এবং ৯০% বেলায় বয়স ২০ এর উপরে চলে গেলে দৈহিক হরমোন চক্র সুন্দর একটা রুটিনে চলে আসে বিধায় তা খুব কম দেখা যায় । তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইডিওপ্যাথিক পেইনফুল মেন্সট্রুয়েশন বা অজানা কারণে মাসিকের সময় ব্যথাই বেশি দেখা যায় ।

সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া হল – এতে জরায়ু , ডিম্বাশয় বা প্রজনন তন্ত্রের যে কোন একটা অসুখের লক্ষন এবং সেই অসুখ দূর হওয়া না পর্যন্ত সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া বা দীর্ঘ স্থায়ী মাসিক ব্যাথা থাকবেই । তৃতীয় বিশ্বে ৭০% মহিলাদের সন্তান প্রসবের পর মেয়েদের প্রজননতন্ত্রে ইনফেকশনের কারণকে বেশি দায়ি করা হয় । ১৯% মহিলাদের বেলায় জরায়ুর ফাইব্রয়েড, অ্যান্ডোমেট্রিওসিস , অ্যাডেনোমায়োসিস , যৌন জীবাণুর ইনফেকশন ইত্যাদি কারনে সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া লেগে থাকতে দেখা যায় – তবে অসুখের কারনে হলে মাসিক জনিত ব্যাথা ৭/৯ দিন পর্যন্ত চলতে থাকে ।

 

কারণ ঃ

dys-06
মানশিক ( যারা মানসিক দিক থেকে খুবি স্পর্শ কাতর বা ভাব প্রবণতা বেশি তারা এমনিতেই যন্ত্রণা একটু বেশী অনুভব করা স্বাভাবিক )
পরিবেশগত অজ্ঞতা অথবা বংশগত ( মায়ের হলে মেয়ের , বিশেষ করে মা বাবার আদরের মেয়েদের বেলায় একটু বেশী অথবা পারিবারিক ভাবে বেশী অবহেলিত মেয়েরা গড়ে বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকে )
– মহিলা হরমোনের ভারসাম্য হীনতা ( ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন ) অথবা প্রজেস্টেরন হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যাওয়া – যে কোন কারনে জরায়ুর মধ্যে স্রাবের রক্ত জমাট বেঁধে গেলে অথবা গর্ভপাত করালে – রক্তস্বল্পতা অথবা স্থুলতা ইত্যাদি কারনে প্রাইমারী মাসিক জনিত ব্যাথা প্রতিটা চক্রেই কম বেশী দেখা দিতে পারে ।

সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়ার প্রধান কারন ঃ ( সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া সাধারণতে ২৫ থেকে ৪৫ বছরের মহিলাদের হতে দেখা যায় )

dys-07
যৌন জীবাণুর ইনফেকশন , এন্ডোমেট্রিওসিস Endometriosis : ( এক্ষেত্রে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আবরণী টিস্যু জরায়ুসহ ফেলোপিয়ান টিউব, ডিম্বাশয় এবং পেল্ভিসে চলে আসে এবং ব্যথার সৃষ্টি করে ) – ইউটেরিন ফাইব্রোয়েডস – Uterine fibroids : ( এই অবস্থায় জরায়ুর গাত্রে টিস্যু একত্রিত হয়ে পিন্ড সৃষ্টি করে। যার ফলে মাসিকের সময় ব্যথা হয়ে থাকে। তবে এই পিন্ড থেকে ক্যান্সার সৃষ্টি হয় না ) এডেনোমায়োসিস Adenomyosis 😦 এই অবস্থায় জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আবরণী টিস্যু জরায়ুর পেশিবহুল দেয়ালে বৃদ্ধি পেতে থাকে ) – পেলভিক ইনফ্লামেটরী ডিজিজ Pelvic inflammatory disease (পি-আই-ডি) ( এটি মহিলাদের জননাঙ্গের একটি ইনফেকশন যা সাধারনত অনিরাপদ যৌন মিলনের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে ) সারভিকাল স্টেনোসিস Cervical stenosis : ( জরায়ুর মুখ ছোট হলে তা মাসিকের রক্তপ্রবাহে বাধা দেয় এবং জরায়ুতে চাপের সৃষ্টি করে ও ব্যথা হয় ) – ওভারিয়ান সিস্ট (ওভারিয়ান সিস্ট হলো ওভারিতে থাকা পানি বা তরলভর্তি থলি ) – পেলভিক টিউবারকুলোসিস ( টিবি ) ভলভোডাইনিয়া, অস্বাভাবিক গর্ভাবস্থা অথবা গর্ভপাত ইত্যাদি কারন সমুহ বেশী দায়ী । সাথে আনুসঙ্গিক অন্যান্য লক্ষণ বিদ্যমান থাকবে । যেমন , – মাসিক অনিয়মিত হওয়া, মাসিক স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া , মাসিকের মধ্যে কয়েকবার রক্তস্রাব হওয়া, যোনিদ্বার দিয়ে স্রাব নির্গত হওয়া, যৌন ক্রিয়াতে কষ্ট অনুভব করা ইত্যাদি ।

 

লক্ষণ :

dys-010
মাসিক স্রাবের প্রথম দিনে তীব্র ব্যথা হয়। এটি খিঁচুনী ব্যথার মতো থেমে থেমে আসে অথবা অবিরাম থাকে। ব্যথা ২/৩ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। । ব্যাথার তীব্রতা কখনও খুব বেশী হতে পারে । যেমন, তলপেটে ও দুই উরুর সামনের দিকে ও ভেতরের দিকে প্রচন্ড ব্যথা হয়ে থাকে, কখনও কোমরেও ব্যথ অনুভুত হয়। ব্যথার সাথে বমি ভাব বা বমি হতে পারে মাথা ব্যথা সহ শারীরিক অস্বস্থি বোধ হতে পারে । কখনও কখনও পাতলা পায়খানা, পায়খানার রাস্তায় চাপানুভুতি হওয়া । টেনশনে প্রস্রাবের বেগ বেড়ে যেতে পারে। কখনও স্তনেও ব্যথা হতে পারে। রোগী বেশী দূর্বল হয়ে গেলে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। কামড়ানো ধরার মত ব্যাথা হলে ঋতুস্রাবে রক্তের পরিমাণ খুবই অল্প হতে পারে অথবা কার ও বেলায় দীর্ঘায়িত মাসিক হতে পারে । সেই সাথে অনিদ্রা, অস্বস্তি, যোনীপথে চুলকানি , যোনী দিয়ে রক্তের সাথে স্রাবের পরিমান বেশী নির্গত হওয়া ইত্যাদি লক্ষন থাকতে পারে ।
সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া হলে জরায়ু বা জনন তন্ত্রের যে অসুখ থাকবে সেই অসুখের লক্ষন সহ উপরের লক্ষন সমুহ বিদ্যমান থাকতে দেখা যায় ।

 
রোগনির্ণয় ঃ

dys-011
প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ায় শারীরিক পরীক্ষায় বা আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে কোনো সমস্যা পাওয়া যায় না। রোগের উপসর্গের যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে সাধারণত তার ওপর নির্ভর করেই প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া ডায়াগনোসিস করা হয় বা ৯৯% ক্ষেত্রে কোন পরিক্ষার প্রয়োজন হয়না –
যেমন : প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়াতে ব্যথা মাসিক শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে বা পরে শুরু হয়ে ১২-৪৮ ঘণ্টার বেশি থাকে না – ফাইব্রয়েডের জন্য ব্যথা হলে সেটা মাসিকের প্রথম ২-৩ দিন থাকে, এরপর আর থাকে না তবে প্রত্যেক মাসিকের সময় ব্যথার তীব্রতা বাড়তে থাকে। এন্ড্রোমেট্রিয়সিস ও এডিনোমায়োসিসের ক্ষেত্রে মাসিকের ২-৩ দিন আগে ব্যথা শুরু হয়ে মাসিকের সময় ব্যথা তীব্র হয় এবং মাসিকের পরও এই ব্যথা কিছু কিছু থেকেই যায়। জরায়ুর ইনফেকশনের (পিআইডি) ব্যথা মাসিকের ২-৩ দিন আগে শুরু হয় এবং মাসিক শুরু হলে ব্যথা চলে যায়। এক্ষেত্রে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব এবং সহবাসের সময় ব্যথা হতে পারে।
সে জন্য সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া বলে সন্দেহ হলে অবশ্যই বেশ কয়েকটি পরীক্ষার আবশ্যকতা হতে পারে ৷ সেইগুলি হ’ল রক্তের টি সি, ডি সি , ই এস আর,হিমোগ্লবিন, ভি ডি আর এল; ভেজাইনাল স্রাব পরীক্ষা; প্রসাব পরীক্ষা; হিষ্ট-সালফিংগোগ্রাম এক্সরে; পেটের আলট্রাসাউন্ড; এন্ডোমেট্রিয় বায়প্সি; লেপ্রোস্কপিক পরীক্ষা ইত্যাদি রোগের ধরনের উপর চিকিৎসকরা পরীক্ষার জন্য বলতে পারেন ।

 
চিকিৎসা ঃ

dys-012
প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোন ঔষধের প্রয়োজন নাই , তবে যদি ব্যাথা বেশী হয় তাহলে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন বিরোধী NonAnt InflammatoD NI বেশিরভাগ রোগীর ব্যাথা দূর করে ৷ নেপ্রস্কেন, আইব্রুপ্রফেন,কিটোপ্রফেন,মেফেনেমিক এসিড,ডাইক্লফেনেক ইত্যাদি এই শ্রেণীতে পড়ে। এমন ওষুধসমূহ প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের উৎপাদনে বাধা দেয়ার ফলে রোগীর ব্যাথা নিয়ত্রনে আসে ৷ সাধারণত এইরকম যে কোনো একধরণের ঔষধ তিন মাসিক চক্রের জন্য খেতে বলা হয় ৷ যন্ত্রনা অনুভব হওয়ার সাথে সাথে ওষুধগুলি আরম্ভ করে মাসিক চলতে থাকা দিনকয়টিতে খেতে হয় ৷ ( মনে রাখবেন এই সব ঔষধ খালি পেটে সেবন অথবা বেশী সেবনে এসিডিটি,গেষ্ট্রাইটিস, হেমাটোমেসিস ইত্যাদি হতে পারে- তবে রিফক্সিক্যাব জাতিয় গ্রোফের ড্রাগস পাকস্থলীর প্রদাহ জাতীয় সমস্যা কম তৈরি করে Cyclooxygenase-2 ( rofecoxib, Vioxx – Tablets: 12.5 mg, 25 mg, and 50mg. Oral Suspension: 12.5 mg/5 mland 25mg/5ml )
(http://www.medicinenet.com/rofecoxib/page3.htm )
৩ মাসিক চক্রের পর ও যদি মাসিক চক্রের ব্যাথা না কমে এবং মহিলা হরমোন ভারসাম্য জনিত কারনে মনে হয় তাহলে চিকিৎসকরা মহিলা হরমোন অথবা ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভ ( জন্ম নিয়ত্রন বড়ি,যেমন মন্টলুকাস ইত্যাদি ) ট্যাবলেট সেবনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন যা একনাগাড়ে ৩ মাসিক চক্র নিয়মিত সেবনে মাসিক চক্রের ব্যাথা আর থাকার কথা নয় । ( ইষ্ট্রজেন ও প্রজেষ্টরন হরমোন মিলিত থাকার ফলে এটি সেবনে ডিম্বকোষ থেকে ডিম্ব প্রস্ফুটিত হয় না বিধায় যন্ত্রনা অনুভব করে না ৷ অর্থাৎ ওভুলেশন (Ovulation) রোধ করলে মাসিকের যন্ত্রনা হয় না । যদি মাসিক স্রাবের সময় রক্ত বেশি যায় তাহলে ওষুধের পাশাপাশি আমিষ সমৃদ্ধ সুষম খাবার বেশি খেতে হবে এবং একি সাথে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রন সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন ।
রিসার্চ অনুসারে দেখা যায় মাল্টিভিটামিন ভিটামিন সমূহের মধ্যে একমাত্র ভিটামিন ই ছাড়া মাসিক চক্রের ব্যাথা কমার তেমন কোন প্রমান অন্যান্য ভিটামিন সমুহের নাই ( ভিটামিন ই জরায়ুর সঙ্কোচন সৃষ্টিকারী প্রোস্টাগ্লান্ডিন তৈরি কমিয়ে দিয়ে প্রসারণকারী প্রোস্টাসাইক্লিন তৈরি বাড়িয়ে দেয়। ফলে ব্যথা কমে যায় , ৫০০ আই ইউ ভিটামিন ই মাসিকের ২ দিন আগ থেকে মোট ৫ দিন প্রতি মাসিক চক্রের সময় সেবনের পরামর্শ দেওা হয় ) । সে কারনে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার অথবা ক্যাপসুল সেবন করতে পারেন ।

 

গবেষণা ঃ

যারা কোন ঔষধ সেবন করতে আগ্রহী নয় সে ক্ষেত্রে রেজিস্টার্ড আকুপাংচার বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে ৩ মাসিক চক্রের সময় তিন বার আকুপাংচার করাতে পারলে ২ বছর পর্যন্ত মাসিক জনিত ব্যাথা ( ডিসমেনোরিয়া ) প্রতিরোধ করা সম্বভ ( রিসার্চ )
কিভাবে নিজে নিজে আকুপ্রেসারের মাধ্যমে মাসিক জনিত ব্যাথা সাময়িক নিয়ত্রন করবেন ঃ ( ছবি দেখে মিলিয়ে নিন )

dys-2dys-8

dys-3dys-9dys-013
পায়ের ঘন্টা থেকে ২ ইঞ্চি উপরের মধ্যবর্তী স্থান সমুহে এল্টি আঙুলের মাথা দিয়ে ( ভাল হবে ছোট স্ট্রিকার জাতীয় কিছু রেখে চাপ দেওয়া ) চাপ দিয়ে ধরুন এবং যেখানে আঙ্গুলের মাতার চাপের কারনে একটু বেশি ব্যাথা যুক্ত মনে করবেন সেখানে এক মিনিট করে ৩ বার তিন মিনিট চাপ দিয়ে ধরে রাখুন -একি ভাবে ছবিতে নিচ পেটে যে ৬ টি পয়েন্ট দেখানো হয়েছে সেখানে ও আঙুলের মাতা দিয়ে চাপ প্রয়োগ করুন এক মিনিট করে দেখবেন মাসিক জনিত ব্যাথা প্রায় কমে গেছে এবং এভাবে যে কয়দিন ব্যাথা থাকবে ( ৫ দিন ) প্রতিদিন একবার করে করতে থাকুন । গবেশনা অনুসারে ৬৭% বেলায় পরবর্তীতে মাসিক জনিত ব্যাথা আর থাকার কথা নয় ।
একজন আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ চাইলে উক্ত এস পি৬ ( SP6 ) পয়েন্টে ভিটামিন কে-১ ইনজেকশন প্রয়োগ করে ২ মিনিটের ভিতর ব্যাথা কমিয়ে দিতে পারেন বা মাসিক জনিত প্রবল ব্যাথায় মাত্র দুই মিনিটের ভিতর বেশ ভাল রেজাল্ট পাওয়া যায় এবং একি ভাবে মাসিক জনিত ব্যাথায় কার্যকর আকুপাংচার পয়েন্ট সমুহে যথা যত ভাবে প্রয়োগ করলে মাত্র ৩ দিনের চিকিৎসায় পুরন মাসিক জনিত ব্যাথা চিরস্থায়ী নির্মূল করা সম্বভ । মাসিক ব্যাথার জন্য কার্যকর পয়েন্ট গুলো হছছে ঃ SP6 + CV4 (Guanyuan) + SP10 (Xuehai) + K3 (Taixi) + SP8 (Diji) —- রিসার্চ ফর্ম ন্যাশনাল কম্বাইন্ড থ্যারাপি ইউকে এবং UCSF ( ডঃ হেলাল )
আর ও বিস্তারিত জানতে চাইলে ক্লিক করুন ( http://www.osher.ucsf.edu/wp-content/uploads/2014/11/VitaminKAcupoint_Dysmenorrhea.pdf )

 
বিয়ে হলেই কি ডিসমেনোরিয়া কমে যায় ?
মুলত বিয়ে হলে ব্যাথা কমে যায় তা সম্পূর্ণ সঠিক নয় তবে বিয়ে করার পর গর্ভধারণ করলে ডিসমেনোরিয়া ৯০% বেলায় সেরে যায় তা সত্য । কারন হিসাবে দেখা যায় জরায়ুতে সন্তান ধারন করার ফলে নর্মাল সন্তান প্রসবের ফলে পরবর্তীতে মাসিক স্রাবের সময় প্রোস্টাগ্ল্যাণ্ডিন নিঃসরণ কমে যায় বলে মনে করা হয়, যা ডিসমেনোরিয়া সারানোতে ভূমিকা রাখে। এছাড়া স্বাভাবিক প্রসবের ফলে জরায়ু মুখ প্রশস্ত হয়। এতে মাসিক স্রাব দ্রুত ও সহজে বেরিয়ে যেতে পারে এবং ব্যথা অনুভূতি বহনকারী স্নায়ুর সংবেদনশীলতা কমে যায় বিধায় ডিসমেনোরিয়া নিরাময়ে সহায়ক বলে অনেকটা প্রমানিত ।

বিধিনিষেধ হিসাবে কম চর্বিযুক্ত সুষম নিরামিষ আহার বেশি খাওয়ার চেটা করা এবং প্রোটেন যুক্ত খাবার বেশি গ্রহন সহ চিনি জাতীয় খাবার কম আহার করুন । মাসিক চলা কালীন সম্যে হট বাথ , নিচ পেটের হাল্কা ম্যাসেজ , বিধিনিষেধ হিসাবে কম চর্বিযুক্ত সুষম নিরামিষ আহার বেশি খাওয়ার চেটা করা এবং প্রোটেন যুক্ত খাবার বেশি গ্রহন সহ চিনি জাতীয় খাবার কম আহার করুন । মাসিক চলা কালীন সম্যে হট বাথ , নিচ পেটের হাল্কা ম্যাসেজ , গরম স্যাঁক ইত্যাদি করলে সাময়িক কিছুটা আরাম বোধ হতে পারে । ওজন বেশি মনে করলে তা ব্যায়াম ও ডায়েটের মাধমে কমাতে হবে।

সেকেন্ডারি ক্ষেত্রে কি কারণে মাসিকের সময় ব্যথা হচ্ছে, তা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হবে এবং সে কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে । তবে অবশ্যই তার সাথে যে অসুখ থাকবে সেই অসুখের পুরন লক্ষন বিদ্দমান থাকবেই ।

ধন্যবাদ ————————————–

Created by Dr Helal Kamaly —

Supporting Research

Balbi C, Musone R, Menditto A, et al., Influence of menstrual factors and dietary habits on menstrual pain in adolescence age. Eur J Obstet Gynecol Reprod Biol. 2000;91(2):143-8.
Barnard ND, Scialli AR, Hurlock D, Bertron P. Diet and sex-hormone binding globulin, dysmenorrhea, and premenstrual symptoms. Obstet Gynecol. 2000;95(2):245-50.
Bernstein MT, Graff LA, Avery L, Palatnick C, Parnerowski K, Targownik LE. Gastrointestinal symptoms before and during menses in healthy women. BMC Womens Health. 2014;14:14.
Bope & Kellerman: Conn’s Current Therapy 2013. 1st ed. Philadelphia, PA: Elsevier Saunders; 2012.
Chen YW, Wang HH. The effectiveness of acupressure on relieving pain: a systematic review. Pain Manag Nurs. 2014;15(2):539-50.
Dennehy CE. The use of herbs and dietary supplements in gynecology: an evidence-based review. J Midwifery Womens Health. 2006;51(6):402-9.
Ferri: Ferri’s Clinical Advisor 2016. Philadelphia, PA: Elsevier; 2016.
Fjerbaek A, Knudsen UB. Endometriosis, dysmenorrhea and diet — what is the evidence? Eur J Obstet Gynecol Reprod Biol. 2007;132(2):140-7.
Ghodsi Z, Asltoghiri M. The effect of fennel on pain quality, symptoms, and menstrual duration in primary dysmenorrhea. J Pediatr Adolesc Gynecol. 2014;27(5):283-6.
Grimes DA, Hubacher D, Lopez LM, Schulz KF. Non-steroidal anti-inflammatory drugs for heavy bleeding or pain associated with intrauterine-device use. Cochrane Database Syst Rev. 2006;(4):CD006034.
Guerrera MP, Volpe SL, Mao JJ. Therapeutic uses of magnesium. Am Fam Physician. 2009 Jul 15;80(2):157-62. Review.

https://www.facebook.com/groups/helalkamaly/


আপনার স্বাস্থ্য — একটি ডকুমেন্টারি মেডিক্যাল জানাল — যে কেউ ফ্রেন্ডস রিকুয়েস্ট দিয়ে মেম্বার হতে পারেন– ধন্যবাদ

মাসিক পূর্ব সিনড্রম (PMS ) স্ত্রীরোগ ( ৩য় পর্ব ) Dr.H.Kamaly


মাসিক শুরু হওয়ার ১০ থেকে ১৫ দিন পূর্বে যে শারীরিক, মানসিক এবং আচরণগত সমস্যা দেখা দেয় , তাকেই মাসিক পূর্ব সিনড্রম বা PMS বলে । একি সাথে যদি মস্তিস্কের হাইপো – থ্যালামিক পিটিইটারি অ্যাড্রিনাল সিস্টেম দুর্বল অথবা সঠিক ভাবে কাজ না করে বরং মস্তিক্স থেকে সেরেটোনিন হরমোনের ক্ষয় বেশি হয় এবং সে কারনে মাসিক চক্রের প্রলিফেরাটিভ ফেজের (মাসিক শেষ হওয়ার পর ১০/১২ দিন ধরা হয় ) সময় যে শারীরিক ও মানসিক অশান্তি বা পরিবর্তন দেখা দেয়, ইহাকে মাসিক পূর্ব ডিস্পরিক ডিসঅর্ডার বা পিএমডিডি ( PMDD) বলা হয় ( Premenstrual Dysphoric Dysorde ) ।
রিসার্চ অনুসারে দেখা যায় মহিলাদের মাসিক পূর্ব সিনড্রম এমন একটা অসুখ যার মুল কারন চিকিৎসকরা অনেক সময় বুঝে উঠা সম্বভ হয়না বিধায় লক্ষন অনুসারে ঔষধ সেবন করে অনেক রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্বভ হয়না ।

 

pm-7

কারন ঃ
গবেষণা অনুসারে দেখা যায় ৮৫ % বেলায় নিম্নের কারন ই বেশী দায়ী — এবং ফিজিওলজির সুত্র অনুসারে প্রধান কারনের মধ্যে ৩ টি কারন ই সবচেয়ে বেশী উল্লেখ যোগ্য ।
১- নারী হরমোনের ভারসাম্যতা জনিত কারন ঃ প্রলিফেরাটিভ ফেজের (মাসিক শেষ হওয়ার পর ১০/১২ দিন ধরা হয় ) সময় ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টারন দুটি হরমোনের মধ্যে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় প্রজেস্টারন হরমোনের মাত্রা একক ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে মাসিক পূর্ব সিনড্রম দেখা দেয় ( বিবাহিত ও মেনোপোজের কাছা কাছি বয়সের বেলায় বেলায় ৯৬% )
বিপরিত দিকে উক্ত মহিলা যদি অবিবাহিত ও বয়স ২০-৩০ এর ভিতরে থাকে তাহলে ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমান বৃদ্ধি পেয়ে –প্রজেস্টারন হরমোনের পরিমান শূন্যের কোটায় নিয়ে আসে অথবা তা নিষ্ক্রিয় থাকে বিধায় বিধায় মাসিক পূর্ব সিনড্রম দেখা দিয়ে থাকে এবং সে সময় কারও কারও বেলায় সেক্রেটরি ফেইজ কে দিরঘায়িত করে , যেমন মাসিক চক্র ২১ দিনের পরিবর্তে তা ৫/৬ দিন দেরিতে হয়ে থাকে । ( মেডিক্যাল সাইন অনুসারে একে স্বাভাবিক মাসিক চক্র বলা যায় যদি রোগীর বয়স ৩৫ এর কাছাকাছি থাকে )
গবেষণায় আর ও দেখানো হয়েছে এ ধরনের রোগিদের গর্ভ ধারন ( ডিম্ব নিশিক্তকরন ) করতে ও অনেক সময়ের প্রয়োজন ( পুরাতন রোগিদের বেলায় কম পক্ষে ৬ হতে ১১ টি মাসিক চক্রের অপেক্ষা করতে হয় ) তবে অবিবাহিতদের বেলায় সন্তান জন্ম দেওার পর তা আর থাকেনা যদি স্থায়ী ভাবে স্নায়ুবিক কোন অসুখের জন্ম বা হিমোগ্লোবিন স্বল্পতা না থাকে । মুলত সে কারনেই মেজাজের পরিবর্তন , উদ্বেগ, এবং অস্বস্তিবোধ সহ ওভারিয়ান স্টেরয়েড জাতিয় সমস্যা লেগে থাকে – ডকুমেন্টারি তথ্য অনুসারে , ৯১% বেলায় পূর্বে যে কোন একসময় অনিয়মিত মাসিক চক্রের ইতিহাস দু একটা থাকবেই । ( R theory-Dr Helal) ।

২- হাইপো – থ্যালামিক পিটিইটারি অ্যাড্রিনাল সিস্টেম দুর্বল হওয়ার কারনে (HPA) ঃ হাইপো – থ্যালামিক পিটিইটারি অ্যাড্রিনাল সিস্টেমের প্রধান কাজ হল , মস্তিস্কের সেরেবেলাম হতে নিউরোট্রান্সমিটার জনিত কারনে প্রজনন,মিজাজ বা আচরণ , যৌন আবেগ, হজম শক্তি, ইমিউনিটি শক্তি ইত্যাদি নিয়ত্রন করা -কিন্তু যদি কোন কারনে এই সিস্টেম সমুহ কাজ না করে অথবা দুর্বল বা নিষ্ক্রিয় থাকে তাহলে সঠিক ভাবে নারী হরমোনের ভারসাম্যতা রক্ষা করতে পারেনা বরং মস্তিক্সের সেরেটোনিন হরমোনের ক্ষয় বৃদ্ধি করে মানসিক ও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা প্রিম্যান্সট্রুয়েল ডিস্পরিক ডিসঅর্ডারে চলে যায় ( premenstrual dysphoric disorder (PMDD) ।

৩- ভিটামিন পুস্টিহিনতা এবং মানসিক ভারসাম্যতা ঃ গবেষণা অনুসারে ৭৩% বেলায় ভিটামিন বি-৬ এর মাত্রারিক্ত স্বল্পতা,রক্তশূন্যতা ( হিমোগ্লোবিউনের স্বল্পতা ) , মারাত্মক পুস্টিহিনতা ( ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন,ক্যালসিয়াম , জিঙ্ক ইত্যাদি খনিজ ) অথবা অনিয়ন্ত্রিত হজম শক্তি, লবণাক্ত খাবার , ক্যাপেইন জাতীয় পানি ( চা-কপি ) ইত্যাদি কারনেই হয়ে থাকে ।
এ ছাড়া ও – বংশগত – ( যেমন মায়ের হলে মেয়ের ও হতে পারে ), পারিবারিক সহিংসতা, ভ্যাক্টিম এবং রেপ, শারীরিক ও মানসিক আঘাত, অতিরিক্ত উদ্ধেগ , মানসিক চাপ এবং ক্লান্তি , সিজোপেনিয়া এবং বিপোলার সিন্ড্রেম, ,ডিসমেনোরিয়া, ওভারিয়ান সিনড্রম , থায়রয়েড জনিত সমস্যা , অনিয়ন্ত্রিত পায়খানা (IBS), মাংশপেশি জনিত বাথ ব্যাধি ইত্যাদি কারনে হতে পারে ।

 
লক্ষন ঃ ( মাসিক পূর্ব সিনড্রোমের লক্ষন প্রায় ২০০ অধিক )

pm-8
যদি নিম্নের লক্ষন সমুহের মধ্যে অন্তত ৫ টি লক্ষণ, মাসিক চক্র শুরু হওয়ার ৭ থেকে ১৩ দিন আগে দেখা দিলে অবশ্যই মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোম বলতে পারেন । ( ৯০% বেলায় মাসিক চক্র শুরু হওয়ার ৫ দিন আগে দেখা দেয় আবার মাসিক শেষ হওয়ার সাথে সাথে তা চলে যায় )

শারীরিক উপসর্গ ( ফিজিক্যাল )
স্তন ফুলে যাওয়া এবং আবেগপ্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া ও ব্যাথা অনুভব করা , পেটের গ্যস বৃদ্ধি সহ কোষ্ঠকাঠিন্য, বা ডায়রিয়া বা অনিয়ত্রিত পায়খানা হওয়া ,*.খাবারে রুচির পরিবর্তন হওয়া বিশেষত লবণ এবং চিনি একটু বেশী খাওয়ার ইছছা বেড়ে যাওয়া ,শরীরে রস জমে ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, ত্বকের সমস্যা (ব্রণ বৃদ্ধি ) , মাথা ব্যাথা এবং মাইগ্রেন (মাইগ্রেন PMS উপসর্গের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে), মাঝে মধ্যে অস্থিসন্ধি অথবা মাংসপেশীতে কামড়ানো থরপানো ইত্যাদি নানা ধরনের ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে ।

 

মানসিক ও আচরণগত উপসর্গ
দুশ্চিন্তা ও উদ্বিগ্নতা, .বিষন্নতা, .হঠাৎ কেঁদে ফেলা, .মেজাজ উঠা-নামা করা ( ক্রোধান্বিত ও শত্রুতা বৃদ্ধি পাওয়া ) সেই সাথে তন্দ্রাভাব, ক্লান্তি, এবং শক্তির অভাব অনুভব করা .নিদ্রাহীনতা বা ঘুমের সমস্যা হওয়া, .সামাজিক কর্মকান্ড থেকে দূরে থাকা (Social withdrawn), ঠিক মত সব কিছুতে মনোযোগ না দেওয়া বা অনেক কিছু সঠিক ভাবে মনে রাখতে না পারা সহ যৌন আগ্রহ এবং ইচ্ছা পরিবর্তন ( বেশির ভাগ ক্ষেতে সহবাসের অনীহাই বেশী ) যা মাসিক চক্র শেষ হওয়ার সাথে সাথে তা চলে যায় ।

 
পরীক্ষা-নিরীক্ষাঃ

pm-10
তেমন কোন শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন নাই । তারপর ও অসুখটি মারাত্মক পর্যায়ের মনে করলে চিকিৎসকরা ২/৩ মাসিক চক্রের ইতিহাস, মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোম চার্টের সাথে মিলিয়ে মহিলা হরমোন সেক্রেশন এনালাইসিস এবং অন্যান্য পুস্টি উপাদান জানার জন্য রক্ত পরীক্ষার কথা বলতে পারেন । চাইলে আপনি নিজে নিজেই সেই চার্টের সাথে নিজের অসুখের লক্ষন মিলিয়ে অসুখটি থেকে রেহাই পেতে পারেন , মনে রাখবেন চার্টের সাথে অন্তত ৫টি লক্ষনের মিল থাকতে হবে এবং সে ক্ষেত্রে পিএম এস পজেটিভ ধরে নিতে পারেন ।

 

মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোম কি কি জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে ঃ
খাওয়া দাওয়া ও রুচির পরিবর্তন – রক্তশূন্যতা ( থায়রয়েড ডিসঅর্ডারের বেলায় হিমোগ্লোবিন স্বল্পতা ) , ডায়াবেটিস, ওভারিয়ান সিস্ট বেড়ে যাওয়া, মাথা ঘোরানো বা পরে যাওয়ার মত অবস্থা ( অথচ ব্লাড প্রেসার ঠিক মতই থাকে ) , জন্ম নিয়ত্রন বড়ি সেবনে পার্স প্রতক্রিয়া ইত্যাদির সাথে যাদের বয়স একটু বেশী (৩৩ এর উপরে ) তাদের বেলায় স্থনে ব্যাথা, অনিদ্রা , বিনা কারনে মাথা ব্যাথা সহ মিজাজের ঘন ঘন পরিবর্তন বেশী দেখা দেয় এবং গড়ে মাসিক চক্র শেষ হওয়ার পরের সপ্তাহ শারীরিক ও মানসিক অবস্থা সবচেয়ে ভাল থাকে । গবেষণা অনুসারে দেখা যায় যারা পুরাতন মাসিক পূর্ব রোগী তাদের বেলায় মাইগ্রেন, হাঁপানি , ভায়েল সিন্ড্রোম, মৃগী রোগ ,multiple sclerosis ইত্যাদি থাকলে তা তখন খুব বেশী বৃদ্ধি পায় ।

 
চিকিৎসা ও ব্যাবস্থাপনা ঃ

pm-11
মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোমের বেলায় প্রথম স্থরে চিকিৎসার তেমন কোন প্রয়োজন হয়না যদি সঠিক পুষ্টিকর খাবার বিশেষ করে , আয়রন , ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-ডি , ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি-৬ জাতীয় খাবার একটু বেশী খেতে পারেন ( যেমন আটা, ওটমিল, ব্রকোলি, ফুলকফি, মাশরুম, বাদাম, সূর্যমুখী বীজ, মটরশুঁটি, কিশমিশ, কলা, লাল আলু, পালংশাক ইত্যাদি খাবার খাওয়া উচিত )
সেই সাথে লবন চিনি, চা-কফির পরিমান একটু কম খাবেন ও প্রস্রাব বৃদ্ধিকারক খাবার ( শসা ইত্যাদি ) বেশী খাবেন । মেজাজ পরিবর্তন এবং হতাশাগ্রস্থ মনে হলে নিজ ধর্মের কর্ম ( নামাজ/ উপশনা ) , সামাজিক ও পারিবারিক উপকৃত কাজে নিজকে জড়িয়ে রাখার চেস্টা করুন এবং সেই সাথে সকালে মর্নিং ওয়াক অথবা হাল্কা ব্যায়াম করার চেস্টা করুন । কোন অবস্থাতেই বিচানায় যাওয়ার পর বই পড়া, টিভি অথবা সে জাতীয় কোন কিছু করা থেকে বিরত থাকতে হবে । বিচানায় যাওয়ার পর উক্তেজক পানীয় ( চা-কফি ) পান না করা, বিবাহিত থাকলে নিয়মের অতিরিক্ত সহবাস ও অপ্রীতিকর সহবাস থেকে বিরত থাকা উচিৎ ।

রিসার্চ ঃ হরমোনের ভারসাম্যতাজনিত কারনে হলে চিকিৎসকের পরামর্ষে মহিলা হরমোন ঔষধ সেবনে তা ঠিক হয়ে যায় অথবা পুনরায় সন্তান গ্রহন করলে তা আর থাকেনা ( যদি প্রজেস্টারন হরমোন নিষ্ক্রিয় অথবা অকার্যকর হয়ে থাকে ) অথবা যাদের সন্তান জন্ম দেওয়ার ইছছা না থাকে তারা নিউট্রেলাইজ জন্ম নিয়ত্রন বড়ি সেবন করলে কিছুদিন ( ৩ মাসিক চক্র ) পর তা চলে যাওয়ার কথা ।
অবিবাহিতদের বেলায় সুষম খাদ্য গ্রহন সহ উক্তেজক বা ইমোশনাল কিছু করা থেকে বিরত থাকা ( বিশেষ করে রাতের বেলায় ) সহ রুটিন মাফিক দৈনিক লেখাপড়া অথবা ধর্ম কর্ম ( নামাজ / উপাসনা ) সহ পরবর্তী অথবা আগাম দিনের কর্মসূচী নিয়ে বাস্থবভিত্তিক চিন্তাভাবনায় ব্যাস্থ থাকা উচিৎ । তারপর ও যদি তা না সারে তাহলে ( কম্বাইন্ড ) নর্মাল জন্ম নিয়ত্রন বড়ি ২৮ দিন সেবন করলে তা সেরে যাওয়ার কথা অথবা বিবাহ করার চিন্তা ভাবনা করতে পারেন । মনে রাখবেন যদি তা হরমোন প্রভাবে না হয়ে শারীরিক অন্য কোন কারনে হয়, ( যেমন থায়রয়েড হরমোনের অকার্যকরীতা , হিমোগ্লোবিনের স্বল্পতা, নিউরোমাসুলার জাতীয় অসুখ ইত্যাদি ) তাহলে তা বিয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয় বিধায় মেনোপজের আগ পর্যন্ত সমস্যা সমুহ লেগে থাকতে পারে । ( বিস্তারিত পরবর্তী পরবে দেখুন )

 

সতর্কবাণী ঃ
মনে রাখবেন অভ্যাসগত কারনে মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোম জাতীয় সমস্যার সৃষ্টি করলে পরবর্তীতে শত চেস্টা করেও শুধু ঔষধ দিয়ে তা নির্মূল করা সম্বভ হয়না ( মেডিক্যাল রিসার্চ ) যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের ক্ষতিকারক অভ্যাস সমুহ দূর না করতে পারবেন ! এর জন্য চিকিৎসকদের কাছে না যাওয়াই ভাল । তবে শারীরিক সমস্যাজনিত কারনে অসুখটির সৃষ্টি হলে এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহন করলে ৯৫% বেলায় তা ভাল হওয়ার কথা, যদি ও এর জন্য দীর্ঘ মেয়াদী ঔষধ সেবনের প্রয়োজন হতে পারে । ( ডাঃ হেলাল )

গ্রেড বি — অসুখের লক্ষন সমুহ যদি ৬ মাসিক চক্রের উপরে চলে যায় তাহলে নিম্নের ঔষধ সেবনের পরামর্ষ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা —-
চিকিৎসকের পরামর্ম অনুযায়ী ব্যাথা থাকলে ব্যাথা নাশক ব্যথা নাশক (Nonstcroidal anti-inflammatory) যেমন — ibuprofen (Motrin, Advil), indomethacin (Indocin) ketoprofen ইত্যাদি মসিক চক্রের ৭ দিন পূর্ব থেকে সেবন করতে হয় ৪ দিন । ( বিদ্রঃ দীর্ঘ দিন এ সব ঔষধ সেবন করলে পাকস্থলীর এসিড বৃদ্ধি সহ পাকস্থলীতে আলচার হতে পারে ) । অথবা যাদের হাইপার এসিডিটি হওয়ার সম্বাভনা তাদের বেলায় Tylenol গ্রোফের ঔষধ বা প্যারাসেটামল জাতীয় ঔষধ সেবন করতে পারেন ।
দুশ্চিন্তা ও হতাশাগ্রস্থ মনে হলে বিষন্নতা রোধী (Antidepressants) ঔষধ যেমন Fluoxetine (Prozac, Sarafem, generic), Sertraline (Zoloft, generic), Paroxetine (Paxil, generic) মাসিক চক্র শুরু হওয়ার ১৪ দিন আগ থেকে ৭/১২ দিনের জন্য সেবন করতে পারেন ( এই সব ঔষধ দীর্ঘদিন সেবনে অভ্যাসে পরিনত হওয়ার সম্বাভনা আছে বিধায় চিকিৎসকের পরামর্ষ ছাড়া একনাগাড়ে দীর্ঘ দিন সেবন করা ঠিক নয় । অথবা আপনার চিকিৎসকের পরামর্ষে Disopan (Clonazepam – called anxiolytics) সেবন করতে পারেন ।

 

হরমোন জনিত ভারসাম্যতা অথবা নিষ্ক্রিয়তা হলে ঃ
হরমোন জনিত ভারসাম্যতা মনে করলে কোম্বাইন্ড জন্ম নিয়ত্রন বড়ি ( ইস্ট্রোজেন ও প্রেজেস্টারন মিশ্রিত ) একনাগাড়ে ৩ মাসিক চক্র সেবন করতে হয় – যদি হরমোন এনালাইসিস করে দেখা যায় প্রজেস্টারন হরমোন ঘাটতির কারনে মাসিক পূর্ব সিনড্রোম দেখা দিয়েছে তাহলে মিনি পিল বা প্রজেস্টারন জন্ম নিয়ত্রন বড়ি সেবন করতে পারেন ।
৯৫% পি এম ডি ডি ( premenstrual dysmorphic disorder ) রোগীর বেলায় ইস্ট্রোজেনের ভারসাম্যতার ফলে অসুখটি হয়ে থাকে তারপর ও যদি উক্ত মহিলা অবিবাহিত হয়ে থাকে তাহলে একক ভাবে তখন অতিরিক্ত যৌন কামনা বা অন্যান্য কারনে ইস্ট্রোজেন হরমোন বৃদ্ধির ফলে প্রজেস্টারন হরমোন নিষ্ক্রিয় হতে পারে বিধায় বিশেষজ্ঞরা মিনি পিল সেবন করার পরামর্ষ দিতে পারেন ।
অথবা ইস্ট্রোজেন প্যাঁচ ( অর্থোইভরা ) বা ইনজেকশন গ্রহণ (Medroxy progesterone acetate ) প্রয়োগ করতে পারেন । ( বিদ্রঃ যাদের মেনোরেজিয়া বা অতিরিক্ত মাসিক স্রাব দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে তাদের বেলায় এ জাতীয় ঔষধ সেবন করা ঠিক নয় ।

তৃতীয় স্থরের ক্ষেত্রে ঃ
গোনাড্রট্রপিন রিলিজিং হরমোন ঃ gonadotrophin-releasing hormone (GnRH)
নতুন ভাবে প্রমানিত leuprolide acetate ( Lupron / Zoladex নামে বাজারে এসেছে ) – ড্রাগসটি টেস্টারন এবং ইস্ট্রোজেন হরমোন কে নিয়ত্রন করে বিধায় পি এম এস এর ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে ফল দায়ক মনে করেন বিশেষজ্ঞরা – । ( যদিও ড্রাগসটি পুরাতন পুরাতন বয়ঃসন্ধি , ওভারিয়ান টিউমার, জরায়ুর টিস্যু বৃদ্ধি, ইত্যাদি অসুখের জন্য ইহা ব্যবাহার করা হয় ) ।
অথবা
নির্দিষ্ট কিছু কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে – বিশেষ করে মাত্রাতিরিক্ত অনিয়ত্রিত মহিলা হরমোন জনিত কারনে হলে Danazol (Danocrine) ( ড্রাগসটি একধরনের রিফাইনিং পুরুষ হরমোন হিসাবে বিবেচিত এবং যাদের রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টারল তাদের ক্ষেত্রে  ব্যাবহার  নিষেধ ) বিশেষজ্ঞরা তা সেবনে ভাল ফলদায়ক হিসাবে মনে করেন ।

 

 

শরিরের স্থূলতার লক্ষন থাকলে ঃ

pm-12
মাসিক পূর্ব সিনড্রোমের সময় যাদের শরীর হঠাৎ স্ফিত অথবা ওজন বাড়ার মত মনে হয় সে ক্ষেত্রে সল্প মেয়াদী মুত্র বর্ধক ঔষধ সেবন করা যেতে পারে যেমন , লেসিক্স ট্যাবলেট ইত্যাদি ।
লক্ষন হিসাবে যদি দেখেন মাসিক শুরু হওয়ার পূর্ববর্তী ২ সপ্তাহ আগে শরীরের ওজন ২/৪ কেজি বৃদ্ধি পায় ( সাধারনত ব্রার সাইজ ৩২ থাকলে তখন ৩৪/৩৬ হয়ে সহ শরীরের জামা কাপড় খুব টাইট হয়ে যায় ) আবার মাসিক শেষ হওয়ার পর ওজন আবার কমতে থাকে এবং সে কারনে স্থন, উরু ও নিচ পেটে চাপ দিলে ব্যাথা অনুভূত হওয়া ইত্যাদি লক্ষন দেখা দিলে বিশেষজ্ঞরা খুব সতর্কতার সাথে সল্প মেয়াদী প্রস্রাব বৃদ্ধি কারক ঔষধ সেবন করার পরামর্ষ দিয়ে থাকেন । ( বিদ্রঃ মনে রাখবেন মুত্র বর্ধক ঔষধ সেবনে শরিরের পটাসিয়াম এবং মেগ্নেশিয়ামের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দেয় বা কিডনির উপর মারাত্মক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে বিধায় খুব বেশী প্রয়োজন না হলে তা এড়িয়ে চলা ভাল এবং বিকল্প হিসাবে মুত্র বর্ধক খাবার একটি বেশী খাওয়া সহ যতা যত ডায়েটের অভ্যাস করলে তা চলে যেতে পারে যেমন, লেবুর শরবত, টমেটো, শসা, কদুর বীচি , তরমুজ ইত্যাদি )

 

 

সহযোগী মেডিসিন এবং ভেষজ চিকিৎসা ঃ ( Alternative medicine )
গবেষণা অনুসারে দেখা যায় ভিটামিন সমুহের মধ্যে ভিটামিন বি-৬ মাসিক পূর্ব সিনড্রোমের জন্য সবচেয়ে ভাল একটি কার্যকরী সাপ্লিমেন্ট – সে জন্য সকল স্থরের বেলায় প্রতিদিন ১০০ মিগ্রাঃ পরিমান ভিটামিন বি-৬ ট্যাবলেট সেবন করুন । ( বিদ্রঃ যাদের আয়রন এবং ক্যালসিয়ামর ঘটতি জনিত কারনে হয়ে থাকে তাদের দীর্ঘদিন এ জাতীয় ঔষধ সেবন না করলে অন্য কোন ধরনের ঔষধ সেবনে সাময়িক কাজ হলেও পরবর্তীতে তা আবার দেখা দিবেই )
বি-৬ খাদ্য উৎস ঃ আটা, ওটমিল, ব্রকোলি, ফুলকফি, মাশরুম, বাদাম, সূর্যমুখী বীজ, মটরশুঁটি, কিশমিশ, কলা, লাল আলু, পালংশাক ইত্যাদি । এ ছাড়া অন্যান্য ভিটামিন যেমন ভিটামিন ই, বি-৩ , বি-২, ফলিক এসিড , ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি কিছুটা উপকারী ।

 

ভেষজ হিসাবে এফ ডি এ কৃতক অনুমোদিত ঃ

pm-13
যদিও অনেক ভেষজ আছে উপকৃত তারপর ও রিসার্চ এবং গবেষণা অনুসারে সাফ্রন ই মাসিক পূর্ব সিনড্রোমের জন্য সবচেয়ে উপকারী একটা ঔষধ , যা সকলের কাছে গ্রহন যোগ্য – সে জন্য ( প্রথম ও দ্বিতীয় স্থরের অসুখে ক্যাপসুল সাফ্রন ১৫ মিগ্রাঃ (capsule placebo ) প্রতিদিন দিনে দুইবার অন্তত ২ টি মাসিক চক্র পর্যন্ত সেবন করলে নিঃসন্দেহে ভাল ফল পাওয়ার আসা করতে পারেন ।
মাসিক পূর্ব সিনড্রোমে মাসিকে শুরু হওয়ার ১৪ দিন অথবা ৭ দিন আগে যাদের হাত পা জ্বালা যন্ত্রণা, কামড়ানো ইত্যাদি শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে সে জন্য ইভিনিং প্রমিজ ওয়েল ম্যাসেজ সবচেয়ে বেশী উপকারী যা অন্যান্য ম্যাসেজ মালিশে তেমন কাজ করেনা ।

 

কিছু অতিরিক্ত নিয়ম এবং উপদেশ ঃ ( রিসার্চ থেকে )
খাদ্যতালিকার দিকে একটু মনযোগী হবেন । বিশেষ করে মাসিক পূর্ব ১৪ দিন থেকে বিভিন্ন জ্যাঙ্ক খাবার ( বার্গার, ফ্রাইস ইত্যাদি ) থেকে বিরত থাকবেন, সুগার জাতীয় ড্রিংক পান করবেন না তবে ঠান্ডা পানি পান একটি বেশী করবেন ।
খাবারের সাথে অতিরিক্ত লবন বা চিনি না খাওয়া এবং যে যে খাবার প্রস্রাবের মাত্রা কমায় তা থেকে বিরিত থাকা ইত্যাদি । সেই সাথে হাল্কা ব্যায়াম (পেশী শিথিল করা এবং গভীর শ্বাস গ্রহণের ব্যায়াম করতে হবে বা যোগব্যায়াম বা ম্যাসাজ করা ভাল ) , নিয়মিত সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তোলা এবং দিনে ঘুমানোর চিন্তা ভাবনা না করা ।
হিমোগ্লোবিন স্বল্পতা বা পুস্টি জনিত অন্যান্য খনিজের অভাবে হলে নিয়মিত পুষ্টিকর ও আয়রন জাতীয় খাবার বেশী গ্রহন করা সহ একনাগাড়ে দীর্ঘদিন সে জাতীয় সাপ্লিমেন্টারী ঔষধ সেবন করার চিন্তা ভাবনা করা ।
যদি রোগী বিবাহিত হন এবং দাম্পত্য যৌন জীবনে স্বামীর যৌন স্থবিরতা চলে আসার ফলে ইস্ট্রোন হরমোনের অনাকাঙ্কিত রুপ ধারন করে সে ক্ষেত্রে উভয়য়ের খোলা মেলা আলোচনা করে চিকিৎসকের পরামর্ষে মেডিক্যাল সুত্র অনুসারে নিদ্রিস্ট কিছু ঔষধ এবং প্রক্রিয়া মেনে চললে তা অল্প দিনেই চলে যাওয়ার কথা ।
রোগী বিবাহিত না হলে সে ক্ষেত্রে গার্জিয়ানদের বিবাহ দেওার চিন্তা ভাবনা করা এবং তা না হলে চিকিৎসকের পরামর্ষে নেগেটিভ মহিলা হরমোন জাতীয় ঔষধ সেবনে সাময়িক তা ধমিয়ে রাখা যায় ( বিদ্রঃ মনে রাখবেন ! বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্ষ ছাড়া কোন অবস্তাতেই এ জাতীয় ঔষধ সেবনের চিন্তা ভাবনা করা আর নিজের যৌন জীবন ধংস করা প্রায় সমান ) । তবে আমার ব্যাক্তিগত মতে সবচাইতে উৎকৃষ্ট পন্থা হচ্ছে নিয়মিত নিজ ধর্মীয় কর্ম কান্ড মনযোগ দেওয়া সহ সাংসারিক এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডের দিকে একটু বেশী ধাবিত হয়ে অভ্যস্থ হতে পারলে পি এম ডি ডি থেকে রেহাই পাওয়া সম্বভ … ।

যদিও চিকিৎসার নিয়মে ট্রাকুলাইজার এবং ডিপ্রেশনাল ঔষধ সমুহ সেবনের কথা বলা হয়েছে , তারপর তা সেবন করলেও কোন অবস্থাতেই দীর্ঘদিন এক নাগাড়ে সেবন না করা ভাল নতুবা মানসিক ভারসাম্যতা তিব্র আকার ধারন করতে পারে ।
ধন্যবাদ ………………………………………।।
Version Info ঃ Created by Dr Helal Kamaly , References from – Bristol Medical University ( UK ) Harvey Simon, MD, Editor-in-Chief, Associate Professor of Medicine, Harvard Medical School; Physician, Massachusetts General Hospital. Also reviewed by David Zieve, MD, MHA, Medical Director, A.D.A.M., Inc.

 

মাসিক চক্র বা ঋতুচক্র (menstruation cycle- স্ত্রী প্রজনন তন্ত্র পর্ব – ২)


মাসিক ঋতুচক্র (menstruation) কি?

men-1
প্রথম মাসিক ঋতুচক্র কে ম্যানারচ বলে ( Menarche , যাকে পিউবারটি বা যৌবনের সুচনা বলা যায় ) এবং ইহা শুরু হওয়ার দুই বছর পর থেকে নিয়মিত ভাবে মহিলাদের চক্রাকারে যে ঋতুচক্র হয়ে থাকে তাকেই মাসিক ঋতুচক্র বলতে পারেন ।
মেয়েদের মধ্যে ম্যানারচ শুরু হওয়ার গড় বয়স ১১ বছর এবং প্রথম দুই বছর মাসিক ঋতুচক্র অনিয়মিত হয় অর্থাৎ প্রতি মাসে হয় না এবং সে সময় ফারটিলাইজেশনের জন্য ডিম্বক্ষরণ (Ovaluation) জরুরি, কিন্তু প্রথম দিকের মাসিকগুলোতে ডিম্বক্ষরণ ঘটতেও পারে আবার নাও ঘটতে পারে বিধায় প্রথম ঋতুস্রাব হওয়ার পরবর্তী প্রথম বছরে (প্রায় ১৩ বছর বয়সে) ১০% মেয়ের ঋতুচক্রে ডিম্বক্ষরণ ঘটে, ৫০% মেয়ের তৃতীয় বছরে (প্রায় ১৫ বছর বয়সে) এবং ৯৬% মেয়ের ষষ্ঠ বছরে (প্রায় ১৮ বছর বয়সে) ডিম্বক্ষরণ ঘটে থাকে ।

 

মাসিক কখন শুরু এবং শেষ হয় ?

mens-9
নারীদের প্রজনন প্রক্রিয়ার কার্যক্রম শুরু হয় সাধারণত: ১০-১৬ বছরের মাঝামাঝি বয়সেই বেশী দেখা যায় তবে ক্ষেত্র বিশেষ কোন কোন মেয়েদের ৯ বছর বয়সে, আবার কারো কারো ও বেলায় বিশেষ করে শীত প্রধান দেশে ১৬ বা তার অধিক বয়সে প্রথম মাসিক হওয়া অবাস্থব কিছু নয় । গড়ে মেয়েদেরই ১২ বছর বয়স থেকেই মাসিক শুরু হওয়ার প্রবনতা বেশী এবং তা চলতে থাকে বয়স ৪৫ থেকে ৫০ পর্যন্ত অর্থাৎ একজন নারী প্রৌরত্বে উপনীত হলে তা বন্ধ হয়ে যায় , যাকে বলা হয় রজ:ক্ষান্তি ( Menopause ) বলা হয় ।

 

মসিক চক্র বা ঋতুচক্রের প্রক্রিয়া ? ( What is the menstrual cycle? )

mens-17
মাসিল চক্র বা ঋতুচক্র ( Menstrual cycle) বলতে নারীদেহের ২৮ দিনের একটি পর্যায়ক্রমিক শরীরবৃত্তিয় প্রক্রিয়া বোঝায়। এই চক্র আটাশ দিন পর পর বা তার ২/৩ দিন আগে বা পরেও হতে পারে।

নারীদেহের জননতন্ত্রে জরায়ুর ওপরের দিকে দুই পাশ থেকে দুটি নল চলে গেছে,তাকে বলা হয় ডিম্ববাহীনালি বা ফ্যালোপিয়ান টিউব। আর নিচের দিকে জরায়ুর মুখ ( সারভিক্স ) সংযোজিত হয়ে থাকে যোনিপথের মাধ্যমে দেহের বাইরে উন্মুক্ত হয়ে থাকে । জরায়ুর উপর দিকে ফ্যালোপিয়ান টিউবের শেষ প্রান্তে দুই পাশে থাকে দুটি ওভারি বা ডিম্বাশয়। যার যেকোনো একটি থেকে প্রতি মাসে একটি করে ডিম্বাণু বা ওভাম নির্গত হয়ে ফ্যালোপিয়ান টিউবের মাধ্যমে জরায়ুতে আসে পুরুষের শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হওয়ার জন্য ।

 

mens-5
( একজন মহিলা গর্ভবতী হবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী মাসিকের শেষ দিন হতে ১৩,১৪,১৫.১৬,১৭ নাম্বার দিন হলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন ১৩ এবং ১৪ নাম্বার দিন । এ সময় আসে একটি ডিম্বানু ডিম্বাশয় থেকে নির্গত হওয়ার পর ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত জীবিত থাকে , গর্ভধারণের লক্ষ্যে এ সময়ের মধ্যে ডিম্বাণুটিকে শুক্রাণুর সাথে মিলিত হলে “সহবাস করলে ” ৮০% বেলায় গর্ভ সঞ্চারিত হওয়ার কথা যদি ঠিক ২৮ দিন পর পর ঋতুচক্র নিয়মিত হয়ে থাকে – তবে যদি কারও কারও ৩/৫ দিন পর হয় সেই হিসেব অতিরিক্ত ৩/৫ দিন যোগ করতে হবে )
এ সময় যদি পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনের মাধ্যমে নারীর জরায়ুতে শুক্র না-আসে এবং এই না-আসার কারণে যদি ডিম্ব নিষিক্ত না হয় তবে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুগাত্রের এন্ডমেট্রিয়াম স্তর ভেঙ্গে পড়ে। এই ভগ্ন শ্লেষ্মা ঝিল্লির আবরণে ‘ইসট্রোজেন’ ও ‘প্রজেসটেরোনের’ সম্মিলিত ক্রিয়া শুরু হয়। সেই ঝিল্লির বিবর্তনের ফল এবং তা চক্রাকারে সময় লাগে ২৮ দিন ( ক্ষেত্র বিশেষ , মানসিক, আবহাওয়াগত ,এক্সিডেন্ট, যৌন রোগ, হরমোন অথবা হিমোগ্লোবিনের ভারসাম্যতার কারনে ৩/৫ দিন ব্যাবদান হতে পারে ) । তখন উক্ত মহিলা সহবাস বা অন্য কোন উপায়ে ডিম্বানু শুক্রানুর সাথে মিলন না ঘটিয়ে থাকেন তাহলে তা রক্ত আকারে যোনি পথ দিয়ে বেরিয়ে আসে – আর সম্পূর্ণ এই প্রক্রিয়া কে মাসিল চক্র বা ঋতুচক্র বলে থাকি।

 

ফিজিওলজি অনুসারে মাসিক চক্র প্রধানত তিনটি পর্বে বিভক্ত করতে পারেন –

mens-11
১. মিনস্ট্রাল ফেজ ঃ ( মাসিক চলাকালীন সময় থেকে শেষ ) এর স্খিতিকাল হলো পাঁচ থেকে সাত দিন অথবা যাদের পুস্টি অথবা আয়রনের অভাব তাদের বেলায় তিন থেকে চার দিন। এ সময় যোনীপথে রক্তমিশ্রিত রস ক্ষরণ হয়। এতে রক্তের সাথে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ অস্খায়ী স্তরের খসে পড়া কোষ কলা এবং কিছু কিছু গ্ল্যান্ডের রস মিশ্রিত থাকে। ( ১- ৭ )
২. প্রলিফেরাটিভ ফেজ : ৮-১০ দিন স্থায়ী হতে পারে। শুধু ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রভাবে এটি হয়। এই সময় জরায়ু নিষিক্ত ডিম্বানুকে গ্রহন করার জন্য প্রস্ততি নেয়। ( ৭-১৬ )
৩. সিকরেটরি ফেজ : সেক্রেটরি ফেজ টা সবচেয়ে দীর্ঘ, প্রায় ১০ থেকে ১৪ দিন। একে প্রজেস্টেরন বা লুটিয়াল ফেজ ও বলা হয়। এটিও ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন উভয় হরমোনের যৌথ কারনে হয়। এই সময় নিষিক্ত ডিম্বানুর বৃদ্ধির জন্য জরায়ু সর্বোচ্চ প্রস্ততি নিয়ে থাকে।ডিম্বাশয়ের কোনো ডিম্বানু শুক্রানু দ্বারা নিষিক্ত না হলে পুনরায় মাসিক শুরু হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয় । ( ১৩/১৭ ) গড়ে ৮ % বেলায় ঋতুচক্রের ১৪ নাম্বার দিন থেকে ১৭/১৮ নাম্বার দিন পর্যন্ত এই ৪/৫ দিন গর্ভ সঞ্ছারের সম্বাভনা সবচেয়ে বেশী ।

মাসিক   ঋতুচক্রের জন্য কখন চিকিৎসকের পরামর্ষ নিতে হবে ?

DISCUSSION
যদি মানসিক এবং শারীরিক সমস্যা শারীরিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে এবং একি সাথে মাসিক স্রাবের পরিমাণ বেশী হয় অথবা বেশী দিন হয় অথবা অনেক দেরিতে হয় তাহলে অবশ্যই দ্বিতীয় পর্বের মাসিক চক্রের সময় হাউস ফিজিশিয়ানের পরামর্ষ নেওয়া উচিৎ অথবা তা যদি না করতে পারেন তাহলে ঘরোয়া ভাবে অভিজ্ঞ কারও পরামর্ষে ( বিশেষ করে নিজের মা অথবা সেই ধরণের কেউ ) উপযোক্ত ব্যাবস্তা গ্রহন করলে তার কারন খুঁজে পেতে পারেন । যদি কারন খুঁজে না পান তাহলে তৃতীয় মাসিক চক্রের আগে অবশ্যই সঠিক ডায়াগনোসিস করা উচিৎ বা বিশেষজ্ঞ কে দেখাতে হবে । ( বিঃদ্রঃ সে সময় অনভিজ্ঞ বা কুসঙ্কস্কার জাতীয় আত্মবিশ্বাসী যে কেউ অথবা চিকিৎসা বিজ্ঞানে অভিজ্ঞতা ছাড়া যে কোন পুরুষদের কাছ থেকে থেকে পরামর্ষ না নেওয়াই উত্তম । সৃতি – আমার বাস্থবে শেষ দেখা পর্যন্ত হরমোন জনিত ব্যাঘাত, টিউমার , সিস্ট ইত্যাদি অনেকের ই ধরা পড়েছিল যার মধ্যে সবাই খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পেরেছেন । )
কি কি কারনে ঋতুচক্র বন্ধ অথবা দেরিতে হতে পারে ?

ov-6
নিছের ১১ টি কারনে ঋতুচক্র বন্ধ অথবা অনিয়মিত হতে পারে =
গর্ভসঞ্চার ( যদি সহবাস করে থাকেন তাহলে ঋতুচক্র বন্ধ হওয়ার তারিখ থেকে এক সপ্তাহ পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করালে পূর্ণ নিশ্চিত হতে পারেন , তবে সবচেয়ে ভাল হয় ল্যাব্রেটারির মাধ্যমে পরিক্ষা করা । )
মানসিক ভিশন্নতা ঃ যদি মানসিক ভিশন্নতা থাকে তাহলে শরীর থেকে এ্যড্রিনালিন এবং করটিসল হরমোন বেশী উৎপাদিত হয় বিধায় মানসিক ভিশন্নতার কারনে ও ঋতু স্রাব দেরিতে হতে পারে তবে তার সাথে শারীরিক অন্যান্য অসুবিধা বিশেষ করে হটফ্ল্যাস জাতীয় অসুবিধা থাকবে । যেমন মুখ-কান-ঘাড়-মাথা দিয়ে গরম ভাপ বের হয়, রাতে গাঁ ঘামা,শরীর অবসাদবোধ , মাথা ব্যাথা, ওজন হ্রাস, ভ্রুন এবং চরমজাত অন্যান্য অসুখ বিশুখ ইত্যাদি ।
শারীরিক দুর্বলতা এবং পুস্টিজনিত অভাব ঃ শরীর বেশী অসুস্থ থাকলে ডিম্ব অভুলেশন প্রক্রিয়া অংশগ্রহণ করতে বিলম্বিত হওয়ায় ইস্ট্রোন হরমোন কম উৎপাদিত হয় ফলে সময় মত মাসিকস্রাব হতে বিলম্বিত হতে পারে অথবা রক্তে আয়রনের অভাবে ও তা হতে পারে ।
ওজন ঃ খুব বেশী ওজন বেড়ে যাওয়া অথবা হঠাৎ করে ওজন কমানোর কারন মস্তিষ্কের হাইপো-থ্যালামাস খুব বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ঠিক মত হরমোন সমুহ নিঃসরণ করতে পারেনা বিশেষ করে হঠাৎ ওজন হ্রাস করলে জরায়ুর পাথলা আবরণী সমুহ সংকোচিত বা ছোট হয়ে পরে এবং তা থেকে ইস্ট্রোজেনের উৎপাদন ক্ষ্যামতা মারত্তক ভাবে হ্রাস পাওায়ায় ঋতুস্রাব হতে বিলম্বিত হতে পারে । একি সাথে কাজ, অতিরিক্ত ব্যায়াম, ও পরিবেষ পরিবর্তনের ফলে ও হতে পারে ।
বুকের দুধ বাচ্চাকে সেবন করালে ঃ রিসার্চ- এখানে অবশ্যই জেনে রাখা দরকার, ১০% দুধ দাতা মায়েদের ক্ষেত্রে খুব অল্প লিকিং স্রাব হয়েই আবার গর্ভ সঞ্চার হওয়ার সম্বাভনা আছে, যার ফলে এ রকম কিছু মনে করলে ৩ সপ্তাহের ভিতর প্রেগ্ন্যান্সি টেস্ট করে নেওয়া ভাল – অথবা যদি পুনরায় সন্তান নেওয়া ইছছা থাকে তাহলে ৩ মাস পর দেখবেন বুকের দুধ বন্ধ হয়ে গেছে অর্থাৎ প্রলেক্টিন হরমোন আর উৎপাদিত হচ্ছেনা
বিভিন্ন ঔষধ সেবনের ফলে ঃ জন্ম নিয়ত্রন বড়ি দীর্ঘদিন সেবন অথবা এর ভুল ব্যাবহার অথবা ইমারজেন্সি জন্ম নিয়ত্রন বড়ি সেবন ইত্যাদি ( রিসার্চ – যারা জন্ম নিয়ত্রন বড়ি সেবন করেন তারা যদি পুনরায় সন্তান নেওয়ার ইছছা থাকে তাহলে সন্তান নেওয়ার ৬/৮ সপ্তাহ আগে বড়ি ত্যাগ করে কনডম বা ঐ জাতীয় কিছু ব্যাবহার করে অন্তত একটি বা দুটি মাসিক চক্রের অপেক্ষা করার পর সন্তান জন্ম নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়াই ভাল বা এতে সন্তানের জেনেটিক ক্যামজিন সংমস্রিত হওয়ার সম্বাভনা কম থাকবে অর্থাৎ আপনার সন্তানের ইমিউনিটি শক্তি অথবা জীর্ণতা জাতীয় অসুখে কম আক্রান্ত হবে ।। ) কিছু কিছু অন্যান্য ঔষধ যেমন ঘুমের বড়ি বা ঐ জাতীয় ট্রাঙ্কুলাইজার জাতীয় ঔষধ, করটিকস্টায়েড বা ক্যাম্থ্যারাপি ড্রাগস দীর্ঘদিন সেবন ঋতুস্রাব বন্ধ অথবা অনিয়মিত হতে পারে ।
হরমোনের ভারসাম্য জনিত কারনে ঃ যেমন পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম বা ওভারিতে সিস্ট ( পরবর্তী পর্বে জানতে পারবেন ) ইত্যাদি কারনে ।
থায়রয়েড গ্রন্থির গোলাযোগের কারনে ঃ মুলত থায়রিয়েড গ্রন্থিরস সমুহ বডি ম্যাটাবলিজম প্রক্রিয়া ( হজম প্রক্রিয়া ) সঠিক ভাবে পরিচালনা করে থাকে, যদি কোন কারনে তা ঠিকমত কাজ না করে তাহলে ঋতুস্রাবের অনিয়ম অথবা বন্ধ হতে পারে কেননা ইহা জিটি এইচের সাথে সম্পর্কযুক্ত ।
প্যারিমেনোপোজ ঃ অর্থাৎ যিনি মেনোপোজের ( স্থায়ী ভাবে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়া ) কাছি কাছি সময়ে চলে এসেছেন ( সাধারণত ৪০ বছরের পরই তা হয়ে থাকে ) তবে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন ড্রাগস আবিষ্কৃত হওায়ায় অনেকের বেলায় তা ৫/১০ বছর বৃদ্ধি করা যায় — বিস্তারিত পরবর্তী পর্বে খুঁজ করুন —

 

 

কি কি কারনে ঋতুস্রাব বৃদ্ধি বা অতিরিক্ত হতে হতে পারে ? ( অস্বাভাবিক ঋতুস্রাব )

m-02

এ ধরনের অস্বাভাবিকতাকে আমরা প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করতে পারি। একটি হচ্ছে জননতন্ত্রের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গের শারীরবৃত্তিক অসুবিধা, যেমন :প্রদাহ,টিউমার অথবা ক্যানসার। আর অন্যটিকে আমরা বলতে পারি ডিসফাংকশনাল ইউটেরাইন ব্লিডিং, ইত্যাদি যা শারীরবৃত্তিক কোনো অসুবিধা থাকে না বরং সমস্যা থাকে ঋতুচক্রের কার্যকলাপে। এ ক্ষেত্রে নিয়মিত ঋতুস্রাবের ব্যাঘাত ঘটে এবং রক্তপাত হয় প্রচুর পরিমাণে।

 

মহিলা হরমোনের ভারসাম্যতা জনিত কারন ঃ
মুলত ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টারন হরমোন দুটি জরায়ুর ইন্দড়োমেট্রিয়াম স্থর বা লাইনার সমূহকে নিয়মিত তৈরি করে থাকে যদি কোন কারনে সেই স্থর সমুহ বেশী বৃদ্ধি করে তাহলে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হতে পারে । যদি ও সে ক্ষেত্রে জননতন্ত্রের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ সুস্থই থাকে, কিন্তু হরমোনের বিশৃঙ্খলার জন্য মাসিক অনিয়মিত হয়ে যায়। মেয়েদের মাসিক শুরু হওয়ার সময় অথবা পরে রজঃনিবৃত্তি বা মেনোপজের প্রাক্কালে এ ধরনের রক্তক্ষরণ খুবই সাধারণ ঘটনা। আর এর কারণ হচ্ছে এ সময় হরমোনের সঠিক অনুপাতে নিঃসরণ না হওয়া। রোগীর মানসিক অবস্থার সঙ্গেও এটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানসিক চাঞ্চল্য বা উত্তেজনা, ইত্যাদি এ ধরনের অতিরিক্ত রক্তপাত ডেকে আনে।

ডিম্বাশয় বা ওভারির অকার্যকারীতা ঃ
যদি কোন কারনে ডিম্বাশয় ডিম্ব উৎপাদন না করে তাহলে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হতে পারে । মুলত শরীর থেকে প্রজেস্টারন উৎপাদিত না হওয়ায় তা হয়ে থাকে যার পরিনিতি দীর্ঘ স্থায়ী ম্যানোরেজিয়াতে চলে যায় — বিস্তারিত ম্যানোরেজিয়া পর্বে দেখুন ।

জরায়ুর ফাইব্রয়েড বা মায়োমা ঃ
ইহা একধরণের জরায়ুর টিউমার জাতীয় মাংসপেশির বৃদ্ধি মনে করতে পারেন যা জরায়ুর পেশির অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে এই টিউমারের সৃষ্টি হয় এবং ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে নারীদের মধ্যেই বেশী দেখা যায় । বিস্তারিত জরায়ুর ফাইব্রয়েড পর্বে দেখুন ।

সার্ভাইকাল পলিপ এবং জরায়ুর পলিপ ঃ
সাধারণভাবে জরায়ুর নিচের অংশটিই সার্ভিক্স নামে পরিচিত। আর সার্ভাইকাল পলিপ হচ্ছে সার্ভিক্সে এক ধরনের রক্তনালিময় বৃদ্ধি। এ ক্ষেত্রে একটা নিয়মিত ব্যবধানে অল্প পরিমাণে রক্তপাত হয়। এই টিউমারের ওপর যেকোনো ধরনের চাপ, বিশেষত যৌনসঙ্গম অথবা মলমূত্র ত্যাগের সময় সামান্য চাই রক্তপাত ঘটায়। চিকিৎসা খুবই সহজ। ছোট্ট একটা অপারেশনের মাধ্যমেই এই টিউমার উচ্ছেদ করা যায় এবং খুব কম ক্ষেত্রেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয় তবে জরায়ুর ভিত বা দেওয়ালে পলিপ হলে মেজর অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে ।

এডিনোমাইওসিস ( Adenomyosis ) ঃ জরায়ুর এন্ডমেট্রিয়াল স্তরে এক ধরণের মাংসপেশি বিশেষ বেড়ে যাওয়া কেই বুজায় যার ফলে সেই মাংসপেশি দিয়ে রক্ত ঠিক মত প্রবাহিত হতে পারেনা । ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমে তা নির্মূল করা সম্বভ ।

গর্ভপাত ঃ গর্ভপাত করালে অথবা মিস এভরশন হলে জরায়ুর ভিতর কিছু থেকে গেলে ( সে জন্য গর্ভপাত হলে অবশ্যই দক্ষ হাতে ডি এন সি করানো উচিৎ ) অথবা জরায়ুতে কপার টি (IUCD) ধারণ করলে (জন্ম নিয়ন্ত্রণকারী ডিভাইস)।
ক্যানসার ঃ জরায়ু, জরায়ুর মুখ ( সারভিক্স ) ওভারি অথবা ওভারির নালীতে ক্যানসার জাতীয় কিছু হলে
উইলিব্র্যান্ড ডিজিজ ( রক্ত জমাট বাঁধতে না পারা ) অথবা রক্ত পাতলা করে এমন ধরণের ঔষধ সেবনে – যেমন এস্পিরিন ইত্যাদি (anticoagulants ) নানা কারনে জরায়ু থেকে বেশী রক্ত যেতে পারে ।

আপনি যখন একবার নিশ্চিত হয়ে যাবেন যে আপনার এই তিব্র ব্যাথা কোন রোগের কারণে হচ্ছে না, তখন আপনি এই ব্যাথা কমানোর জন্য প্রাকৃতিক বা ভেষজ উপায় অবলম্বন করতে পারবেন। কিছু কিছু ঘরোয়া প্রতিকার, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও ব্যায়াম আছে যা আপনার এই তীব্র ব্যাথা কমাতে সাহায্য করবে।

 

মাসিকের সময় নিজের যত্ন কীভাবে করবেন ঃ ( সংগৃহীত )

mens-6
ক্যালেন্ডার অথবা ডায়েরীতে মাসিক শুরু বা শেষ হবার তারিখ এবং মাসিক পূর্ব সিনড্রম-এর উপসর্গগুলো লিখে রাখতে হবে
স্যানিটারি ন্যাপকিন/ প্যাড, কাপড় ব্যবহারের সময় নিচের বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে :সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য প্যাড বা কাপড় পরিবর্তনের আগে ও পরে ভালোমত হাত পরিষ্কার করতে হবে, প্রতি তিন বা চার ঘন্টা পর প্যাড পরিবর্তন করতে হবে, প্যাডটি অথবা কাপড়টি ভালো করে মুড়ে আবর্জনার মধ্যে ফেলতে হবে। টয়লেটের মধ্যে ফেললে সুয়ারেজ লাইন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ
মাসিকের সময় সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে হবে যেমন :শর্করা সম্বলিত-শস্য, ডাল, শাকসবজি, দই, আলু খেতে হবে, আমিষ জাতীয় খাদ্য যেমন : দুধ, ডিম, বাদাম, মাছ ও মাংস খেতে হবে, আয়রণ বা লৌহ জাতীয় খাদ্য যেমন-ডিম, সিম, পালংশাক, আলু, কলা, আপেল, গুড়, খেজুর, কালোজাম ইত্যাদি খেতে খেতে হবে, ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য যেমন-বাদাম, সয়াবিন, গাঢ় সবুজ শাকসবজি খেতে হবে, ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার-দুগ্ধজাত খাবার, দুধ, ডিম, বাদাম (Almond), এবং সয়াবিন খেতে হবে, কম লবণযুক্ত খাবার খেতে হবে, তাজা ফলের রস পান করতে হবে এবং অতিরিক্ত চা-কফি পান থেকে বিরত থাকতে হবে, প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে ।
ত্বকেরযত্নে করণীয়
ত্বকের মরা কোষ, ঘাম ও ক্ষতিকর জীবাণু থেকে রক্ষার জন্য দিনে অন্তত দুইবার ভালো সাবান দিয়ে মুখ ধুতে হবে . .

তলপেট ব্যথা হলে করণীয়
সুত্র অনুসারে তলপেটের রক্তের শিরাগুলো সংকুচিত না থেকে বড় হয় এমন ধরণের কিছু করলে রক্তসঞ্চালন ভালো হবে। যেমন তলপেটে এবং পিঠে গরম পানির বোতল ধরে রাখা, তলপেটে হালকা মেসেজ করলে ব্যথা কমে যাবে, হালকা ব্যায়াম করা ইত্যাদি
সেই সাথে গরম তরল খাবার – যেমন গরম দুধ, গরম সুপ ইত্যাদি আহার করুন – জরায়ু বা তলপেটে চাপ লাগে এমন কিছু না করা সহ বেশী করে পানি পান করুন —–।
যদি অসহ্য ব্যাথা ( ডিসম্যানোরিয়া ) হয় তাহলে এনালজ্যাসিক ট্যাবলেট ( প্যারাসেটামল, আইব্রোফেন ইত্যাদি ) সেবন করতে পারেন । রিসার্চ ঃ ডিসম্যানোরিয়া জাতীয় ব্যাথা বেশী না হলে অল্প বাথাতে যে কোন ধরণের ব্যাথা নাশক ঔষধ সেবন করা উচিৎ নয় অথবা যদি সেবন করেন তাহলে নিয়মিত প্রতি চক্রের সময় সেবন করে অভ্যস্থতায় পরিণত না হয় সে দিকে খেয়াল রাখবেন । অথবা আপনার  হাউস ফিজিশিয়ানের  পরামর্শ মতো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ব্যথার কারণ নির্ণয় ও সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে পারেন —

পরবর্তী পর্বে —— মাসিক পূর্ব সিন্ড্রম কি ও চিকিৎসা …………। ধন্যবাদ

Cdt  : Dr H Kamaly ( MPH ) Hon PhD ( Health & Med Science )

Apgar BS, Kaufman AH, George-Nwogu U, Kittendorf A. Treatment of menorrhagia. Am Fam Physician. 2007 Jun 15;75(12):1813-9.

Casablanca Y. Management of dysfunctional uterine bleeding. Obstet Gynecol Clin North Am. 2008 Jun;35(2):219-34.

Chen EC, Danis PG, Tweed E. Clinical inquiries. Menstrual disturbances in perimenopausal women: what's best? J Fam Pract. 2009 Jun;58(6):E3.

Cho SH, Hwang EW. Acupuncture for primary dysmenorrhea: a systematic review. BJOG. 2010 Apr;117(5):509-21. Epub 2010 Feb 17.

Damlo S. ACOG guidelines on endometrial ablation. Am Fam Physician. 2008 Feb 15;77(4):545-549.

Daniels J, Gray R, Hills RK, Latthe P, Buckley L, Gupta J, et al. Laparoscopic uterosacral nerve ablation for alleviating chronic pelvic pain: a randomized controlled trial. JAMA. 2009 Sep 2;302(9):955-61.

Gordon CM. Clinical practice. Functional hypothalamic amenorrhea. N Engl J Med. 2010 Jul 22;363(4):365-71.

 

 

মহিলা জনন তন্ত্রের গঠন এবং হরমোন -সূচনা পর্ব – ( মহিলাদের জন্য প্রয়োজনীয় যা মেডিক্যাল সাইন্স এন্ড রিসার্চ অনুসারে বর্ণীত )


pen 4

 

শিক্ষণীয় – ডকুমেন্টারি প্রমাণ্য ভিত্তিক একটি বিষয় যা সদ্য রিসার্চ থেকে নেওয়া হয়েছে – যা থেকে সবাই উপকৃত হবেন বা অনেক অজানা কিছু শিখতে জানতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস – এবং যদি বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে এই সব বিষয় সামান্য জেনে রাখেন তাহলে ব্যাক্তিগত পারবারিক জীবনে, পুরুষ – মহিলা- সবাই , কিছু না কিছু উপকৃত হওয়ার কথা – সেই সাথে তরুন – তরুণীরা ও অনেক টা নিজকে সংশোধন করে নিতে পারবে এবং পরোক্ষ ভাবে সামাজিক অপরাধ জাতীয় প্রবণতা ও সত্য কিছু জেনে রাখতে পারবে বলে মনে হয় – সেই কথা মাথায় রেখেই আমার লিখা , কাউকে খুশি করা বা সুনাম অর্জনের জন্য নয় – ধন্যবাদ ( ডাঃ হেলাল কামালি )
Reference from:- Dr Domingoঃ- University Hospitals Bristol NHS Trust / University of Manchester / Uni Rochester sex & Education – Alternatives to Human Growth Hormone HGH & sex hormone -Human Sexuality-Sexual Attitude Restructuring & Sexual Pleasure Education Research ( Uni of BIU ) And few of article from WHO & Bangladeshi Medical proffesors ( Created by Dr.Helal Kamaly )

 

ov-2

 

স্ত্রী প্রজনন তন্ত্র দুটি প্রধান অংশের সমন্বয়ে গঠিত। স্ত্রী জননতন্ত্র প্রধানত দুটি অংশে বিভক্ত করা যায় – বাহ্যিক যৌনাঙ্গ ও অভ্যন্তরীণ যৌনাঙ্গ।
অভ্যন্তরীণ যৌনাঙ্গ ঃ- প্রথম ঃ- জরায়ু, যেখানে ফিটাস বিকশিত হয়, যোনীয় ও জরায়ুজ ক্ষরণ উৎপন্ন হয় এবং পুরুষের শুক্রাণু ফেলোপিয়ান নালিতে পরিবহন করে নিয়ে যায়।
দ্বিতীয় ঃ- প্রধান অংশ হচ্ছে ডিম্বাশয়, যা ডিম্বাণু উৎপন্ন করে। এ সবই শরীরের অভ্যন্তরীন অংশ। যোনি শরীরের বাইরে ভোলভার সাথে যুক্ত যা লেবিয়া, ক্লিটোরিস, এবং মূত্রনালী নিয়ে গঠিত। যোনি, জরায়ুর সাথে সারভিক্স দ্বারা সংযুক্ত; ডিম্বাশয়, উভয় পাশে দুই ফেলোপিয়ান নালির মাধ্যমে জরায়ুর সাথে সংযুক্ত। নির্দিষ্ট সময়ে ডিম্বাশয়, ডিম্বাণু ক্ষরণ করে যা ফেলোপিয়ান নালি হয়ে জরায়ুতে এসে পৌঁছে।

 

Overy বা ডিম্বাশয় ঃ

ov-1
ডিম্বাশয় দেখতে অনেকটা ডিম্বাকার এবং—দৈর্ঘে ৩ সে.মি., প্রস্থে ১.৫ সে.মি., এবং পুরু ১.৫ সে.মি.। (যেকোনো একটির জন্য) শরীরে এর অবস্থান পেলভিস বা শ্রোণীর দেয়াল ঘেষে, যাকে বলা হয় ওভারিয়ান ফসা। সাধারণত ফসার নিচে থাকে বহিঃস্থ ইলিয়াক ধমনী এবং সামনে থাকে মূত্রনালী ও অন্তঃস্থ ইলিয়াক ধমনী। প্রতিটি ডিম্বাশয় ফেলোপিয়ান টিউবের ফিম্‌ব্রিয়ার সাথে যুক্ত।ইহা একজোড়া করে থাকে। সাধারণত প্রতিটি ডিম্বাশয়ই প্রতি মাসে ডিম্বক্ষরণ করে। কিন্তু কারণবশত, একটি ডিম্বাশয় না থাকলে বা কাজ না করলে অপর ডিম্বাশয়টি ডিম্বক্ষরণ চালিয়ে যেতে থাকে।
স্ত্রী প্রজননকাল শুরু হয় ১২ -১৫ বৎসরের ভিতরে এবং স্থায়ী থাকে ৪৫ বৎসর পর্যন্ত ( গড়ে এশিয়ান মহিলাদের ৩৪ বয়স পর্যন্ত ) এই সময়ের ভিতরে ডিম্বাশয় থেকে গ্রাফিয়ান ফলিকল ( ডিম ) উৎপন্ন হয় তার সারা জিবনে প্রায় ৪৫০টি। এরপর নারীর প্রজনন ক্ষমতা বন্ধ হয়ে যায় । ওভারি প্রথম সন্তান জ্নদানের পর আর কখনো আগের অবস্থায় ফিরে যায় না। জন্মগত ত্রুটি হিসেবে ডিম্বাশয় না থাকলে ঋতুস্রাব হবে না, গর্ভধারণও হবে না কিন্তু একজন নারী বেঁচে থাকবে। ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বস্থলন হওয়ার প্রক্রিয়াকে বলে ওভুলেশন বা ডিম্ব পরিস্ফুটন প্রক্রিয়া ।
ডিম্বাশয় পুরুষের শুক্রাশয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। এতে গোনাড ও অন্তঃক্ষরা উভয় প্রকার গ্রন্থি-ই রয়েছে। ডিম্বাশয় থেকে উৎপন্ন গ্রাফিয়ান ফলিকল ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বনালীতে আসে। এই সময় গ্রাফিয়ান ফলিকল-এর একটি অংশ ডিম্বাশয়ে থেকে যায়। থেকে যাওয়া এই অংশটির রং হলুদ। একে বলা হয় করপাস লুটিয়া (Corpus lutia)। এর কোষগুলো ইস্ট্রোজেন (Estrogen) এবং প্রোজেস্টেরন (Progesteron) নাম দুটো স্ত্রী হরমোন নিঃসরণ করে। ইস্ট্রোজেন-এর প্রভাবে ফলে গর্ভকালীন সময়ে নারীর স্তনকে পুষ্ট ও বৃদ্ধি করে। একই সাথে জরায়ুর আকার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। পক্ষান্তরে প্রোজেস্টেরন জরায়ুর ভিতরে ভ্রণের পূর্ণ বিকাশের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে। ( বিস্থারিত যৌন রোগ অধ্যায়ে জানতে পারবেন ) অর্থাৎ ডিম্বাশয় দুটি ই শরীরের প্রধান দুইটি কাজ করে , প্রথমত oocytes (ডিম) উৎপাদন করা দ্বিতীয়ত প্রজনন হরমোন উৎপাদন করা ( ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন )

 

ডিম্বাণু (Egg Cell or Ovum) ঃ-

ov-4
ডিম্বানু বলতে জীবের স্ত্রীজনন কোষ বুঝানো হয় যা জীবের যৌন জনন প্রক্রিয়ায় শুক্রাণুর দ্বারা নিষিক্ত হয়ে থাকে। ডিম্বাণু সাধারনত হ্যপ্লয়েড ক্রোমোসোম ধারন করে থাকে। নিষিক্ত ডিম্বাণু ডিপ্লয়েড যা প্রথমে জাইগোট গঠন করে যা পরবর্তিতে ভ্রূন এবং শিশু জীবে পরিনত হয়।
ডিম্বানু থাকে ডিম্বাশয়ে। একটা মেয়ের ডিম্বাশয়ে মিলিয়ন সংখ্যক অপরিণত ডিম্বানু থাকতে পারে । ডিম্বস্ফোটনের সময় পরিণত ডিম্বানু ফেলোফিয়ান নালিকা দিয়ে ক্রমশঃ নালিকার নিচের দিকে যেতে থাকে এবং অপেক্ষারত শুক্রানুর সাথে (যদি থাকে) মিলিত হয়ে নিষিক্ত হয়। ডিম্বস্ফোটনের সময় সম্ভাব্য গর্ভধারণ প্রক্রিয়াকে সহজ করার জন্য জরায়ুর প্রাচীর পুরু হয়ে উঠে। সাধারণত একবার ডিম্বস্ফোটনের সময় একটা ডিম্বানুই নির্গত হয়। একটা ডিম্বানু ডিম্বাশয় ত্যগ করার পর সাধারণতঃ আর ১২-২৪ ঘন্টা বেঁচে থাকে।ডিম্বস্ফোটনের সময় অনেকে ডিম্বাশয়ের আশেপাশের এলাকায় মৃদু ব্যাথা অনুভব করতে পারে। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় mittelschmerz বলে। ডিম্বস্ফোটনের সাথে মাসিকের (Menses)কোন সম্পর্ক নেই। ডিম্বস্ফোটন না হলেও মাসিক হতে পারে আবার মাসিক ছাড়াও ডিম্বস্ফোটন ঘটতে পারে।অনিষিক্ত ডিম্বানু খন্ড বিখন্ড হয়ে পরে জরায়ুর প্রাচীর কর্তৃক শোষিত হয়ে যায়।
একজন পূর্ণাঙ্গ রমণীর ডিম্বাশয় থেকে প্রতি মাসে একটি করে ডিম্বাণু নির্গত হয় এবং এই ডিম্বাণু পুরুষের শুক্রকিটের সাথে পরিস্ফুটন না হলে তা আবার নস্ট হয়ে চলে যায় ( যাকে মাসিক প্রক্রিয়া বলে , ২৮ দিন গড়ে, শ্রী রোগ অধ্যায়ে বিস্থারিত ) । একজন নারী পিউবারটিস সময় থেকে শুরু করে মেণপোজের সময় পর্যন্ত ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত তার জিবনে প্রায় দুই মিলিয়ন oocyte বা ডিম ডিম্বাশয়ে তৈরী করার যোজ্ঞতা রাখলেও মাসে মাত্র একটি ডিম্বাণু সৃষ্টি হয় এবং শ্রী জীবনে ৪৫০ পর্যন্ত ডিম্বাণু পরিস্ফুটনের ক্ষমতা থাকে । শুধু এক ডিম্বাশয় থেকে একটি একক oocyte বা ডিম প্রতিটি মাসিক চক্র সময় মুক্তি হয় বা প্রতিটি ডিম্বাশয় একটি ডিম মুক্তির মধ্যে একটি বিকল্প মোড় নেয়.
একজন মহিলা পিউবারটি থেকে মেনপোজ পর্যন্ত ডিম্বাশয়ে প্রায় ৩-৪ লক্ষ প্রিমর্ডিয়াল ফলিকল (Primordial folicle) থাকে এই ফলিকলগুলো হরমোনের প্রভাবে প্রতিমাসে বৃদ্ধি পায়। এদের ভিতরে একটি ফলিকল সবচেয়ে বড় আকার ধারণ করে। একে বলা হয় গ্রাফিয়ান ফলিকল (Graafian folicle)। প্রজননের ক্ষেত্রে এই গ্রাফিয়ান ফলিকেল ( উর্বর ডিম্ব’। ) ই সন্তান হিসাবে জন্ম নেয় সেই হিসাবে একজন মহিলা সারা জিবনে 400-500 ডিম পরিস্ফুটনের যোগ্যতা থাকে ( অর্থাৎ ৪০০/ ৫০০ সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা থাকত যদি ……………………।। ( রিসার্চ ) !!!!! ( অর্থাৎ একজন মহিলা চাইলে তার সার জীবনে ৪৫০ টি সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন যদি ডিম্ব পরিস্পুটনের মুহূর্তে স্থান্তর করে টিউব পদ্ধতি বেচে নেওয়া হয় । ) সেই হিসাবে প্রথম পুরুষ আদম ( আঃ ) এবং বিবি হাওয়ার যে প্রজনন ক্ষমতা বেশি ছিল ( প্রচলিত ইতিহাস থেকে শুনা যায় ) তা ১০০% সত্য বলে প্রমাণিত । আধুনিক বিজ্ঞান তাই বলে দেয় – অর্থাৎ একজন মহিলা যদি ৪৫ বছরের ভিতরে ৪৫০ সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন তা হলে বিবি হাওয়া বা তার পরবর্তী জেনারেশনরা কি পরিমাণ সন্তান জন্ম দিয়েছেন মহিলাদের ডিম্বকোষ এবং পুরুষদের শুক্রকোষের জীবন বৃত্তান্ত পর্যালোচনা করলে , আমার মনে হয় কাউকেই আর বুজিয়ে বলা লাগবেনা ।

 

অভুলেশন / ডিম্ব পরিস্পুটন প্রক্রিয়া বা গর্ভ কিভাবে হয় ঃ-

ov-5
যখন যৌন মিলন বা যে কোন উপায়ে শুক্রানু নারীর যোনিমুখ দিয়ে অথবা বাহির থেকে টিউবের মাধ্যমে জরায়ুতে প্রবেশ করানো হয় ( কম পক্ষে ১ মিঃলিঃ এবং এতে ৩ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকতে পারে ) তখন কিছু কিছু শুক্রানু জরায়ুর মুখ থেকে সাঁতরে জরায়ুর অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। মেয়েদের তখন ডিম্বাণুর নি:সরণ হয় । সে সময় জরায়ুর উপযোক্ত পরিবেশের কারণে জরায়ুর ভিতরের শ্লেষ্মা অন্যান্য সময়ের চেয়ে পাতলা হয়, ফলে শুক্রানু অনায়াসেই এর মধ্য দিয়ে যেতে পারে। শুক্রানু গর্ভাশয়ের মধ্য দিয়ে সাঁতরে ডিম্বনালী (ফেলোপিয়ান টিউব) এ প্রবেশ করে। এখানেই ডিম্বাশয় থেকে নির্গত ডিম্বানু অবস্থান করে। এই শুক্রানু ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলে গিয়ে নিষিক্ত হয়, অর্থাৎ গর্ভাবস্থার সূচনা হয়। আর এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় ডিম্বনালীতে (শুক্রাণু ও স্ত্রীর ডিম্বাণু ডিম্বনালির প্রায় শেষ প্রান্তে, অম্বুলা নামক জায়গায় মিলিত হলে নিষেক সংঘটিত হয়। নিষেকের ফলে যেটি তৈরি হয় সেটিকে ভ্রূণ বলে ) এভাবে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নি:সৃত হওয়ার পাঁচ থেকে সাতদিন পর নিষিক্ত ডিম্বাণুটি গর্ভাশয়ের দেয়ালে নিজেকে প্রতিস্থাপন করে এবং শেকড়ের মতন কিছু ‘ভিলাই’ তৈরি করে।আর এই ‘ভিলাই’গুলিই পরবর্তীতে বেড়ে উঠে গর্ভফুল বা প্লাসেন্টা (প্লাসেন্টা, এমন একটি অঙ্গ যা, জন্ম নেয়ার আগ মূহূর্ত পর্যন্ত শিশুকে খাওয়ানো এবং রক্ষায় সাহায্য করে) তৈরি করে। ২৮০ দিন থাকার পর সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় ( +-৭ দিন ) । এ সময়ের মধ্যে ডিম্বাশয়ে আর ডিম্ব প্রস্ত্তত হয় না। ফলে ঋতুস্রাব বন্ধ থাকে এবং সন্তান সৃষ্টির কাজ প্রকৃতির অপূর্ব ভাবে চলতে থাকে।
আরেকটু স্পষ্ট করে যদি বলি ঃ- ( বৈজ্ঞানিক ভাবে ) মানুষের মোট ক্রোমোজোমের সংখ্যা ৪৬ (46) জোড়া, এর মধ্যে পিতার শরীর থেকে শুক্রাণুর মাধ্যমে আসে ২৩ জোড়া ও বাকী ২৩ জোড়া আসে মায়ের শরীর থেকে ডিম্বাণুর মাধ্যমে। মায়ের শরীরে এই শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন ঘটে যাকে বলা হয় নিষেক বা ফার্টিলাইজেশন। নিষেকের ফলেই সৃষ্টি হয় পুরো ৪৬ জোড়া ক্রোমোজোমবিশিষ্ট নতুন ভ্রূণের, যা প্রায় নয় মাস ধরে মায়ের শরীরে জরায়ুর মধ্যে বৃদ্ধি পেয়ে পরিশেষে নতুন শিশু হিসেবে ভূমিস্থ হয়।
ডিম্ব পরিস্পুটন বা নিষিক্ত কখন হয় ঃ– ( প্রাকৃতিক উপায়ে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির একটা অংশ )

ov-6
মাসিক ঋতুচক্রের মাঝামাঝি (অর্থাৎ ১৪ দিনের মাথায়) লুটিনাইজিং হরমোন (LH) ক্ষরণের ৩৬-৩৮ ঘন্টার মধ্যে ডিম্বকোষ (Ovum) নির্গত হয়। তখন ডিম্বকোষ যদি ৩৬ ঘন্টার মধ্যে উপযুক্ত সংখ্যক শুক্রকোষ পায় তখন গর্ভ সঞ্চার হয় । এর পর ও ডিম্বকোষটি জীবিত থাকে আরো প্রায় ৩৬ ঘন্টা অর্থাৎ ডিম্বকোষের আয়ু সর্বমোট ৭২ ঘন্টা বা তিনদিন। অন্যদিকে যৌনমিলনের পর জরায়ু তথা ডিম্বনালীতে প্রবেশের পর শুক্রকোষও (spermatorza) জীবিত থাকতে পারে সর্বাধিক ৭২ ঘন্টা । তাই ২৮ দিনের মাসিক ঋতুচক্রের মাঝামাঝি মোট প্রায় ১২০ ঘন্টা (৫দিন) হচ্ছে উর্বর সময়,–এই সময় যৌনমিলন হলে সন্তানের জন্ম হতে পারে। মোটামুটি মাসিকের ১৪ দিনের মাথায় ডিম্বকোষ হচ্ছে ধরে নিয়ে তার ২-৩ দিন আগে ও ২-৩ দিন পরে হচ্ছে এই উর্বর সময়। সাধারণভাবে ১১ তম -২০শ দিনের মধ্যকার সময়টিকে উর্বর সময় হিসাবে ধরা যায় ( বেশির ভাগ ১৪ম থেকে ১৭ম এই পাঁচ দিন ৭১% সম্বাভনা ডিম্ব নিষিক্ত হওয়ার সময় )- কখন ও এর কিছুটা ব্যাত্রিক্রম ঘটে বিধায় এর আগে পিছে দুই দিন যোগ করে নিলে মহিলাদের গর্ভ সঞ্চার হওয়ার সম্বাভনা ৯৬% মুক্ত থাকে বলে মনে করা হয় ( ১৩ম – ২১ তম= ৯ দিন ) । ( বিস্তারিত শ্রী রোগ অধ্যায়ে জেনে নিবেন )

 

হিজরা সন্তান কিভাবে হয় ঃ

এক্স এক্স প্যাটার্ন ডিম্বানুর সমন্বয়ে কন্যা শিশু আর এক্স ওয়াই প্যাটার্ন থেকে সৃষ্ট হয় ছেলে শিশু। ভ্রুনের পূর্ণতার স্তর গুলোতে ক্রোমোজোম প্যাটার্নের প্রভাবে ছেলে শিশুর মধ্যে অন্ডকোষ আর কন্যা শিশুর মধ্য ডিম্ব কোষ জন্ম নেয়। অন্ডকোষ থেকে নিসৃত হয় পুরুষ হরমোন এন্ড্রোজেন এবং ডিম্ব কোষ থেকে নিসৃত হয় এস্ট্রোজেন। ভ্রুনের বিকাশকালে নিষিক্তকরন ও বিভাজনের ফলে বেশকিছু অস্বাভাবিক প্যাটার্নের সৃষ্টি হয় যেমন এক্স এক্স ওয়াই অথবা এক্স ওয়াই ওয়াই। এর ফলে বিভিন্ন গঠনের হিজড়া শিশুর জন্ম হয়। ( মনে রাখবেন হিজড়া শিশুকে যদি পরিনত বয়সে যাওয়ার আগে যথাযথ মেডিকেল ট্রিটমেন্ট করা হয় তাহলে বেশীভাগ ক্ষেত্রেই তাকে সুস্থ করা সম্ভব। )

যমজ সন্তান কিভাবে হয় ?
অনেক মা ই প্রসবের সময় এক সাথে দুই বা কখনো তার অধিক সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকেন। এ নিয়ে অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন জাগে কিভাবে ? । ইহা প্রকৃতিক এবং বেশ রহস্য জনক ( বিষয় টি একটু জটিল বিধায় পরবর্তীতে জানতে পারবেন ) তবে জমজ সন্তান দুই ভাবে হয়ে থাকে –
বাইনোভুলার বা ডাইজাইগোটিক (Binovular/ Dizygotic)ঃ- মায়ের জরায়ুতে শিশু দুটি সম্পূর্ণ আলাদা দুটি ডিম্বানু থেকে জন্ম নেয় এবং নিষিক্ত করা শুক্রানু দুটিও সম্পূর্ণ আলাদা ভাবে মিলিত হওয়ার কারণে দুটি শিশুর ভ্রুন আলাদা ভাবে তৈরি হয় একি জরায়ুর ভিতর । ফলে শিশু দুটির আলাদা আলাদা দুটি প্লাসেন্টা থাকবে এবং এদের লিঙ্গ (sex) ও ভিন্ন হতে পারে । এ ধরণের দুটি শিশুর একসাথে লেগে থাকার সম্ভাবনা একেবারে কম যা গর্ভ বতি মায়েদের যমজ সন্তান প্রসবের ৮০% ই এ রকম হয়ে থাকে । অন্যান্য বৈশিষ্টের মধ্যে এ ধরণের জন্ম নেওয়া সন্তান্দের দেহের গঠন, রক্তের নমুনা, বা অন্যান্য আচরণ এক হয়না বা দুজনের দেহের গঠন ও এক না হতে পারে ।
ইউনিওভুলার বা মনোজাইগোটিক (Uniovular/ Monozygotic) ঃ- এ ক্ষেত্রে মায়ের একটি ডিম্বানু তে নিষিক্ত হয়ে যদি দুটি শিশুর জন্ম হয় ও পরবর্তীতে নিষিক্ত ডিম্বানুটি পরবর্তীতে বিভাজিত হয়ে দুটি পূর্ণাঙ্গ শিশুতে পরিণত হয়। । অর্থাৎ শিশুর দুটির একই প্লাসেন্টা থাকে। এ ধরণের যমজ সন্তান্দের বেলায় দুটির লিঙ্গ এবং সকল শারীরিক এবং মানসিক বৈশিষ্ট প্রায় এক রকম থাকে। কারন শিশু দুটি একই জীন (Gene) বহন করে এবং সকল বৈশিষ্ট একই রকম হয় তাই এদের কে অনেক সময় আইডেন্টিকাল টুইন (Identical twin) বলা হয় । তবে অনেক সময় এই সব ক্ষেত্রে ৬০% বেলায় একটি শিশু অন্য শিশুর সাথে জোড়া লেগে থাকতে দেখা যায় সে জন্য মায়েদের একটু ঝুকি বেশি থাকা স্বাভাবিক , তার পর ও অভিজ্ঞ সার্জনের মাধ্যমে একটি শিশুর পূর্ণ জীবন ধারন ক্ষমতা রাখে । বা আধুনিক পদ্ধতিতে আর ও অনেক কিছু করা সম্ভভ । তবে সাবধান এ ধরণের মায়েদের কে সব সময় বাড়তি সতর্কতার সহিত যত্ন করে রাখবেন কেন না তিনিদের বেশির ভাগ মহিলা এনিমিয়া, এক্লাম্পসিয়া, এন্টিপারটাম হেমোরেজ, ম্যাল প্রেজেন্টেশন, প্রিটার্ম লেবার সহ নানাবিধ সমস্যা হবার সম্ভাবনা অনেক বেশী থাকে।

 

টেস্টিঊব পদ্ধতি ঃ-

ov-7
টেস্টটিউব পদ্ধতিতে বর্তমানে দুই ধরণের । একটি আইভিএফ (IVF) এবং ইকসি (ICSI) ।
আইভিএফ পদ্ধতি ঃ স্বামী-স্ত্রীর শুক্রাণু ও ডিম্বাণুকে বিশেষ জাইগেশন জিন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় একটি গ্লাসের যারে বা পাত্রে একত্রীত করে নিষিক্ত করার ব্যবস্থা করা হয় তখন উক্ত পাত্রে একটি ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করার জন্য লাখের মত শুক্রাণু চাড়া হয় ( আধা মিঃলিঃ ) তখন শুক্রারুনুর নিজের ইছছায় যে কোন একটা কীট ডিম্বাণুর ভিতরে প্রবেশ করেই তাকে নিষিক্ত করে ( ভ্রূণ ) তখন যে সব পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ কম থাকে তাদের বেলায় প্রয়োজনে অণ্ডকোষ থেকে আলাদা ভাবে অস্রপাচারের মাধ্যমে বিশেষ পরিক্ষার মাধ্যমে বাচাই করে সুস্থ ও মানসম্পন্ন কীট টি কে মাইক্রোজ্যানেটিক প্রক্রিয়ায় সরাসরি শুক্রকিটকে ইঞ্জেকট করে ডিম্বাণুর ভিতর ঢোকিয়ে দেওয়া হয় এবং তা একটি ইনকিউবেটরে রেখে সেখানে ভ্রূণের সৃষ্টি করা হয় যা করতে সময় লাগে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা । এইসব পদ্ধতিতে ইচ্ছা মত ডিম্বাণুর মাধ্যমে নতুন ভ্রুন তৈরি করা সম্ভব বা এ থেকে পরিক্ষা করে ভাল ও উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ভ্রূণ টিকে মহিলাদের জরায়ুতে স্থানন্তর করা হয়ে থাকে । পরবর্তীতে মায়ের জরায়ুর ভিতর স্বাভাবিক গর্ভসঞ্চালনের মতো ভ্রুন টি বৃদ্ধি পেয়ে সুন্দর ও পূর্ণাঙ্গ শিশু জন্মাতে থাকে । এর আরেক নাম ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন।
এখানে শুধু মাত্র ডিম্বাশয় বা ডিম্বাণুর কাজ বাহিরে কৃত্রিম ভাবে শুক্রাণুর দ্বারা করে যথা উযোক্ত ভাবে মহিলার জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা হয় । এরপর স্বাভাবিক ভাবেই শিশু মাতৃগর্ভে বেড়ে ওঠে – মুলত ইহাই টেস্টিউব পদ্ধতি ।
আমার জানা মতে যদি স্বামী শ্রীর দুজনের ডিম্ব ও শুক্রাণুর দ্বারা তা করানো হয় ( শ্রীর ডিম্বাণুর বা অভারির কোন সমস্যা থাকলে ) তা হলে সামাজিক বা ধর্মীয় তেমন বিধি নিষেধ আসার কথা নয় ( তার পর ও ভাল ধর্ম বিশেষজ্ঞের পরামশ নেওয়া ভাল ) কেন না ইউরোপ অ্যামেরিকায় এসব তেমন দেখা হয়না বরং জেনেট্যিকেল জিনের শিশুটি উচ্চ ডিএন এ ক্ষমতা সম্পন্ন হওয়ার জন্য অনেক মহিলা টাকা বা সম্পর্কের বিনিময়ে অনেক সুপুরুষের শুক্রাণু দিয়ে নিজ পেটে সন্তান ধারন করে থাকেন ( সে জন্য ডিম্ব বা শুক্রকিটের আলাদা ব্যাংক ও রয়েছে সেখানে হিমায়িত করে রাখার ব্যাবস্থা ও আছে ) যা এশিয়ান সমাজ ও ধর্মীয় ভাবে কখন ও তা গ্রহন যোগ্য নয় । ( আর ও জানতে হলে জ্যানেটিক্যাল অধ্যায়ে দেখুন )

 

কিভাবে একজন পুরুষের পেট হতে সন্তান জন্ম হতে পারে? :

না কখন ও একজন পুরুষ একটি সন্তান মহিলাদের মত জন্ম দিতে পারবেনা ( এক্স- ওয়াই , ক্রোমোসোমস ছাড়া, অসম্বভ ) – এখন পর্যন্ত আই ভি এফ পদ্ধতিতে ((IVF techniques ) – শুধু পারা যাবে অভুলেশন প্রক্রিয়ায় নিষিক্ত ডিম্বাণু কে পেটের ভিতর পেরিটেনিয়াম এবং ডুয়েডেনামের মধ্য বর্তি স্থানে পরিস্পুটিত ডিন্মবকে রেখে ভুমিস্ট করা যা মহিলাদের জরায়ুর বিকল্প ব্যাবস্থা মনে করা হয় – অর্থাৎ এর জন্য জীন ট্যাকনোলিজিস্ট রা প্রথমে পেটের বাহিরে শ্রীর ডিম্বাণু ও পুরুষের শুক্রকিটকে নিষিক্ত করে তা পেটের ভিতর পেরিটিনিয়াম এর নিছে যে কোন একটি অংশে চিপমেন্ট করে রেখে দেন ( an embryo and placenta into the abdominal cavity, just under or into the peritoneum- the surrounding lining) । পরবর্তী পর্যায়ে উক্ত নিষিক্ত ডিম্বাণু ( প্লেসেন্টা ) বা গর্ভ ফুল ধিরে ধিরে সেখানে বড় হতে থাকে । সে জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা যা যা করে থাকেন –

যেমন বাহির থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণে ফেমেইল হরমোন প্রয়োগ এবং নির্দিষ্ট অতিরিক্ত কিছু তত্তবাধনে রাখতে হয় । সেই সাথে প্লেসেন্টার সন্তান বড় হওয়ার সাথে সাথেই অস্রপাচারের মাধ্যমে তাকে ভুমিস্ট করতে হয় । তবে বাচ্চা ভুমিস্ট হওয়ার পর এই পুরুষের স্থনে মায়েদের মত দুধ দেওয়া বা আনুসাঙ্গিক অন্যান্য কোন কিছুই করা সম্বভ নয়, যদিও হরমোন রিসার্চ অনুসারে পুরুষের স্থনে দুধ দেওানো সম্বভ, কিন্তু পুরুষের পুরুষত্ব থাকেনা বিদায় তা কখন ও অনুমতি দেওয়া হবেনা । যেমন গত বছর ইউকে তে ও এর বৈধতা দেওয়া হয়েছে – ( Thomas Trace Beatie ২০০২ সালে – তার পেটে সন্তান দেওয়া হয়েছিল – তিনির শ্রী জরায়ুর উর্বরতার কারণে বন্ধ্যাত্ত বরণ করেন, সে জন্য তার শ্রীর ডিমাবানু নিষিক্ত করে থমাসের পেটে ধারন করার জন্য দেওয়া হয় ) – তবে আধুনিক প্রযোক্তির কারণে পুরুষের পেটে সেই সন্তান কে না রেখে ও বায়োটিউবের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেওয়া সম্বভ এবং এর জন্য কোন পুরুষ বা মহিলা কারও গর্ভে সন্তান কে ধারন করতে হবেনা ( এই পদ্ধতি সব সময় খুভি ব্যায়বহুল থাকবে ) । তারপর ও গবেষণা গারে জেনেট্যিকেল ইঞ্জিনিয়ার ও বিজ্ঞানীরা নিষিক্ত ডিম্বাণুকে শক্ত সেলুলার তৈরি করার জন্য আপ্রান চেস্টা করিতেছেন, বা পরবর্তী প্রজন্মের বিজ্ঞানীরা অন্যান্য প্রানির ডিমের মত মানুষের ডিম্বাণু ও আদ্র পরিবেষে যে কেউ রাখতে পারবেন বলে মনে করা হইতেছে ( সাইন্স ট্যাক )
ফ্যালোপিয়ান নালি বা fallopian tube ঃ ফ্যালোপিয়ান নালি মূলত সিলিয়া বিশিষ্ট ভাজক টিশ্যু দ্বারা গঠিত দুটি নালি, যা স্তন্যপায়ী প্রাণীতে ডিম্বাশয় থেকে শুরু হয়ে ইউটেরো-টিউবাল জাংশন হয়ে জরায়ুতে গিয়ে শেষ হয়েছে ।
জরায়ু ঃ

ov-8

– জরায়ু ( womb ঊম্‌, ইউটেরাস্‌ বা গর্ভ থলি ) স্ত্রী প্রজনন তন্ত্রের একটি অন্যতম প্রধান অঙ্গ। জরায়ু একটি হরমোন প্রতিক্রিয়াশীল অঙ্গ। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন হরমোন ক্ষরণের দ্বারা এর কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রিত হয়। গর্ভধারণ কালে ফিটাস জরায়ুর অভ্যন্তরে বড়ো ও বিকশিত হয়। গর্ভধারণের সময় ছাড়া মহিলাদের জরায়ু আকারে মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার ব্যাস বিশিস্ট থাকে । জরায়ু একটি পেশিবহুল অঙ্গ। এর আকৃতি অনেকটা নাশপাতির মতো। জরায়ুকে চারটি পর্বে ভাগ করা যায়। যথা: ফান্ডাস (জরায়ু), কর্পাস, সারভিক্স, এবং অন্তঃস্থ অরফিস। পুরুষের শুক্র কীট যোনি পথ ধরে জরায়ুতে প্রবেশ করে, এরপর ডিম্বনালীতে অবস্থিত ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয়। শুক্রাণু দ্বারা ডিম্বাণু নিষিক্ত হয়ে ভ্রুণের শেষ স্থরে পৌঁছে । এরপর নিষিক্ত ডিম্বাণু জরায়ুতে প্রবেশ করে। এই অবস্থাকে নারীর গর্ভ-সঞ্চার কাল ধরা হয়। জরায়ুতে ভ্রূণটি পৌঁছার ৪/৫ দিনের মধ্যে, জরায়ুর অন্তঃপ্রাচীরের গায়ে যুক্ত হয়ে যায়। এক্ষেত্রে ভ্রূণ ও জরায়ুগাত্রের মধ্যে কিছু কোষ যুক্ত হয়ে ভ্রূণকে স্থিতি অবস্থায় রাখে। এই সংযুক্ত কোষরাশিকে অমরা গর্ভফুল বা প্লেসেন্টা বলে থাকি । এই গর্ভফূলের দ্বারা ভ্রূণ মাতৃদেহ থেকে খাদ্য পায় এবং ভ্রূণের দেহ থেকে অপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বেরিয়ে যায়। জরায়ুতে ভ্রূণটি বড় হতে থাকে। ভ্রূণের ক্রমাগত বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে জরায়ু বৃদ্ধি পায়। ভ্রূণ থেকে মানব শিশুতে পরিণত হতে প্রায় ২৮০ দিন সময় লাগে। ( -+ ৭ দিন ) । আর গর্ভফুল মায়ের জঠরে থাক্র সব কিছু সহ মায়ের রক্ত থেকে অক্সিজেন, অ্যামিনো এসিড, ভিটামিন এবং মিনারেল গ্রহণে সহায়তা করে। এটি শিশুর দেহ থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে শিশুকে সুস্থ রাখে।
অন্য দিকে যদি যৌন মিলন না হয় তখন মহিলাদের অভারি থেকে ডিম্ব পরিস্পুটিত না হয়ে জরায়ুর মধ্যে ম্রিত অবস্থায় চলে আসে এবং সেখানে প্রজেসটেরোন’ নামে এক প্রকার হরমোন নিঃসৃত হয়ে জরায়ুর বৃদ্ধি ও নিয়মিত মাসিকের সূত্রপাত ঘটায়। জরায়ুর ভেতরের গায়ে শ্লেষ্মা ঝিল্লির আবরণে ‘ইসট্রোজেন’ ও ‘প্রজেসটেরোনের’ সম্মিলিত ক্রিয়া শুরু হয়। সেই ঝিল্লির বিবর্তনের ফল ঋতুস্রাব। ইসট্রোজেন ও প্রজেসটেরোনের প্রভাবেই ২৮ দিন অন্তর চক্রাকারে পরিবর্তনের ফলে হয় নিয়মিত মাসিক ঋতুস্রাব হয়ে থাকে বা এর বাড়তি কমতির কারণে মহিলাদের ভিন্ন রকম মাসিক জনিত সমস্যা বা শ্রী রোগ জাতীয় অসুখ দেখা দেয় ।

 

২. সারভিক্স (Cervix)

ov-9

– সারভিক্স হল জরায়ুর নিচের অংশ যা যোনির উর্ধ্বাংশের সাথে যুক্ত থাকে। সারভিক্স বেলনাকার বা চোঙের মতন দেখতে হয়। সারভিক্সের উপবৃত্তাকার যে অংশ যোনির মধ্যে ঢুকে থাকে তাকে বলা হয় এক্টোসারভিক্স। এই অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩ সেমি. ও প্রস্থ প্রায় ২.৫ সেমি.। এক্টোসারভিক্সের একেবারে সম্মুখে অবস্থিত ছিদ্রকে সারভিক্সের বহিঃরন্ধ্র বলা হয় এবং জরায়ু থেকে শুরু করে বহিঃরন্ধ্র পর্যন্ত বিস্তৃত সারভিক্সের ভেতরের ফাঁকা নলের মত অংশকে বলা হয় সারভিকাল ক্যানাল। ব্যক্তিবিশেষের উপর নির্ভর করে এই ক্যানালের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ব্যাপক তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। যেসকল নারী স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে শিশুর জন্ম না দেন তাদের ক্ষেত্রে সারভিক্সের বহিঃরন্ধ্র খুব ক্ষুদ্র হয়, কিন্তু যারা স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে শিশুর জন্ম দিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে এই ছিদ্রের আকার অনেকটাই বড়। স্বাভাবিক প্রসবের সময় জরায়ুর সংকোচনের ফলে সারভিকাল ক্যানালের ব্যাস বৃদ্ধি পেয়ে ১০ সেমি. পর্যন্ত হতে পারে।
অন্যদিকে রজঃস্রাবের সময় সারভিক্সের বহিঃরন্ধ্র ও ক্যানাল একটু বেশি ফাঁকা হয়ে যায় রজঃস্রাবে সহায়তার জন্য। সারভিক্সের এই প্রসারণই ঋতুস্রাবের সময় অনেক মহিলার তলপেটে ব্যাথার অনুভব করেন । প্রথমবার স্বাভাবিক প্রসবের পর ঋতুস্রাবের সময় এই ব্যাথা সাধারণত আর হয় না, কারণ প্রসবের ফলে সারভিক্সের মুখ অনেকটাই স্থায়ীভাবে প্রসারিত হয়ে যায় সে জন্য নর্মাল সন্তান প্রসব একটি ভাল দিক
শ্রীর যৌনাঙ্গ বা এর কাজ কি বা কেন এত অনুভুতিশিল ? ঃ- ( এ নিয়ে এত বেশি আশ্চর্য হওয়ার কিছু নয় বরং গর্ভজাত সন্তান কিভাবে গড়ে উঠে বা জীবন ধারন করে, সেটাই আশ্চর্যের বিষয় )

 

বাহ্যিক যৌনাঙ্গঃ

ov-10
(১) যোনিমুখ বা যোনিদ্বার (Vulva): স্ত্রী জননাঙ্গের সবথেকে বাইরের অংশ এটি। সাধারণ পরিভাষায় অধিকাংশ সময়ই এই অংশকে যোনি বা vagina বলে উল্লেখ করা হলেও প্রকৃতপক্ষে যোনি হল স্ত্রী জননাঙ্গের একটি ভেতরের অংশ। এটি একটি ৩ ইঞ্চি (৮ সে.মি.) লম্বা চোঙ জাতীয়। এটি জরায়ুমুখ থেকে ভুল্বা (যোনিদ্বার) পর্যন্ত বিস্তৃত, যেখানে এটি দু’পায়ের ফাঁকে উন্মুক্ত হয়। এটি স্থিতিস্থাপক তাই সহজেই শিশ্ন অথবা শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা করে দিতে পারে। ভুলবা বা যোনিদ্বার গঠিত হয় বৃহদোষ্ঠ (labia majora), ক্ষুদ্রোষ্ঠ (labia minora), মন্স পিউবিস (mons pubis), ভগাঙ্কুর (clitoris), ভালভার ভেস্টিবিউল, মূত্রছিদ্র (external urethral orifice), যোনি রন্ধ্র (vaginal orifice) ইত্যাদি দিয়ে।
মন্স পিউবিস বা মন্স ভেনেরিস (mons pubis): ভালভা বা যোনিদ্বারের অগ্রভাগে পিউবিক হাড়ের উপর অবস্থিত ফ্যাটি টিস্যু সম্মৃদ্ধ নরম ঢিপির মত জায়গাটিকে বলা হয় মন্স পিউবিস বা মন্স ভেনেরিস। এটি যৌনসঙ্গমের সময় আঘাত থেকে পিউবিক হাড়কে রক্ষা করে। মন্স পিউবিস সাধারণত বয়ঃসন্ধির পর থেকে পিউবিক চুল বা যৌনকেশ দ্বারা আবৃত থাকে। এই যৌনকেশের পরিমান অনেক ক্ষেত্রেই বংশগতির উপর নির্ভর করে। মন্স পিউবিস আরও নিচে নেমে দুটি বৃহদোষ্ঠে ভাগ হয়ে যায়। ইস্ট্রোজেন নামের হরমোনের প্রভাবে বয়ঃসন্ধির পর থেকেই সাধারণত এই মন্স পিউবিস বাইরের দিকে ফুলে ওঠে।
বৃহদোষ্ঠ (Labia Majora): নাম থেকেই স্পষ্ট যে এটা ভালভা বা যোনিদ্বারের সব থেকে বাইরের মোরক বা “ওষ্ঠ” (lips)। ভালভার অগ্রভাগে মন্স পিউবিস থেকে শুরু করে ভালভার পশ্চাৎভাগে পেরিনিয়াম পর্যন্ত ফ্যাটি টিস্যু ও মসৃণ পেশি সমন্বিত স্ফীত ও নরম এই বৃহদোষ্ঠ দুভাগে ভাগ হয়ে যোনিদ্বার বা ভালাভার প্রায় বাকি সমস্ত অংশকে ঢেকে রাখে। বৃহদোষ্ঠের দুভাগের মাঝখানের চিড়কে বলা হয় pudendal চিড় বা খাজ। মন্স পিউবিসের মত সাধারণত বয়ঃসন্ধির পর থেকে বৃহদোষ্ঠও যৌনকেশ বা পিউবিক চুল দিয়ে ঢাকা থাকে, তবে যৌনকেশের পরিমানে তারতম্য থাকতে পারে। বৃহদোষ্ঠের বাইরের ত্বকের রঙ শরীরের বাকি অংশের মত বা তার থেকে একটু বেশি ঘন হতে পারে। বৃহদোষ্ঠে প্রচূর স্বেদ ও তৈল গ্রন্থি থাকে যাদের থেকে ঘাম ও তেল ক্ষরিত হয়। অনেক গবেষকের প্রস্তাব যে এই তেল ও ঘামের গন্ধ যৌনউদ্দিপনামূলক। বৃহদোষ্ঠ স্পর্শ ও চাপের প্রতি বেশ সংবেদনশীল, যা যৌন সঙ্গমের সময় আনন্দের একটি উৎস।
ক্ষুদ্রোষ্ঠ (Labia Minora): বৃহদোষ্ঠের মধ্যবর্তি খাঁজে পাতলা টিস্যু সমণ্বিত দুটি ক্ষুদ্রোষ্ঠ বা labia minora থাকে। এই ক্ষুদ্রোষ্ঠ সাধারণত ভাজ হয়ে তার মধ্যবর্তি স্থানে অবস্থিত মূত্রছিদ্র, যোনিরন্ধ্র এবং ভগাঙ্কুরকে আগলে রাখে। ব্যাক্তিবিশেষের উপর নির্ভর করে ক্ষুদ্রোষ্ঠের আকারের তারতম্য হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে এটা ছোট এবং বৃহদোষ্ঠের দ্বারা পুরো আবৃত থাকে, আবার অনেকের ক্ষেত্রের এর আকার অনেকটাই বড় যা বাইরে থেকেও দেখা যায়। এতে কোন কেশ থাকেনা কিন্তু সিবেসিয়াস গ্রন্থি থাকে যারা তেল জাতিয় পদার্থ ক্ষরণ করে। ক্ষুদ্রোষ্ঠ দুটি উপরের দিকে উঠে পরষ্পরের সাথে মিলিত হয়ে ভগাঙ্কুরকে ঢেকে রাখে। বৃহদোষ্ঠের মত ক্ষুদ্রোষ্ঠও স্পর্শ ও চাপের প্রতি বেশ সংবেদনশীল।
ভগাঙ্কুর (Clitoris): ভুলভা বা যোনিদ্বারেরে উপরের দিকে যেখানে ক্ষুদ্রোষ্ঠদ্বয় পরষ্পরের সাথে মিলিত হয় সেখানে ক্ষুদ্রোষ্ঠ দিয়ে ঢাকা অবস্থায় স্পঞ্জের মত টিস্যু দিয়ে তৈরি এটা একটা ছোট্টো, সাদাটে ও ডিম্বাকৃতি অঙ্গ যার একমাত্র কাজ যৌন আনন্দ প্রদান। বাইরে থেকে সাধারনত শুধু এর অগ্রভাগটাই দেখা যায়, কিন্তু আদপে এটা অনেকটা লম্বা। এটা ভেতরের দিকে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যোনিরন্ধ্রের দুপাশ দিয়ে নেমে ভালভার পশ্চাৎভাগে অবস্থিত পেরিনিয়ামের দিকে চলে গেছে। ভগাঙ্কুর অনেকটা পুরুষাঙ্গ বা পেনিসের মত এবং এর অগ্রভাগ একটি পাতলা চামড়া দিয়ে থাকে যাকে বলা হয় ভগাঙ্কুরের আবরক (clitoral hood)। যৌন উত্তেজনার সময় অতিরিক্ত রক্ত সঞ্চালনের ফলে ভগাঙ্কুর আকারে বৃদ্ধি পায় এবং এর উপরের আবরক ত্বক পেছনে চলে যায় যাতে এটা বাইরে থেকে সহজেই স্পর্শ করা যায়; এতে যৌন আনন্দ বেশি হয়। ভগাঙ্কুরের আকারও ব্যক্তি বিশেষের উপর নির্ভর করে। অনেকের ক্ষেত্রে এটা ছোট্ট, আবার অনেকের ক্ষেত্রে বেশ বড়, যা ওর উপরের আবরক ত্বক দ্বারা পুরো ঢাকা যায়না।
সতীচ্ছদ (Hymen):

ov-11

এটা মিউকাস মেমব্রেন দিয়ে গঠিত একটা পাতলা পর্দা যা যোনিরন্ধ্রকে ঘিরে থাকে অথবা আংশিকভাবে ঢেকে রাখে। সাধারণত সতীচ্ছদ অর্ধচন্দ্রাকৃতির, তবে তার ব্যতিক্রমও যথেষ্ট হয়। সতীচ্ছদের মধ্যবর্তী ছিদ্রের আকার সবার ক্ষেত্রে সমান হয়না, কারও ক্ষেত্রে বড় আবার কারও কারও ক্ষুদ্র হতে পারে। এই ছিদ্রের মাধ্যমেই ঋতুস্রাবের রক্ত ও অন্যান্য পদার্থ বেরিয়ে আসে। সতীচ্ছদ বা hymen কে নিয়ে বহু কূসংস্কার ছড়িয়ে রয়েছে। সতীচ্ছদের অনুপস্থিতিকে কূমারীত্ব হারানোর লক্ষন হিসেবে গন্য করা হয়। সাধারণ ধারনা এই যে প্রথমবার যৌনসঙ্গমের সময় সতীচ্ছদ ফেটে রক্ত বের হবে; আর যদি তা না হয় তার মানে কন্যা কূমারী নয় ( কিছু কিছু পুরাতন মহিলারা মনে করতেন ) কিন্তু এই ধারনা ঠিক নয়। প্রথমত যৌন সঙ্গমের ফলে সতীচ্ছদ নাও ছিড়তে পারে। যদি যৌনসঙ্গমের সময় সঠিকমাত্রায় লুব্রিকেশন (lubrication) হয় তবে সতীচ্ছদ ছিড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। দ্বিতীয়ত অনেকের সতীচ্ছদের মধ্যবর্তী ছিদ্র এমনিতেই বড় এবং সতীচ্ছদ এত স্থিতিস্থাপক হয় যে যৌনসঙ্গমের ফলে তার ফেটে যাওয়ার কোন সম্ভাবনাই থাকেনা। তৃতীয়ত সাইকেল চালানো, নৃত্য অনুশীলন, বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা, হস্তমৈথুন, ট্যাম্পুন ব্যবহার ইত্যাদির ফলেও সতীচ্ছদ ফেটে যেতে পারে। সুতরাং সতীচ্ছদের উপস্থিত বা অনুপস্থিতির উপর নির্ভর করে কখওনই কারুর কূমারীত্ব নির্ণয় করা সম্ভব নয় অথবা এই ধরণের ধারনা সম্পূর্ণ ভুল ও কুসঙ্কস্কার ।
যোনিরন্ধ্র (Vaginal opening): এটি যোনির প্রবেশমুখ, যা সতীচ্ছদ দিয়ে ঘেরা বা আংশিক ঢাকা থাকে। এর মাধ্যমেই ঋতুস্রাবের সময় রক্ত এবং যৌনমিলনের সময় পুরুষাঙ্গ যোনির ভেতরে প্রবেশ করে। এছাড়াও স্বাভাবিক প্রসবের সময় এই রন্ধ্রের মাধ্যমেই শিশু ভূমিষ্ঠ হয়।
স্তন গ্রন্থি (Mammary gland) –

ov-12

স্তনে অবস্থিত এই গ্রন্থি থেকে শিশুর পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় দুগ্ধ ক্ষরিত হয়। এটা বহিঃক্ষরা গ্রন্থি যা মূলত একধরনের পরিবর্তিত স্বেদ বা ঘর্ম গ্রন্থি। এই গ্রন্থির প্রধান অংশ হল অ্যালভিওলাই নামের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গহ্বর যাদের ভেতরের দেওয়ালে দুগ্ধ ক্ষরণকারী এপিথেলিয়াল কোষ থাকে। কিছু সংখ্যক করে অ্যালভিওলাই একত্রিত হয়ে এক একটি গুচ্ছের আকার ধারণ করে, যাদের বলা হয় লোবিউল। প্রতিটি লোবিউল আবার দুগ্ধউৎপাদক নালী বা laciferous duct এর মাধ্যমে স্তনবৃন্তের সাথে যুক্ত। অ্যালভিওলাইগুলিকে ঘিরে থাকে মায়োএপিথেলিয়াল কোষের আবরণ, যা পেশীর মত সংকুচিত বা প্রসারিত হতে সক্ষম। এই কোষগুলির সংকোচনের ফলেই অ্যালভিওলাই থেকে দুগ্ধ বেরিয়ে ল্যাসিফেরাস নালীর মাধ্যমে স্তনবৃন্ত পর্যন্ত পৌঁছায়। পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই স্তন গ্রন্থি বর্তমান, কিন্তু কেবল মহিলাদের ক্ষেত্রেই ডিম্বাশয় থেকে নিসৃত ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রভাবে বয়ঃসন্ধির পর থেকে এই গ্রন্থি বৃদ্ধি পায় এবং পরিণত হতে পারে। জন্মের সময় শিশুর কেবল ল্যাসিফেরাস নালীই বর্তমান থাকে। বয়ঃসন্ধির সময় ইস্ট্রোজেনের প্রভাবে এই নালী থেকে অ্যালভিওলাইয়ের আদিকোষ তৈরি হতে শুরু করে। কেবল গর্ভাবস্থাতেই ক্রমবর্ধমান ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের প্রভাবে প্রকৃত

দুগ্ধক্ষরণকারী অ্যালভিওলাই গঠিত হয়। এর সাথে সাথে স্তনে চর্বিবিশিষ্ঠ অ্যাডিপোজ টিস্যু ও রক্ত সঞ্চালন, উভয়ই বৃদ্ধি পায়। গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এবং প্রসবের প্রথম কয়েকদিন স্তন গ্রন্থি থেকে কলোস্ট্রাম নামের এক হলদে রঙের তরল ক্ষরিত হয় যা অ্যান্টিবডি সমৃদ্ধ হওয়ায় শিশুর রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। প্রকৃত দুগ্ধ ক্ষরণ শুরু হয় প্রসবের দিন কয়েক ঘন্টা পর থেকে যখন রক্তের প্রোজেস্টরন হরমোনের পরিমান কমে যায় এবং প্রোল্যাকটিন নামক হরমোনের আবির্ভাব হয়। স্থন গ্রন্থির বিভিন্ন কোষ খুব সহজেই উপযুক্ত হরমোনের প্রভাবে বৃদ্ধি পায় এবং বিভাজিত হয়ে নতুন কোষ তৈরি করতে পারে। যদি এই কোষের এই বৃদ্ধি ও বিভাজন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তবে তাকে ক্যান্সার বলা হয়। প্রায় সমস্ত রকমের স্তন ক্যান্সারের সূত্রপাত স্তন গ্রন্থির লোবিউল বা নালীগুলিতেই হয়।

এখন জেনে নিন যৌবনের সুচনা কিভাবে হয় বিজ্ঞান অনুসারে ঃ- ( বয়ঃসন্ধি ) Puberty

লিউকোরিয়া বা শ্বেতস্রাব (Vaginal discharge) স্ত্রীরোগ ( ১ম পর্ব ) —


 

বর্ণনা*****
যোনিপথে অতিরিক্ত সাদা তরল বা আধা তরল পদার্থ নির্গত হওয়াকে লিউকোরিয়া বা শ্বেতস্রাব বলে৷ গ্রাম অঞ্চলে অনেক মহিলা একে খিচ ভাঙা কিংবা ঋতুভাঙা বলে থাকেন ( সিলেটি ভাষায় অনেকে ধাতু ভাঙ্গা বলেন ) । মহিলাদের জীবনে কম বেশী সকলেই এর ভুক্ত ভোগী বিধায় প্রত্যেক মহিলা এবং তার স্বামী শ্বেতস্রাব নিয়ে কিছুটা ধারনা থাকা দরকার । মুলত স্বাভাবিক শ্বেতস্রাব কোন অসুখ নয় বরং ক্ষেত্র বিশেষ কিছুটা স্রাব নির্গত হওয়া শরীরের একটি স্বাভাবিক পরিশোধন প্রক্রিয়া মনে করতে পারেন এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা ঋতুচক্রের উপরও নির্ভরশীল ।
কিন্তু সাদা স্রাব বেশী দেখা দিলে জনন তন্ত্রের যে কোন অসুখ-বিসুখ অথবা জীবাণু আক্রমণের উপসর্গ মনে করতে হবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত মূল অসুখটি ভাল না হবে তথক্ষন পর্যন্ত শ্বেতস্রাব বা লিউকোরিয়া জাতীয় অসুখ টি কমার কথা নয় । তার আগে শ্রী প্রজননতন্ত্র সম্মন্ধে কিছুটা ধারনা থাকার প্রয়োজন ( যৌন রোগ পর্বে দেখুন )

 

 

শ্বেতস্রাব কে দুইটি ভাগে ভাগ ভাগ করতে পারেন

leu-5

১। স্বাভাবিক অথবা ফিজিওলজিক্যাল ঃ
স্বাভাবিক স্রাব যা র শ্লেষ্মা বেশির ভাগ উৎপাদিত হয় শ্লেষ্মা জরায়ু সারভিক্সের গ্রন্থি দ্বারা এবং বাদ বাকি উৎপাদিত হয় যোনিদেহ ও অন্যান্য গ্রন্থি থেকে , যা দেখতে স্বচ্ছ তরল শ্লেষ্মা যুক্ত । একজন সুস্থ মহিলার দৈনিক ১ থেকে ৪ মিঃলিঃ পরিমাণ ( আধা থেকে এক চামচ পরিমাণ ) শ্বেতস্রাব উৎপাদিত হয়ে থাকে । তবে এর পরিমাণ বেশী হতে পারে যদি দীর্ঘ স্থায়ী যৌনমিলন অথবা অতিরিক্ত যৌন উত্তেজনা বা আবেগ , ইস্ট্রোন ট্যাবলেট সেবন ( জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি ) মাসিক শুরুর ঠিক আগের দিনগুলোয়, ওভ্যলেশনের (ডিম্বস্ফোটন) সময় , মেনোপজের সময় ( মাসিক বন্ধ হওয়ার সময় ) অথবা পিউবারটি বা নতুন মাসিক শুরু হওয়ার আগে ঠিক তদ্রুপ কন্যাশিশুর জন্মের প্রথম দশ দিনের ভিতর ও  লিউকোরিয়া দেখা দিতে পারে ( মায়ের শরীরের অতিরিক্ত স্ত্রী-হরমোন থাকে, তার প্রভাবেই এমন হয় ) -গর্ভাবস্থায় মায়ের শ্রীরে ইস্ট্রোজেনের আধিক্যের জন্য বা ডেলিভারির পর দেড় মাস থেকে তিন মাস পর্যন্ত লিউকোরিয়া থাকতে পারে । মোট কথায় হরমোনের ভারসাম্য জনিত কারনেই তা হয়ে থাকে এবং তখন একে স্বাভাবিক শ্বেতস্রাব মনে করতে হবে ।

 

 

শ্বেতস্রাব দেখতে পাঁচ ধরনের ঃ

leu-22
ক. শ্লেষ্মাজাতীয়; খ. শ্লেষ্মা ও পুঁজমিশ্রিত; গ. পুঁজজাতীয়; ঘ. দুর্গন্ধযুক্ত এবং ঙ. শ্লেষ্মাবিহীন তরল জাতীয়।
যাই হউক যদি শ্বেতস্রাব দুর্গন্ধ যুক্ত ও ঘন হয় ( বাদামি হলুদ, লালচে, অথবা পিত্ত সবুজ ) তাহলে শ্রী জনন তন্রের যে কোন একটা অসুখ বা প্রদাহের কথা ভাবতে পারেন এবং তখন বুজার চেস্টা করবেন স্রাব যোনি বা যোনিপথ অথবা সারভিক্স ( জরায়ুর মুখ ) থেকে পতিত হচ্ছে তা বুজার । গঠন ভিত্তিক যোনি থেকে বের হওয়া  স্রাব এবং জরায়ুর মুখ থেকে বের হওয়া স্রাব মুলত দুটি দুই ধরণের ।

 

 

ক– হরমোনের ভারসাম্য জনিত কারনে ( ফিজিওলজিক্যাল ) ঃ

leu-23

অর্থাৎ হরমোনের আধিক্যতা , স্বল্পতা অথবা ভারসাম্য জনিত কারনে লিউকোরিয়া হতে পারে- মাসিক চক্রের সময় ইস্ট্রোজেন হরমোন বৃদ্ধির ফলে, মেনোপোজ বা মাসিক স্রাব বন্ধ হওয়ার সময় – প্রথম মাসিক স্রাব সূচনার সময় যৌন অঙ্গের বৃদ্ধি ফলে – অতিরিক্ত যৌন কামনা জাতীয় আবেগের ফলে বাথলিন গ্ল্যান্ড সমূহের নিঃসরণ বৃদ্ধি পেয়ে …।
তখন একজন সাধারণ চিকিৎসকের পক্ষে প্রাথমিক অবস্থায়হ বুজে উঠা কস্টকর, রিসার্চ অনুসারে দেখা যায়, হরমোন স্বল্পতার জন্য হলে সে সময় রোগীর শারীরিক অপুষ্টিজনিত অন্যান্য অসুখের লক্ষন দিয়ে থাকে । হরমোন জনিত কারনে হলে স্রাব দেখতে সাদা পিচ্ছিল জেলির মত অথবা দুদের মত এবং এতে কোন দুর্গন্ধ না থাকলেও রোগীর পরিপাক তন্ত্রের সমস্যা সহ ( বদহজম বা কুস্টকাঠিন্নতা ইত্যাদি ) প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রণ ইত্যাদির ভিটামিন সমূহের ঘাটতি বিদ্যমান থাকতে পারে । হরমোন জনিত বিষয়ে আর ও জানতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন

( https://helalkamaly.wordpress.com/ HYPERLINK )

 

 

খ— অভ্যাস গত , জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ও অতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক জাতীয় ঔষধ সেবনের ফলে ঃ

leu-12

যারা হস্তমৈথুন বা ম্যাস্টারবেশনে অভ্যস্ত তারা তাদের প্লেয়িং ইন্সট্রোমেন্টে সমুহ পরিষ্কার না করার কারনে অথবা কেথিটার, নল জাতী্য বা প্লাস্টিক অন্য কিছু ভেজিনার ভিতর ঢোকালে ( douching ) তার দ্বারা আঘাত জনিত ইনফ্লেমেশনের কারনে বা যারা বহুপুরুশ অথবা পরপুরুষের সাথে যৌন সহবাসে আশক্ত তাহারা এই অসুখটিতে একটু বেশী ভুক্ত ভুগি হয়ে থাকেন ।

সাবধানতা ঃ যারা ওড়াল সেক্স ক্রীড়া করেন তাদের বেলায় অবশ্যই তা থেকে বিরত থাকতে হবে – কেননা মুখের ভিতর বিশেষ করে জিহ্বা এবং দাঁতের গোড়ালির মধ্যে ফাঙ্গাই এবং প্যারাসাইট জীবাণু বেশী বসবাস করে বিধায় তা থেকে ও সংক্রামিত হতে পারে , তা ছাড়া যে কোন সুস্থ ব্যাক্তির পাকস্থলী ও কোলনের সঙ্কোচন-প্রসারনের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে ( পেটের কামড় জাতীয় অসুখ ) – বিপরীত দিকে আক্রান্ত মহিলা যদি দুধ দাতা মা থাকেন,  তাহলে তার শিশুকে বুকের দুধ দেওয়ার সময় অবশ্যই সতর্ক ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা উচিৎ ।
ঠিক তদ্রুপ জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির লাইগেশন বা তদ্রুপ অন্যান্য পদ্ধতি ব্যাবহারের ফলে অথবা যারা দীর্ঘ দিন এন্টি বায়োটিক জাতীয় ঔষধ সেবন অথবা করেন বা যাহারা বেশি চিনিযুক্ত খাবার খেয়ে থাকেন তাহারা লিউকোরিয়া জাতীয় অসুখে সব সময় ভুগতে পারেন ।
এ ছাড়া — শরিরের ইমিউন সিস্টেম বেশি দুর্বল যাদের  ( পুষ্টি জনিত ) তারা বিনা কারনে  আক্রান্ত হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয় —

 

 

২- প্যাথলজিক্যাল বা রোগজনিত কারণ ঃ- STDs

leu-9
কখন বোঝবেন অসুস্থতার কারণেই শ্বেতস্রাব হচ্ছে ?

যদি অতিরিক্ত স্রাব সহ , চুলকানী ,শ্বেতস্রাবের বর্ণের পরিবর্তন অথবা সঙ্গে রক্ত কিংবা পুঁজ থাকে, তলপেটে ব্যথা থাকে, জ্বর থাকে। রোগ জনিত স্রাবের গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে জনন তন্ত্রের যে কোন ধরণের ইনফেকশন, বিশেষ করে যৌন রোগের সংক্রামণ অথবা জনন তন্ত্রের অন্যান্য ত্রুটি গত অন্য যে কোন ধরণের একটা লক্ষন তবে রোগ জনিত কারনের মধ্যে ৯০% রোগী যৌন জীবাণুর ইনফেকশন জনিত কারনেই লিউকোরিয়ায় ভুগে থাকেন ।

 

লিউকোরিয়ার জন্য যে যে যৌন জীবাণু সবচেয়ে বেশী দায়ি তা নিম্নরূপ ঃ

ক – ফাঙ্গাই জাতীয় জীবাণুর ইনফেকশন ( Candida Albicans, গ্রামীণ ভাষায় দাদ জাতীয় অসুখ )ঃ

leu-25

জীবাণুটি টি শরীরের ভিজা বা সংকোচিত জায়গায় আক্রমণ করলেও মহিলাদের যোনি বা তার আশেপাশে আক্রমণ করে একটু বেশী এবং তা ছোঁয়াচে অসুখ হলেও সহবাসের ফলে সংক্রামিত হয় একটু বেশী অথবা যারা মেন্সট্রুয়েশনের সময় কাপড় ব্যাবহার করেন তা পরিষ্কার ও শুকনা না থাকলে অর্থাৎ পারিপারশ্বিক পরিচ্ছন্নতা বজায় না থাকলে এই জীবাণুটি ও সংক্রামিত হতে পারে এবং এই জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হলে স্রাব দেখতে ঘন, সাদা ও পনিরের মতো মনে হবে
মনে রাখবেন একবার যদি যোনি বা তার আশে পাশে এই জীবাণুটি আক্রমণ করে ( দাঁদের মত ) এবং তা পুরাতন হয়ে যায় তা হলে ঐ ঐ জায়গার স্টেইন রিমুভ করা যায়না বিধায় সারাজীবন এই বিশ্রী দাগ থেকেই যাবে । এশিয়ান দরিদ্র পরিবারে সমষ্টিগত আক্রমণ সবচেয়ে বেশী এবং জীবাণুটি যৌন রোগ হিসাবে চিহ্নিত ………………….

 

খ—— প্যারাসাইট ( Trichomonas Vaginalis )

leu-26
মহিলাদের ৮৫% লিউকরিয়া বা সাদা স্রাব জাতীয় অসুখের মুল কারনের মধ্যে ক্যানডিডিয়াসিস এবং ট্রাইকোমনাস এ দুটি জিবানুই সবচেয়ে বেশী দায়ি । বিস্তারিত নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে দেখুন ।
( https://helalkamaly.wordpress.com/candidiasis%E HYPERLINK )

 

গ——— – এছাড়া গার্ডনেরেলা ভ্যাজিনালিস এবং স্যালামাইডিয়া ব্যাক্টোরিয়ার দ্বারা সংক্রামিত হলে স্রাবের গন্ধ মাছের আঁশের গন্ধের মত মনে হবে এবং ইহা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষের মাধ্যমেই তা সংক্রামিত হয়ে থাকে আর ও বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন
( https://helalkamaly.wordpress.com/ HYPERLINK )

ঘ——– এবং ভ্যানারেল ডিজেজ জীবাণুর দ্বারা লিউকোরিয়া হলেও ভাল এন্টোবায়োটিক প্রয়োগের মাধ্যমে তা সেরে যায় – যেমন গনোরিয়া জীবাণুর দ্বারা হলে স্রাব দেখতে ধোয়াটে ও হলুদ এবং এর তেওমন কোনো উপসর্গ প্রথমে বুঝা যায়না , যা যৌন সহবাসে সংক্রামিত হয়ে থাকে । বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন
(https://helalkamaly.wordpress.com/ HYPERLINK )
সিফিলিস ( কোনো উপসর্গই থাকে না যা যৌন সহবাসে সংক্রামিত হয়ে থাকে ) , মাইকোপ্লাসমা হোমিসিন, ইউরিয়াপ্লাসমা ইউরিয়া লাইটিকাম, , হারপিস সিমপ্লেক্স, এইডস ইত্যাদি জীবাণুর কারণে ও হতে পারে ।

 

 

৩— জনন তন্ত্রের অন্যান্য অসুখ ও দুর্ঘটনার কারনে ঃ

leu-11
ক—— আঘাত ঃ যোনি অথবা জরায়ুর মুখে আঘাতের কারনে বিশেষ করে সন্তান ভুমিস্ট হওয়ার সময় বা গর্ভপাত করালে অথবা জ্বোর পূর্বক যৌনতা বা দর্শন , অঙ্গ প্রতিস্থাপন ইত্যাদির কারনে ।
খ——- জনন তন্ত্রের অন্যান্য অসুখের কারনে, যেমন ঃ মূত্রনালি, কিডনি, মুত্রপতের ইনফেকশন (UTI) , সারভাইকাল ক্যান্সার (Cervical cancer), যোনি পথের সিস্ট (Vaginal cyst), ডিম্বাশয়ের সিস্ট (Ovarian cyst), পেল্ভিক ইনফ্লামেটোরি ডিজিজ (Pelvic inflammatory disease, (PID প্লাসেন্টা প্রিভিয়া (Placenta previa) , সারভিসাইটিস (Cervicitis), এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্ল্যাসিয়া (Endometrial hyperplasia) , পেলভিক অরগান প্রোলেপ্স (Pelvic organ prolapse), ভালভোডাইনিয়া (Vulvodynia) , পেলভিক ফিস্টুলা (Pelvic fistula) ইত্যাদি অসুখের কারনে ……। ( বিস্তারিত পরবর্তী পর্ব সমুহে তুলে ধরার চেস্টা করব ।

 

 

লক্ষন ঃ

Lower-back pain is one of the top three reasons that Americans go to the doctor. But the solution can be a DIY project.
 

স্রাবের ধরন ঃ বেশি পরিমাণ নিঃসরণের ফলে পরনের কাপড়, পেটিকোট, পাজামা বা প্যান্টি বেশি ভিজে যায়।– নিঃসরণের সাথে যোনিপথ ও আশেপাশের অংশ চুলকায় — নিঃসরণের সাথে দুর্গন্ধ বের হয়– নিঃসরণ স্বচ্ছ সাদা, তরল ও পিচ্ছিলের পরিবর্তে বাদামী, সবুজ, হলুদ বা ঘন সাদা থকথকে অথবা — ফেনা যুক্ত সাদা বা চাল ধোয়া পানির মতো তরল পদার্থ বের হবে ।
অন্যান্য লক্ষনের মধ্যে ঃ যোনিতে, তলপেটে এবং পিঠে ব্যথা হতে পারে- বিশেষ করে কোমরের পিছন দিকে , পায়ে ঊরুর পেশীতে নিচের দিকে দাবিত ব্যাথা পরিলক্ষিত হতে পারে ও সেই সাথে অস্বস্থি অনুভব হবে অথবা মাংসপেশীর খিঁচুনি/টান (Cramps and spasms) হতে পারে এবং শরীরের মৃদু জ্বর অনুভব হবে – কারও বেলায় অন্ত্র ও পাকস্থলী জনিত অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে ।
জনন তন্ত্ররের সমস্যার মধ্যে যা দেখা দিতে পারে ঃ- -যোনি বা যৌনাঙ্গের বাইরে ব্যথানুভ, জ্বালাপোড়া ভাব থাকা সহ যোনি ফোলে যাওয়া অথবা প্রস্রাব করার সময় জ্বালা পোড়া সহ যৌনাঙ্গে নালীর মধ্যে জ্বলা অনুভূত হতে পারে- এ ছাড়া ও সহবাসের সময় ব্যাথা , গর্ভকালীন ব্যথা (Pain during pregnancy), ঋতুস্রাবের আগে বা পরে বা কারও কারও বেলায় স্পর্শে রক্তপাত (জরায়ুর মুখে ঘা বা প্রদাহ থাকলে ), জরায়ু, বা ডিম্বনালিতে সিস্ট, টিউমার অথবা সেই অঙ্গের ক্যানসার জনিত কারনে ও তা দেখা দিয়ে থাকে ।

 

শ্বেতস্রাবে কি কি থাকে বা সে সময় শরীরে দুর্বলতা বৃদ্ধি পায় কেন ঃ

leu-y-1
ইহা জরায়ু ও যোনিপথের সাধারণ নিঃসরণ, এতে মরা কোষ ও কিছু ভাল ব্যাকটেরিয়া , হরমোন, তৈল ও সুগার সহ বিভিন্ন ধরণের এসিড বিদ্যমান থাকে। স্বাভাবিক শ্বেতস্রাবে যা থাকে , Water. Pyridine. Squalene. Urea. Lactic acid, Complex alcohols and glycols, Ketones & aldehydes, Lactobacillus & Bifidobacterium.Epithelial cells & leukocytes ইত্যাদি ।
অস্বাভাবিক সাদাস্রাব শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ও আমিষ বের করে দেয়। এ সময়ে পুষ্টি, বিশ্রাম ও সচেতনতার অভাবে শরীর ধীরে ধীরে দুর্বল হয় অথবা হরমোন জনিত ভারসাম্যতার কারনে যৌন অনীহা সহ মানসিক অনেক ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে ।

 

ডায়াগনোসিস ঃ

leu-28
শারীরিক পরক্ষা হিসাবে , একজন সম্মানিত শ্রী -রোগ বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসক প্রথমেই রোগের ইতিহাস ভাল করে জানার চেস্টা করবেন এবং তখন আপনার চিকিৎসক কে কোন কিছু লুকিয়ে রাখা বা লজ্জা মনে করা মোঠেই উচিৎ নয় । চাইলে দায়িত্ব পারাপ্ত চিকিৎসক আপনার যোনি বা যোনি মুখ অথবা জরায়ুর মুখ সহ জনন তন্ত্রের সাথে যুক্ত অঙ্গ সমুহ পরিক্ষা নিরীক্ষা করতে পারেন এবং সে জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা ভিজোডাইলেশন ( ভুলবা বা যোনি মুখ ওপেন করা ) বা বিমানোইয়েল করে দেখতে পারেন । বিবাহিত থাকলে যৌন সহবাস সংক্রান্ত কোন সমস্যা থাকলে তাও আপনার চিকিৎসক কে খোলে বলা উচিৎ ।
ডায়াগনোসিস হিসাবে – ট্রাকোমনসিস জাতীয় জীবাণুর জন্য পি সি আর , রেপিড টেস্ট অথবা হুইপ টেস্ট ( “whiff”) যে কোন একটা পরিক্ষা করা ভাল ।
প্রদাহ অথবা জীবাণু জনিত মনে করলে সাদা স্রাবের নমুনা পরিক্ষা অথবা কালচার করে নিশ্চিত হয়ে ঔষধ সেবন করলে শতভাগ নিশ্চিত ২১ দিনের ভিতর সুস্থ হওয়ার ( জীবাণু জনিত হলে অবশ্যই স্বামী- শ্রী উভয়য়ের ঔষধ সেবন করতে হবে )
হরমোন জনিত ভারসাম্যতার কারনে মনে করলে হরমোন ভ্যালেন্সিং টেস্ট অথবা মাদার হরমোন টেস্ট করে ( DHEA ) সঠিক কারন খোঁজে বের করতে পারেন । এ ছাড়া রোগের ইতিহাস অন্য রোগের সাথে সম্পর্ক যুক্ত মনে করলে আল্ট্রাসাউন্ড, সিটি অথবা এম আর আই করার উপদেশ ও দিতে পারেন । তবে হরমোন জনিত গোলাযোগের কারনে হলে মাসিক স্রাব জনিত অন্যান্য লক্ষনের সাথে ডিসমেনোয়ার ইতিহাস থাকবেই ।

 

 

চিকিৎসা ঃ

leu-29
অসুখটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবেই বেশী হয়ে থাকে বিধায় সে দিকে একটু বেশী খেয়াল রাখতে হবে বিশেষ করে নিরাপদ পানি ব্যবহার, মাসিকের সময় পরিষ্কার জীবাণুমুক্ত কাপড়/প্যাড ব্যবহার, প্রতি ৬ ঘণ্টা পর পর অবশ্যই কাপড়/প্যাড পরিবর্তন ও জীবাণুমক্ত করা। মাসিকের পর ব্যবহার্য কাপড় পুনরায় ব্যবহার না করা ভালো তবে করতে হলে তা গরম পানিতে জীবাণুমুক্ত করে ভালো করে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে । কোন অবস্তাহতেই আদ্র ভেজা কাপড় বা প্যাড ব্যাবহার করবেন না ।
জীবাণুর দ্বারা সক্রামিত লিউকোরিয়ার মধ্যে ৮০%-৯০% ই ফাঙ্গাই ( Candida Albicans ) এবং ট্রাইকোমনাস ( Trichomonas ) জীবাণু বেশী দায়ী এবং বাদ বাকি অন্যান্য জীবাণু, হরমোনের ভারসাম্যতা ও শ্রী- প্রজনন তন্ত্রের অন্যান্য অসুখ বিসুখ অথবা বদ অভ্যাসের কারনে হয়ে থাকে – তাই অসুখটি কমাতে হলে অবশ্যই এর মূল কারন খোঁজে বের করে তার সঠিক চিকিৎসা করতে হবে নতুবা সারা জীবন ঔষধ সেবন করলেও পূর্ণ সুস্থ হওয়ার কথা নয় । আরেকটি কথা লিউকোরিয়ার দ্বারা আক্রান্ত মহিলা যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে ঔষধ সেবন না করাই ভাল অথবা বিশেষজ্ঞের পরামর্ষ ছাড়া ঔষধ সেবন করবেন না – তবে অনুরুধ থাকবে সে সময় গর্ভ ধারন না করার ।

 

১- ক্যান্ডিডা ফাঙ্গাস ( Candida Albicans ) ঃ

leu-31
লক্ষন হিসাবে প্রচুর চুলকানি থাকবে এবং জীবাণুটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং অপরিষ্কার কাপড়-চোপড় ব্যাভারেই বেশী সংক্রামিত হয় ) – ফাঙ্গাস দ্বারা নিশ্চিত হলে মুখে সেবনের ট্যাবলেট হিসাবে Fluconazole 150mg একক ডোজের সাথে ৭ দিন ভ্যাজিনাল সাপজেটোরি ট্যাবলেট Nystatin ( যোনির ভিত ঢোকিয়ে রাখতে হয় ) অথবা ক্রিম ব্যাবহার করতে হবে । বিকল্প হিসাবে Miconazole, Clotrimazole, Terconazole যে কোন গ্রোফের ঔষধ ব্যাবহার করতে পারেন —
অসুখটি পুরাতন হলে Fluconazole ট্যাবলেট প্রতি সপ্তায় একটি করে ৬ সতাহ সেবন করতে হবে । বিবাহিত থাকলে রোগীর স্বামীকেও প্রতিষেধক হিসাবে Fluconazole 150mg একক ডোজ সেবন করতে হবে । ( বিঃদ্রঃ ঔষধ গুলো আপনার হাউস ফিজিশিয়ানের পরামর্ষে সেবন করা উচিৎ ) আরও বিস্তারিত জানতে বিস্তারিত চর্ম রোগ পর্বে দেখুন ।

 

২- প্রটোজোয়া অথবা ট্রাইকোমনাস (Trichomonas ) জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হলে –

leu-3
Metronidazole 200 mg orally ট্যাবলেট একটা করে দিনে ৩ বার ৭ দিন অথবা Clindamycin 300mg ট্যাবলেট একটা করে দিনে ২ বার ৭ দিন সেবন সহ সহ ভ্যাজিনাল  ক্রিম বা ট্যাবলেট  Ornidazole/Candid v1 or v3 ব্যাবহার করলে পারাথমিক অবস্থায় পূর্ণ ভাল হওয়ার কথা ।

অথবা Clotrimazole 100 mg এক সপ্তাহ ব্যাবহার করলে ট্রাইকোমনাস জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত রোগী পূর্ণ সুস্থ হওয়ার কথা । অথবা বিকল্প হিসাবে Tinidazole, Secnidazole গ্রোফের ঔষধ ও সেবন করতে পারেন এবং অসুখটি ২১ দিন পর থাকার কথা নয় । বিস্তারিত যৌন রোগ পর্বে দেখুন । ট্রাইকোমনাস দ্বারা আক্রান্ত জীবাণুর চিকিৎসায় এন্টিবায়োটিক প্রয়োগে জীবাণু ধ্বংস না হয়ে হয়ে অসুখটি বৃদ্ধি পাবে ।  একি সাথে চিনি ও ময়দা জাতীয় খাবার কম খাওয়া উচিৎ –
মনে রাখবেন স্বাভাবিক শ্বেতস্রাবে ল্যাক্টোবিলাই ব্যাসিলাস ব্যাক্টোরিয়া বেশী থাকে এবং এর এসডিক পি এইচ ব্যালেন্স ৪-৪.৫ থাকে বিধায় ইহা যোনি ও তার আশেপাশের অঙ্গকে ক্ষতিকারক ব্যাক্টোরিয়া থেকে মুক্ত রাখে এবং একি সাথে যোনিপথের কোষের স্বাভাবিকতা রক্ষা করা সহ যৌনমিলনের সময় লুব্রিকেসনের কাজ করে বা পুরুষের শুক্রাণু কে নিউট্রোলাইজ ও দীর্ঘায়ু করতে সাহায্য করে ( ৮ ঘন্টা ) । সে জন্য সেই স্থানে ডিওডোরান্ট জাতীয় স্প্রে অথবা ক্যামিক্যাল জাতীয় সুগন্ধির ব্যবহার ইত্যাদি না করাই ভাল ।

 

 

৩- যৌন জীবাণুর দ্বারা সংক্রামিত হলে – STD diseases ( গনোরিয়া, সিফিলিস, স্যালামিডিয়া ইত্যাদি জীবাণু )

g-017
রিসার্চ অনুসারে, শতকরা ৯% মহিলারা এই জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকেন । মনে রাখবেন জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পর জীবাণু সংক্রামণ কমে যাওয়ার পরও বেশ কিছুদিন পর্যন্ত লিউকোরিয়ার ধারবাহিকতা চলতে থাকে এবং ধীরে ধীরে তা কমে যায় যদি পুনরায় জীবাণু আক্রান্ত না হয়ে থাকেন ।
সাধারণ ডোজ হিসাবে Azithromycin 20 mg/kg/day orally একক ডোজ হিসাবে ৩ দিন ই যথেষ্ট –
সিডিসি ফরমোলা অনুযায়ী ( ২০১৬ বি ফেব )
For the treatment of chancroid, the CDC recommends antibiotic therapy from 1 of 4 equally efficacious agents, as follows—
Azithromycin – 1 g orally (PO) as a single dose
Ceftriaxone – 250 mg intramuscularly as a single dose
Erythromycin base – 500 mg PO 3 times daily for 7 days
Ciprofloxacin – 500 mg PO twice daily for 3 days
Single-dose treatment has the advantage of observed compliance.
রুগী গর্ভবতী হলে Ceftriaxone ড্রাগস ব্যাবহারের সুপারিশ করা হয়ে থাকে ।

 

 

৪- হরমোনের ভারসাম্যজনিত কারনে হলে ঃ (ATROPHIC VAGINITIS )

leu-32
ইস্ট্রোন হরমোনের অভাব জনিত কারনে হলে, যা রোগীর লক্ষন হিসাবে , যোনি শুষ্কতা , ডিসমেনোরিয়া, প্রস্রাবের জ্বালাযন্ত্রণা ইত্যাদি মেনোপোজ , বারে বারে গর্ভপাত অথবা যারা বেশী সন্তান জন্ম দেন তাদের বেলায় এ জাতীয় সমস্যা বিদ্যমান থাকবে- বিস্তারিত শ্রী- রোগ পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন )
hormone-replacement therapy by mouth
ট্যাবলেট Ethinyl estradiol 0.01 mg একটি করে ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত সেবন করতে হবে এবং সাথে ইস্ট্রোজেন প্রেসারি অথবা ইস্ট্রোজেন ভ্যাজিনাল ক্রিম কয়েক সপ্তাহ নিয়মিত ব্যাবহার করতে হবে । যার রেজাল্ট পেতে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় ।
মনে রাখবেন ইস্ট্রোন ও অন্যান্য হরমোন এবং এন্ড্রমেট্রিয়েল গ্ল্যান্ড সমুহের নিঃসরণ বৃদ্ধির কারনে হলে , সে জন্য এর বিপরীত ঔষধ সেবন না করাই ভাল বরং উক্ত রোগী বিবাহিত না থাকলে তাকে বিবাহ দেওয়া উচিৎ অথবা উপবাস জাতীয় ডায়েট করে কিছু দিন অভ্যস্ত হলে তা এমনিতেই সেরে যায় । তারপর ও যদি হরমোন নিঃসরণ বৃদ্ধি পায় তাহলে হরমোন নিরোধক ঔষধ সেবন করতে পারেন হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্ষে । রোগী যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন এবং হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যায় তাহলে সাইকোলজিক্যাল অন্যান্য অসুখ সহ হিষ্টিরিয়া বা দাম্পত্য জীবনের অনেক ব্যাক্তিগত কারন জড়িত থাকতে পারে ।

 

৫- অন্যান্য অসুখ বিসুখ ঃ
অতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক্স বা জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন , ডায়াবেটিস এবং রক্ত শুন্যতা অথবা মূত্রনালি, কিডনি, মুত্রপতের ইনফেকশন (UTI) , সারভাইকাল ক্যান্সার (Cervical cancer), যোনি পথের সিস্ট (Vaginal cyst), ডিম্বাশয়ের সিস্ট (Ovarian cyst), পেল্ভিক ইনফ্লামেটোরি ডিজিজ (Pelvic inflammatory disease, (PID প্লাসেন্টা প্রিভিয়া (Placenta previa) , সারভিসাইটিস (Cervicitis), এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্ল্যাসিয়া (Endometrial hyperplasia) , পেলভিক অরগান প্রোলেপ্স (Pelvic organ prolapse), ভালভোডাইনিয়া (Vulvodynia) , পেলভিক ফিস্টুলা (Pelvic fistula) ইত্যাদি থাকলে তার সঠিক ব্যাবস্থা অবলম্বন করতে হবে নতুবা সাদা স্রাবের সমস্যা লেগেই থাকবে !

 

৬- শারীরিক ও পুষ্টি জনিত অভাবে অসুখটি না সারলে যা করতে হবে ঃ

leu-33
যদি অসুখটি দীর্ঘ দিনের হয় তাহলে অবশ্যই শারীরিক পুস্টিগত অভাব দেখা দিবে এবং তখন পুস্টিগত সমস্যা দুর করতে না পারলে অনেকের বেলায় অসুখটি থেকে পূর্ণ মুক্তি পাওয়া সম্বভ হবেনা অথবা শ্রী জনন তন্ত্রের অন্যান্য জঠিলতা থেকেই যাবে ।
রিসার্চ অনুসারে দেখা যায় মিহি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কম খাওয়া ( বিশেষ করে চিনি জাতীয় ) এবং একি সাথে প্রোটিন জাতীয় খাবার বৃদ্ধি করা উচিৎ ( দই, চাকা দুধ ইত্যাদি ) .  দই সেবনে ল্যাক্টোব্যাসিলাস বেশী পাওয়া যায় বিধায় তা সেবন করা সবচেয়ে উত্তম এবং সেই সাথে অন্ত্রে কোলনের সহনশীলতা বৃদ্ধিকারক ভিটামিন বি, সি জাতীয় খাবার ও বেশ ফলদায়ক । ( বি- 50-200 মিলিগ্রাম / দিনে, সি 50 মিগ্রা / দিনে ) + ভিটামিন এ এবং ই ও জিঙ্ক জাতীয় খাবার নিয়মিত একমাস সেবন করতে পারলে পুস্টিগত কারনে যে লিউকোরিয়ার সমস্যা দেখা দেয় তা আর থাকার কথা নয় ।

 

৭- প্রাকৃতিক ভাবে বৈজ্ঞানিক রিসার্চ অনুসারে যে সকল স্বীকৃত ভেষজ যা সহযোগী হিসাবে লিউকোরিয়ার জন্য ব্যাবহার করতে পারেন

 

( প্রাথমিক পর্যায়ের লিউকোরিয়া রোগীদের জন্য অন্যান্য ঔষধের প্রয়োজন নাও হতে পারে যদি মারাত্মক যৌন জীবাণুর দ্বারা সংক্রামিত না হয়ে থাকেন )

১- দই ঃ

leu-34
এতে উচ্চ পরিমানে প্রোটেন এবং ক্যালসিয়াম বিদ্যমান । যা কোলনের সহিনশলতা বজায় রাখতে বিশেষ একটি গুরত্ত পূর্ণ ভেষজ । যোনির ক্ষতিকারক ব্যাক্টোরিয়া ধ্বংস করতে ( ট্রাইকোমনাস অথবা pathogens such as Candida and Gardnerella ) পরীক্ষিত ভাবেই ভাল একটি ভেষজ খাবার তা সকলের ই জানা । গবেষণা অনুসারে দেখা যায় দই ব্যাবহারে শ্বেতস্রাবের পি এইচ এর মাত্রা যাদের ৪.৭ এর অধিক তাদের বেলায় মাত্র এক সপ্তায় তা নামিয়ে ৪.১ নিয়ে আসে , ফলাফল অনুসারে দেখা যায় দই সাদা স্রাবের মাক্রোইনভায়রোমেন্ট পি এইচ এর মাত্রা রিস্টোর করতে খুবি গুরুত্ব পূর্ণ একটি উপাদান ।
নিয়ম ঃ এক চামচ দই এক টুকরা পরিষ্কার সাদা সুতির কাপড় অথবা তূলাতে ভিজিয়ে তা যোনির ভিতরের দেওয়ালে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন এবং এর পর তা ঠান্ডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন – দিনে দুইবার — যা টারকোমনাসিস ক্রিমের মতই কার্যকর এবং মাত্র তিন দিনের ভিতর ই সুন্দর একটা রেজাল্ট পেতে পারেন ।

 

২- অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার ঃ
অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার একটা শক্তিশালী এন্টসেপ্টিক তা বলার অপেক্ষা রাখেনা । তাই যোনিতে এর ব্যাবহারে স্রাবের এসিডিক ব্যাল্যান্সের ভারসাম্যতা বজায় রাখা সহ ক্ষতিকারক ব্যাক্টোরিয়ার বংশ বৃদ্ধি প্রতিহত করে – বা দুর্গন্ধ প্রতিরোধক , ইহাই প্রমাণিত ।
নিয়ম ঃ এক কাপ সমপরিমাণ অরগানিক অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার এক বাকেট ( বালতি ) উষ্ণ গরমম পানিতে মিশিয়ে তাথে ১০ মিনিট বসে থাকুন প্রতিদিন একবার – তিন দিন পর অবশ্যই ভাল একটা রেজাল্ট পাওয়ার কথা ।
৩- রসুন ( Garlic ) ঃ
ভেষজ হিসাবে রসুন একটি শক্তিশালী এন্টি-ভাইরাল , মাইক্রোবিয়েল এবং এন্টি-ব্যাক্টোরিয়াল এজেন্ট তা সকলের ই জানা – সে জন্য অবশ্যলিকোরিয়ার জন্য ভাল একটি ভেষজ ঔষধ তা বলার অপেক্ষা রাখেনা ।
নিয়ম ঃ ২ ক্লোভ রসুন এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন সয়ালে খালি পেটে পান করুন – এভাবে এক সপ্তাহ পান করার পর খুব সুন্দর একটা রেজাল্ট পাওয়ার কথা — অথবা এক ক্লোভ রসুন কে মিহি করে রাতে ঘুমাবার সময় লাগিয়ে পরদিন সকালে তা ঠান্ডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন – আবার ২ দিন পর ঠিক একি ভাবে ব্যাবহার করুন – এভাবে তিন বার করার পর অবশ্যই ভাল একটা রেজাল্ট পাবেন বিশেষ করে ক্যান্ডিসাস এল্বিকান দ্বারা আক্রান্ত জীবাণুর জন্য অন্যান্য যে কোন ঔষধের চাইতে ভাল ফল দায়ক ( সতর্কবাণী – জোনের ভিত ক্ষত বা প্রদাহ থাকলে তা ব্যাবহার না করা ভাল, তখন ইহা তীব্র যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে )

৪- চা পাতার তৈল ( Tea Tree Oil ) ঃ

leu-35
সারা পৃথিবী জুড়েই চা পাতার তৈল একটি সমাদৃত এন্টিসেপ্টিক, এন্টি-মাইক্রোবিয়েল এবং এন্টি ইনফ্লেমেশন ভেষজ হিসাবে খুবি সমাদৃত । বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ান মহিলাদের কাছে অন্য যে কন ঔষধের চাইতে ইহা বেশী সমাদৃত ।
রিসার্চ অনুসারে বর্তমানে ভাইরাল যোনি ও জরায়ুর ক্যানসারে ও ব্যাবহারের কথা বলা হয়েছে । গবেষণা অনুসারে দেখা যায় টি ট্রি অয়েল ব্যাবহারে ব্যাক্টোরিয়া ও ফাঙ্গাই জাতীয় স্রাবের দুর্গন্ধ দুর করতে বাজারের অনেক ঔষধের চাইতেও ভাল কার্যকর যার গুনাগুণ ৯০% কার্যকর ।
নিয়ম ঃ ৫ ফোটা টি ট্রি অয়েল এক কাপ পানিতে মিশিয়ে দিনে দুইবার যোনির ভিতরে ব্যাবহার করুন ( অনুরুধ থাকবে ভাল মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানি দেখে টি ট্রি অয়েল কেনার )
মেথি-পাতা ঃ
মেথি পাতা শুধু মাত্র এন্টি ব্যাক্টোরিয়াল হিসাবে কার্যকর বিধায় এন্টি-ফাংলা এবং আন্টি ভাইরালে তেমন কাজ করেন বিধায় জীবাণু জাতীয় লিউকোরিয়ায় তা ব্যাবহার করতে পারেন ।

নিম পাতা ঃ
নিম পাতা ও একটি মধ্যম ধরণের এন্টি-ভাইরাল এবং এন্টি ফাঙ্গাল প্রদাহ রোধক ভেষজ বিধায় লিউকোরিয়াতে ব্যাবহার করতে পারেন —- ( বিদ্রঃ যদি ও অনেক ভেষজ চিকিৎসক আরও অনেক ভেষজ কে লিউকোরিয়া প্রতিরোধক হিসাবে বর্ণনা করেছেন বা ভাল হয় বলে দাবি করেছেন কিন্তু আন্তর্জাতিক মেডিসিন প্লানেটের   রিসার্চ অনুসারে উপরের ভেষজ ই সবচেয়ে বেশী কার্যকর বলে উল্লখ করা হয়েছে )

 

 

প্রতিকারের জন্য যে কয়েকটি বিষয় সুনির্দিষ্টভাবে গুরুত্ব দেয়া দরকার তা হচ্ছে- ( সংগৃহীত )

leu-4
১. মেয়েদের পরিমিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার। প্রতিদিন আমিষ জাতীয় খাবার যেমন মাছ, মাংস, ডিম, খিচুড়ি, ডাল ও ভিটামিন যুক্ত খাবার যেমন শাকসব্জি, ফলমূল বিশেষ করে টকফল এবং প্রচুর পরিমাণ পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে পুষ্টিকর খাবার মানে দামি খাবার নয় বরং সহজ প্রাপ্য ও খাদ্যগুণ সমৃদ্ধ খাবার।

২. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বিশেষ করে নিরাপদ পানি ব্যবহার, মাসিকের সময় পরিষ্কার জীবাণুমুক্ত কাপড়/প্যাড ব্যবহার, প্রতি ৬ ঘণ্টা পর পর অবশ্যই কাপড়/প্যাড পরিবর্তন ও জীবাণুমক্ত করা। মাসিকের পর ব্যবহার্য কাপড় পুনরায় ব্যবহার না করা ভালো তবে করতে হলে তা গরম পানিতে জীবাণুমুক্ত করে ভালো করে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।

৩. সংক্রমণ প্রতিরোধে সহবাসের ক্ষেত্রে কনডম ব্যবহার করা ভালো। আজকাল মেয়েদের কনডমও পাওয়া যায়। সহবাসের পর যথাসম্ভব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া বাঞ্ছনীয়।

৪. জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পুরুষদের দায়িত্বশীল হতে হবে। পুরুষরা যদি কনডম ব্যবহার করেন তাহলে নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি/সুঁই ব্যবহার কমে যাবে এবং সাদাস্রাব জনিত সমস্যাও কমে যাবে। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি/সুঁই ব্যবহারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

৫. জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি/সুঁই বা এন্টিবায়োটিক ওষুধ সেবনকালে একটু বেশি পুষ্টিকর খাবার যেমন- দুধ, দৈ, ছানা, পায়েস, সেমাই ও খিচুড়ি খেতে হবে।

৬. সাদাস্রাবের পরিমাণ, রং, ঘনত্ব ও গন্ধ অস্বাভাবিক মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র যেমন ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, স্যাটেলাইট ক্লিনিক বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হবে এবং চিকিৎসকের উপদেশ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে ছড়ায় এমন সংক্রমণের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী বা যৌনসঙ্গীর একসঙ্গে চিকিৎসা নেয়া দরকার, নতুবা পুনরায় সংক্রমিত হতে পারে।
. সাদাস্রাবের সমস্যা মোটেই বংশগত নয় এবং চিকিৎসা করালে পরিপূর্ণ নিরাময় সম্ভব।
৮. মেয়েদের নিজেদের শরীরের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। নিজের জন্য কিছুটা সময় রাখতে হবে। নিজের ভালোমন্দ নিজেকে বুঝতে হবে। তাহলে সুস্থ থাকা অনেকখানি সহজ হবে।

Version Info & Created By Dr Helal Kamaly ( MPH ) Hon PhD Public Health and Med Sci  
Prof Linda J. Vorvick, MD, Medical Director, MEDEX Northwest Division of Physician Assistant Studies, University of Washington, School of Medicine; Susan Storck, MD, FACOG, Chief, Eastside Department of Obstetrics and Gynecology, Group Health Cooperative of Puget Sound, Bellevue, Washington; Clinical Teaching Faculty, Department of Obstetrics and Gynecology, University of Washington School of Medicine. Also reviewed by David Zieve, MD, MHA, Medical Director, A.D.A.M., Inc.

গনোরিয়া এবং সুপার গনোরিয়া অথবা প্রমেহ রোগ- যৌন রোগ পর্ব -৯ ( GC or SG– STD Part-9 )


প্রমেহ বা গনোরিয়া রোগ  নিয়ে কিছু ভুল ধারনা ও তথ্য  ঃ

g-03
প্রতিবছর প্রায় ৪৪৮ মিলিওন লোক যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়, এর মধ্যে প্রায় ৭৮ থেকে ৮৮ মিলিওন গনোরিয়ার রোগী  । যার মধ্যে অল্পবয়স্কা তরুণ- তরুণীদের এই রোগে আক্রান্ত হবার হার সবচেয়ে বেশি । মেডিক্যাল রিসার্চ অনুসারে  দুর্ভাগ্য বশত  যদি নিশেরিয়া গনোরি জীবাণু এন্টিবায়োটিক রেসিস্টেন্স ক্ষ্যামতা ধংস করে ফেলে তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী বার্ষিক এক কোটি মানুষ প্রাণ হারাতে পারে !  যাকে সুপার গনোরিয়া ( super Neisseria )  বলা হচ্ছে । ইতিমধ্যে  ইউকে, অ্যামেরিকা ও জাপানে  এই ব্যাক্টোরিয়ার আক্রমণে বেশ কয়েকজন রোগী মৃত্যুবরণ ও  করেছেন  এবং  সেই স্থরের  কার্যকর এন্টিবায়োটিক এখন ও আবিষ্কৃত হয়নি !
মনে রাখবেন গনোরিয়া অসুখে আক্রান্ত হওয়ার পর  উপযোক্ত  এন্টিবায়োটিক প্রয়োগে তা সাথে সাথে ৯৯% নির্মূল করা সম্বভ কিন্তু যদি কোন কারনে যথাযথ চিকিৎসা না করেন তাহলে নিশেরিয়া গনোরি ব্যাক্টোরিয়ার সাথে আর অন্যান্য গ্রোফের ব্যাক্টোরিয়া যোগ হয়ে শেষ পর্যন্ত এন্টিবডি রেসিস্ট্যান্স ক্ষ্যামতা নস্ট করে ফেলে এবং তখন  সরবোচ্চ এন্টিবায়োটিক ব্যাবহার করে ও তেমন ভাল রিজাল্ট নাও পেতে পারেন বা এর পরিনিতি খুব ভয়াবহ  ও মারাত্মক আকার ধারন করতে পারে ।
g-06
সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়  অবস্থান অনুসারে যিনি  গনরিয়ায় আক্রান্ত তিনি  রেড  লাইট  জোনের অন্তর্ভুক্ত ( পতিতাবাস ) যতক্ষণ পর্যন্ত নিশেরিয়া গনোরি ন্যাগেটিভ না হবে !   ব্যাক্তি চরিত্র  ও সামাজিক অবস্থান অনুসারে  অবশ্যই আক্রান্ত  ব্যাক্তি ( স্বামী/ শ্রী )  যে কোন একজন ( যার দ্বারা সংক্রামিত হয় )   যৌন লোভী অথবা  খারাপ চরিত্রের  ব্যাক্তি , তা কাউকে বলার অপেক্ষা রাখেনা  ।  মুলত অসুখটি  অবৈধ যৌন মিলনের একটা  বাস্থব বহিঃপ্রকাশ  । তারপর ও প্রথমবার গনোরিয়ায়  আক্রান্ত হলে  সাধারণ এন্টিবায়োটিক সেবনে খুব দ্রুত সেরেই যায় কিন্তু দ্বিতীয় বার আক্রান্ত হলে উচ্চ  স্তরের এন্টবায়োটিক ছাড়া তখন আর কাজ করেনা কিন্তু তৃতীয় বার আক্রান্ত হলে উচ্চ  স্তরের এন্টবায়োটিক অনেক দেরিতে কাজ করলে ও ৮০% বেলায় যৌন অক্ষমতা দেখা দিয়ে থাকে , অর্থাৎ বারে বারে ভুল করে নিজের ইচ্ছায় নিজের ক্ষতি ঢেকে আনবেন । সবশেষে যখন আর কোন এন্টিবায়োটিক কাজ করবেনা তখন এই নিশেরিয়া গনোরি ব্যাক্টোরিয়াটি সুপার নিশেরিয়া গনোরিতে রূপান্তরিত হতে পারে । যা সমাজ দেশ ও জাতীর জন্য এইডসের চাইতে ও ভয়ঙ্কর –  HO41 ।
এ ছাড়া   রক্ত পরিক্ষা করে নিশেরিয়া গনোরি পজেটিভ হলে  উচ্চ  ক্ষ্যামতা সম্পন্ন এন্টিবায়োটিক ছাড়া অন্যান্য শাস্রিয়  বা পদ্ধতিগত চিকিৎসা কাজ করেনা ( বিশ্ব স্বাস্থ্য ) এবং সে সময় যে কোন চিকিৎসক রোগীকে জীবাণু ধ্বংসকারী এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ না করে অন্যান্য  সনাতন পদ্ধতির যে কোন অপ্রমাণিত ঔষধ প্রয়োগ করা ও বেআইনি ( সি ডি সি ) বা  অমানবিক ।  তার পর ও কীভাবে এন্টিবায়োটিক ছাড়া অন্যান্য সাস্রিয় চিকিৎসকরা গনোরিয়া ভাল করার কথা বলে থাকেন আমার বুজতে বেশ কষ্ট হয়  । আর তাই যদি সত্যি হয় তাহলে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করার কি ই বা প্রয়োজন ছিল গরীব রাষ্ট্র সমূহের ?
মেডিক্যাল জার্নালের তথ্য মতে যতটুকুই দেখেছি,  মুলত গনোরিয়া বা প্রমেহ রোগের অসুখের  মত লক্ষন থাকলে ও আসলে তা নিশেরিয়া গনোরি ব্যাক্টোরিয়ার দ্বারা সংক্রামিত অসুখ  নয় ( অর্থাৎ গনোরিয়া নয় ) অন্য অসুখ এবং তা শরীরের এন্টিবডির ক্ষ্যামতা বৃদ্ধি করে অসুখটি থেকে অনেকে মুক্তি পেয়ে থাকেন এবং তখন  রোগিরা বুজে থাকেন তার গনোরিয়া  রোগ হয়েছিল । তাই আধুনিক বৈজ্ঞানিক যুগে  সবাই এসব ধ্যান ধারনা   থেকে বেরিয়ে আসা উচিৎ । ( সেক্রেট অব মেডিক্যাল জার্নাল –  )
গনোরিয়া (Gonorrhea ) কি এবং কীভাবে সংক্রামিত হয় ঃ
g-07
গনোরিয়া  হচ্ছে একটি  যৌনবাহিত রোগ  ( Neisseria gonorrhoeae )  যা নিশেরিয়া গনোরি নামক জীবাণু এই রোগের সৃষ্টি করে । আমাদের গ্রামীণ ভাষায় একে  প্রমেহ রোগ  বলে থাকেন  অনেকে ।
প্রকৃত পক্ষে এটি একটি জীবাণুবাহিত রোগ, যা   নিশেরিয়া গনোরি  জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত  ব্যাক্তির সাথে যোনি বা পায়ুপথে মিলন , ওরাল  বা মুখমেহন যৌন মিলনের   মাধ্যমে এক দেহ থেকে অন্য সুস্থ দেহে  সংক্রামিত হয়ে থাকে । এ ছাড়া যারা সেক্স টয় একে অন্যকে শেয়ার করেন অথবা অনেক সময় আক্রান্ত ব্যাক্তির  গোফন অঙ্গ স্পর্শ করার কারনে আঙ্গুলের নুখ থেকে চুখের  পাতায় ও সংক্রামিত হতে পারে  (  touching the private parts and then the eyes) । মনে রাখবেন   চুম্বন, হাত ধরা, গোসল করা, টাওাল, কাপ, টয়লেট সিট  ইত্যাদি থেকে  নিশেরিয়া গনোরি  জীবাণুর  বিস্তার লাভ করে না  অথবা ইহা   বংশ পরম্পরায় সংক্রমিত হয় না।  –
জীবাণু সংক্রামিত হওয়ার পর ২ থেকে ২১ দিনের ভিতর  পুরুষের  মূত্রনালী,  মহিলাদের যোনি ও যোনি পথ ,সমকামীদের বেলায়  পায়ুপথ এবং মুখমেহন যৌন মিলন কারিদের  গলায় নিশেরিয়া গনোরি  ক্ষতের সৃষ্টি করে  এবং পরবর্তীতে সঠিক এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ না করলে  যৌনাঙ্গের অন্যান্য অঙ্গ আক্রান্ত হতে  থাকে এবং অসুখটি তৃতীয় পর্যায়ে চলে গেলে   সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া অনেকটা  সুস্থ নাও হতে পারেন   ।
রিসার্চ ঃ গনোরিয়ায় আক্রান্ত মহিলার সাথে একবার যৌনকর্ম করলে পুরুষলোকের এই রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা ২০% বেশী হলেও আক্রান্ত পুরুষের সাথে একবার যৌনমিলনে একজন মহিলার এই রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি প্রায় ৬০-৮০% । বিপরীত দিকে সমকামী পুরুষের বেলায় তা  ৯১%  বেশী । এ ছাড়া  গনোরিয়ায়  আক্রান্ত মহিলাদের   জীবাণুটি সুপ্ত অবস্থায় বেশ কিছু দিন  লুকিয়ে থাকতে পারে বিধায় পুরুষের চাইতে মহিলাদের একটু দেরিতে লক্ষন দেখা দেয়  ।
সুপার গনোরিয়া ঃ ( Gonorrhea HO41 )
g-1
সর্ব প্রথম ২০১১ সালে ৩১ বছর বয়সী জাপানী একজন পতিতার শরীরের এই ব্যাক্টোরিয়াটি ধরা পরে এবং পরবর্তীতে তাকে উপযোক্ত এন্টিবায়োটিক দিয়ে ও রক্ষা করা সম্বভ হয়নি – অর্থাৎ গনোরিয়া চিকিৎসার সর্বশেষ এন্টিবায়োটিক  ড্রাগস ceftriaxone এবং  azithromycin যদি কোন কারন বশত কাজ না করে তখন তাকেই সুপার গনোরিয়া ( HO41) বলা হয় এবং যদি কোন কারন বশত উক্ত সুপার নিশেরিয়া গনোরি অন্য সুস্থ দেহে প্রবেশ করে সে ও সমপর্যায়ে আক্রান্ত হতে পারে । অসুখটির  নতুন কোন ঔষধ এখন ও বাহির হয়নি ।  ( journal Antimicrobial Agents and Chemotherapy ) –
সে জন্য নতুন এই যৌন রোগটি যদি কোন কারনে সংক্রামণ বৃদ্ধি পায় তাহলে অনেক  চিকিৎসা বিজ্ঞানীর আশঙ্কা , এইডসের চাইতে ও ভয়ানক রুপ নিতে পারে ।  সর্বশেষ তথ্য অনুসারে দেখা যায় যে সব অঞ্চলে পুরুষ সমকামীর সংখ্যা বেশী সেই সব অঞ্ছলেই এই জীবাণুটির সংক্রামণ বেশী  । সে জন্য জাপান,  ইউকে, অস্ট্রেলিয়া ও অ্যামেরিকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সমুহ সব সময় সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
( http://www.cdc.gov/std/gonorrhea/arg/b88-feb-2005.pdf )
গনোরিয়া রোগের লক্ষণসমূহ ঃ
g-010
সুপ্তিকাল : রোগাক্রান্ত সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সঙ্গে দৈহিক মিলনের পর ৩ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এ রোগের প্রকাশ ঘটে। সাধারণত পুরুষের ক্ষেত্রে মূত্রপথের সামনের অংশে জীবাণু সংক্রমণ শুরু করে এবং মহিলাদের যোনি  ও যোনি নালিতে প্রথম সংক্রমণ শুরু হয় । ক্ষেত্র বিশেষ অনেকের বেলায় স্বাভাবিক জ্বালা যন্ত্রণা ও সামান্য শ্লেষ্মা যুক্ত পানি  ছাড়া কয়েকদিন আর কোন লক্ষন দেখা নাও দিতে পারে ( বিশেষ করে মহিলাদের বেলায় ) কিন্তু যদি জীবাণুটি একটিভ থাকে তাহলে ২৭ দিন পরে ৫৯ দিনের আগে অবশ্যই নিচের লক্ষন সমুহ দেখা দিবে । তখন জীবাণুটি দ্রুত জরায়ুর মুখ, ডিম্বাশয়য়, ডিম্ব নালী , প্রেস্টেট গ্ল্যান্ড, মুত্র থলি ইত্যাদি সহ সারা শরীরে ছড়িয়ে পরতে পারে ।
মহিলাদের ক্ষেত্রে যে সব লক্ষন দেখা দিতে পারে  ঃ
g-011
⦁ যোনিপথে অস্বাভাবিক নিঃসরণ (সচরাচর, সাদা, সবুজ কিংবা হলুদ) সহ হালকা চুলকানি দেখা দিয়ে থাকে । – যৌনাঙ্গ সংক্রমণের কারণে যোনির ওষ্ঠে লাল, দগদগে ঘা হয় যা দেখতে লালা অথবা হলুদ বর্ণের । – প্রস্রাবের তীব্র ইচ্ছা থাকতে পারে। প্রস্রাবে যন্ত্রণা হয়। – যোনি বড় হয়ে ফুলে যাওয়া বা যোনির মুখ খুল লে সাদা স্রাব পতিত হওয়া   এবং যৌন  মিলনে খুব কষ্ট অথবা অনীহা বৃদ্ধি পাওয়া অশ অনেক ধরণের লক্ষন থাকতে পারে ।  সেই সাথে  সামান্য জ্বর, ম্যাজম্যাজ ভাব  প্রায় দেখা দিতে পারে।  ( তবে  যাদের শরীরের ইমিউনিটি শক্তি বেশী তাদের বেলায় (   ৩০% )    প্রাথমিক উপসর্গ ছাড়াই জীবাণুর বংশ বৃদ্ধি বাড়তে থাকে )
বিঃদ্রঃ ( উক্ত লক্ষন সমুহ মহিলাদের গনোরিয়া জাতীয় অসুখ ছাড়া ও অন্য যে কোন জীবাণু অথবা মুত্র থলির প্রদাহ, ভ্যাজিনাল ইনফেকশন ইত্যাদি কারনে ও দেখা দিতে পারে– তবে,  যদি বিগত ৩ সপ্তাহের ভিতরে  স্বামী শ্রী  যে কারও অবৈধ যৌন মিলনের ইতিহাস থাকে তাহলে যৌন জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্বাভনাই বেশী বিধায় সাথে সাথে রক্ত ও প্রস্রাব পরিক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া উচিৎ – বিস্তারিত মহিলাদের সুখ দুঃখ পর্বে দেখুন  )
 মহিলাদের বেলায় যারা দীর্ঘদিন গনোরিয়ার দ্বারা আক্রান্ত অথবা সঠিক চিকিৎসা না করালে যে সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে ঃ ( সাধারণত ৫৯ দিনে পর ) 
g-013
প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া, ব্যথা ছাড়াও মূত্রাশয়ের প্রদাহ হতে পারে ।  ডিম্ববাহী নালীতে প্রদাহ ,  বার্থোলিন গ্রন্থির প্রদাহ সহ তলপেটে চিন চিন ব্যথা । – ডিম্ববাহী নালী, ডিম্বাশ্বয় কিংবা তলপেটের মধ্যে ফোঁড়া হতে পারে। মাসিক অনিয়মিত হয় এবং তীব্র ব্যথা হয় অথবা গুরতর ক্ষেত্রে রক্তপাত হতে পারে । পায়ুপথের মিলন  থেকে কিংবা নিজের সংক্রমিত যোনি থেকে মলদ্বারে সংক্রমণ হতে পারে এবং পরবর্তীতে  মলনালী পথে নিঃসরণ এবং রক্তক্ষরণ হতে পারে।  ওড়াল যৌনতার  কারণে মুখ থেকে গলার ভিতর সংক্রমণ ও পরে গাঁ  হতে পারে অথবা অসাবধানতা বশত আঙ্গুলের নুখ থেকে জীবাণু  চুখের ভিতর সংক্রামিত হয়ে সেখানে ক্ষতের  সৃষ্টি করতে পারে ( যদি ও তা খুব কম ক্ষেত্রে দেখা যায় ) ।
দীর্ঘদিন সংক্রমণের কারণে অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ ( হাঁটু বা গোড়ালিতে পুঁজ জমে গিঁরা ফুলে যেতে পারে যা  বাতব্যথার মতো উপসর্গ )  ত্বকে ক্ষত, সেপটিসেমিয়া, মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হতে পারে।  ইনফেকশন কমানো না গেলে  অথবা সঠিক চিকিৎসা না হলে এই রোগের কারণে যৌনাঙ্গ সিথিল হয়ে যেতে পারে। ডিম্বনালির ছিদ্রপথ বন্ধ হয়ে সন্তানধারণের ক্ষমতা হারাতে পারে । মোট কথায়  চিরস্থায়ী যৌন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মনে রাখবেন দীর্ঘ স্থায়ী গনোরিয়া জাতীয় অসুখে ৭০% বেলায়  সিফিলিস, ক্যান্ডিডাস বা অন্যান্য যৌন রোগ  ও এর সাথে জড়িত থাকে এবং সেকেন্ডারি পর্যায়ে আক্রান্ত মহিলারা যৌন সংক্রামক  রেড লাইট  জোনের  অন্তর্ভুক্ত ( যৌন রেড লাইট  জোন  বলতে বুজায় যে সকল অঞ্চলে  পতিতা ও খদ্দরের বসবাস  ) বিধায় সেইফ ম্যাথডে ( কনডম )  যৌন মিলন করলেও সম্পূর্ণ নিরাপদ বলা ঠিক নয়  ।
পুরুষের ক্ষেত্রে যে সকল  উপসর্গ  দেখা দিতে পারে ঃ
g-4
⦁ সাধারণত বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যাক্তর সাথে যৌন মিলনের ২ থেকে ১০ দিন পর রোগের উপসর্গ দেখা দেয় এবং সবচেয়ে বেশী  প্রথম অবস্তায় লিঙ্গের  সম্মুখভাগেই  সংক্রমণ ঘটে। বারবার প্রস্রাবের ইচ্ছা করে। মূত্রনালীতে প্রদাহের কারণে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা করে।  লিঙ্গপথে রস নিঃসৃত হয় যা যৌনাঙ্গের সংক্রমণের ফলে এ রস তৈরি হয়। প্রথমে পানির মতো থাকে। পরে ঘন, সবুজাভ-হলুদ হয় বা পুরুষাঙ্গের মাথায় পুঁজ জাতীয় পদার্থ লেগে থাকতে দেখা যায়। ৭০%  বেলায় প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগে পুরুষাঙ্গের গায়ে কোনো ঘা বা ক্ষত দেখা না দিলেও  হাত দিয়ে ধরলে হালকা ব্যথা অনুভূত হয় এবং  কিছুদিন পর রোগের উপসর্গ  কমে যায়। এর মানে রোগটি ভালো হওয়া নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি রূপ লাভ করতে পারে বলে ধরে নিতে হবে।
g-018
সমকামীরা পায়ুপথে যৌনসঙ্গম করলে পায়ুপথে সংক্রমণ হতে পারে। মলনালীতে তীব্র ব্যথা হয় এবং রসে ভিজে যায়। যারা ওড়াল যৌনতা করেন তাদের  মুখে সংক্রমণ তথা ঘা সৃষ্টি বা অনেকের  খাদ্য নালীতে ও ঘা ছড়িয়ে পরে ।
বিঃদ্রঃ ( উক্ত লক্ষন সমুহ পুরুষদের বেলায়  গনোরিয়া জাতীয় অসুখ ছাড়া ও অন্য যে কোন জীবাণু অথবা মুত্র নালী ও থলির প্রদাহ সহ  অন্যান্য  যে কোন  কারনে ও দেখা দিতে পারে– তবে যদি এ সময় অবৈধ যৌন মিলন করার ইতিহাস থাকে  তাহলে যৌন রোগের সন্দেহ  করা উচিৎ বা সে জন্য প্রথমেই প্রস্রাব  পরিক্ষা করে  তার দ্বারা আক্রান্ত কিনা নিশ্চিত হওয়া ভাল  বিস্তারিত পুরুষের  সুখ দুঃখ পর্বে দেখুন  )
পুরুষদের  বেলায় যারা দীর্ঘদিন গনোরিয়ার দ্বারা আক্রান্ত অথবা সঠিক চিকিৎসা না করালে যে সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে ঃ ( সাধারণত ২৮  দিনে পর )
g-11
মূত্রনালীপথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়ে প্রস্রাব ঠিকমতো বেরিয়ে আসতে পারে না। ফলে কিডনিতে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে এবং সেই সাথে লিঙ্গের মাতা দিয়ে পুঁজের মত স্রাব বৃদ্ধি পাবে বা হালকা রক্ত আস তে  পারে ।   অণ্ডকোষ ফুলে যাওয়া,  বেদনাদায়ক বা ঘন মূত্রত্যাগের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া, শুক্রনালি, এপিডাইমিস আক্রমণ করা সহ লিঙ্গের স্থানীয়  স্নায়ু সমূহকে আক্রান্ত করে ধ্বজ ভঙ্গের মত মারাত্মক অসুখের জন্ম দিতে  পারে ( মনে রাখবেন যদি কোন কারনে লিঙ্গের স্নায়ু  তন্ত্র  সমূহে ক্ষতের সৃষ্টি করে  করে তাহলে পরবর্তীতে যৌন উক্তেজনা ফিরে পাওয়া খুব কষ্ট সাধ্য ব্যাপার  ) অথবা শুক্রাণু উৎপাদন কমে  গিয়ে ফলে পুরুষ বন্ধাত্তের সৃষ্টি করতে পারে  ।
g-014
এনাল সমকামীদের বেলায় পায়ূ পথের  চুলকানি, অস্বস্তি, রক্তপাত, বা স্রাব. বৃদ্ধি পেয়ে অন্যান্য কঠিন  রোগের উপসর্গ দেখা দিতে পারে ।  দীর্ঘদিনের সংক্রমণের কারণে ( বিশেষ করে বছর খানেক পর )  অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ ( হাটু বা অন্যান্য সদ্ধিস্থলে ব্যাথা করে, ফুলে ওঠে  ) , ত্বকে ক্ষত, সেপটিসেমিয়া, মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হতে পারে। (DGI) এবং সেকেন্ডারি পর্যায়ে আক্রান্ত পুরুষরা  যৌন সংক্রামক  রেড এলারট জোনের  অন্তর্ভুক্ত ( যৌন রেড এলারট জোন  বলতে বুজায় যে সকল অঞ্চলে  যৌন কর্মীদের  বসবাস  ) বিধায় সেইফ ম্যাথডে ( কনডম )  যৌন মিলন করলেও সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকা সম্বভ নাও হতে পারে   ।
গর্ভবতীদের গনোরিয়া হলে যে সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে ঃ
g-10
সাধারণত পুরাতন গনোরিয়া রোগীদের ৫৬% বেলায় ৩ মাসের  ভিতরই গর্ভপাত হয়ে থাকে । তারপর ও যদি গর্ভপাত না হয় তাহলে পরবর্তীতে সময়ের আগে বাচ্চা প্রসব হওয়ার সম্বাভনাই বেশী , বিশেষ করে জরায়ুর প্লাসেন্টা  সময়ের আগে  চিড়ে গিয়ে প্লায়সেন্টার ভিতরের  ফ্লুইড শুকিয়ে যেতে পারে এবং তখন জরায়ুর ভিতরেই শিশুর মৃত্যু হয় , আর যদি তা নয় তাহলে  খুব জরুরী অবস্থায় সিজারিয়ান অপারেশন  ছাড়া মা এবং শিশুকে রক্ষা করা সম্বভ হয়না   ।  ১% বেলায় নিশেরিয়া গনোরি ডিম্ববাহী নালীতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে পারে এবং এ কারণে মহিলার সারা জীবনের জন্য বন্ধ্যাত্ব ঘটতে পারে কিংবা গর্ভ সঞ্চারিত হলে তা  জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ হওয়ার সম্বাভনা বেশী ।
গর্ভাবস্থায় মহিলা গনোরিয়াতে আক্রান্ত হলে শিশু জন্মের সময়ে মায়ের যোনি থেকে তার চোখে সংক্রমণ হতে পারে। সে সময় সাথে সাথে  শিশুকে  সঠিক চিকিৎসা না করলে শিশু অপথাল্মিয়া নিওন্যাটারাম (Opthalmia neonataram) নামক চোখের প্রদাহ নিয়ে জন্ম নিতে পারে যার মধ্যে ৩০%  শিশুর স্থায়ী  অন্ধ হওয়ার সম্বাভনা আছে ।
রোগ নির্ণয় :
g-016
সাধারণত সম্মানিত চিকিৎসকরা রোগীর বিস্তারিত ইতিহাস শোনার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকেন । তারপর  ও উপরের লক্ষন সমুহ দেখা দিলে  নিজে নিজেই যে কোন ভাল প্যাথলজিস্ট দ্বারা  মুত্র এবং লিঙ্গ বা যোনির নিঃসৃত পদার্থ পরিক্ষা করে  শতভাগ নিশ্চিত হতে  পারেন  ।
বিশেষ করে যদি  আক্রান্ত ব্যাক্তি  বা তার সহধর্মিণীর  অবৈধ যৌন মিলন করার ইতিহাস থাকে অথবা সন্দেহ হয় তাহলে অবশ্যই আগেভাগেই পরিক্ষা করা ভাল । যদিও  সেইফ ম্যাথডে  ( কনডম ) যৌন মিলন করলে এবং ওড়াল বা হিটার সেক্সুয়েল যে কোন ধরণের যৌন পদ্ধতি অনুসরণ না করলে  গনোরিয়া জীবাণু  সংক্রামিত হওয়ার কথা নয় । অথবা এর আগে  অথিতে অন্যান্য কোন  যৌন সংক্রামক জীবাণুর দ্বারা সংক্রামিত হওয়ার  ইতিহাস  না থাকলে গনোরিয়া জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার কোন কারন নেই বা গনোরিয়ার দ্বারা সংক্রামিত হওয়ার কথা নয়  ।
সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে খুব সহজেই জেনে নিতে পারেন নিশেরিয়া গনোরি পজেটিভ কি-না ?
নিউক্লিক এসিড এমপ্লিফিকেশন  টেস্ট Nucleic acid amplification tests (NAAT) ঃ সাধারনত ৫ মিলি প্রস্রাব এর নমুনা  থেকে নিশেরিয়া গনোরির উপস্থিতি আছে কিনা তা নির্ধারণ করা হয় এবং এর  জন্য ২৪/৭২ ঘন্টা সময়এর প্রয়োজন ।
গনোরিয়া কালচার টেস্ট ( Gonorrhea culture ) ঃ পুরুষের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের রাস্তা থেকে নিঃসরিত পুঁজ বা পদার্থ এবং নারীর ক্ষেত্রে মূত্রনালি ও জরায়ুর মুখ থেকে  নিঃসরিত পদার্থ , সমকামীদের বেলায় পায়ুপথের নিঃসরিত পদার্থ অথবা মুখে ঘা থাকলে সেখানের  নিঃসরিত পদার্থ  ল্যাব্রোটারিতে নিয়ে কালচার ও সেনসিটিভিটি পরিক্ষা করে নিশেরিয়া গনোরির উপস্থিতি আছে কিনা তা নির্ধারণ করা হয় ।
এ ছাড়া অন্য কোন অসুখের বা জীবাণুর সন্দেহ থাকলে  ( স্যালামাইডিয়া, সিফিলিস , ক্যান্ডিডাস ইত্যাদি ) আপনার চিকিৎসক আরও অনেক ধরণের পরিক্ষা নিরীক্ষার কথা বলতে পারেন । তবে সাধারণ গনোরিয়া হয়েছে কিনা তা উপরের পরিক্ষা থেকেই শত ভাগ নিশ্চিত হতে পারেন । USPSTF

চিকিৎসা ঃ  ( WHO STI guidelines suggest )

g-017
প্রাথমিক ভাবে ( প্রথম স্থরের )  নিশেরিয়া গনোরির উপস্থিতি থাকলে নিম্নের যে একটি এন্টিবায়োটিক সেবনে সুস্থ  হওয়ার কথা
Cipro® XR 500 mg a single dose, or  Levaquin® 500 mg a single dose, or  Tequin® 400 mg a single dose; Doxycycline 100 mg 2–3 times a day for 10–14 days, or  Zithromax® (azithromycin) 1.0 gm a single dose, or   Zithromax® Z-pak® (azithromycin) — 500mg on day 1, followed by 1 tab (250mg) once a day for 4 more days
মনে রাখবেন ঃ  আগেকার দিনের এন্টিবায়োটিক্স এখন আর তেমন কাজ করেনা !  নিচের ঔষধ সমুহ রেজিস্টার্ড চিকিৎসক ছাড়া সেবন করা আইনগত অবৈধ ?  স্বামী শ্রী উভয়েই এক সাথে  ঔষধ  সেবন করা উচিৎ  … জীবাণু সংক্রামিত হউক বা না হউক ! ঔষধ সেবনের ১ সপ্তাহ পর্যন্ত যৌন মিলন  না করা ভাল  ! আপনার চিকিৎসকের দেওয়া পূর্ণ এন্টিবায়োটিক্স অবশ্যই সেবন করে যেতে হবে এবং এলারজি জাতীয় সমস্যা থাকলে তাও আপনার চিকিৎসক কে অবহিত করবেন এবং দ্বিতীয়বার আর যাতে সংক্রামিত না হন সে দিকে খেয়াল রাখা উচিৎ ।
 ( প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে হয়, বিশেষ করে বাংলাদেশ তথা এশিয়ান দেশ সমুহে ৯০% রোগিরা সঠিক জীবাণুর কারন না খুঁজে গনোরিয়ার মত রোগের লক্ষন দেখা দিলে চুখ মুজেই  উপরের এন্টিবায়োটিক সমুহ সেবন করে থাকেন যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের আইন অনুসারে মোঠেই ঠিক নয় ।  লক্ষনের উপর ভিত্তি করে উপরের ঔষধ সেবনে ৯০% গনোরিয়া রোগী সুস্থ  হলেও  ১০% রোগীর এন্টিবায়োটিক রেসিস্টেন্স ক্ষ্যামতা হারিয়ে ফেলে বিধায় তাদের কপালে অনেক দুর্ভাগ্য দেখা দেয় । বিশেষ করে তারাই দীর্ঘমেয়াদী গনোরিয়া সহ আর অন্যান্য অসুখের স্বীকার হয়ে থাকেন । )

যদি উপরের ঔষধ কাজ নাকরে  ( দ্বিতীয় স্থর ) তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কবাইন্ডস ড্রাগস ব্যাবহারের পরামর্ষ দিয়ে থাকেন এবং তা থেকে ৯৬%  রোগী  সুস্থ হয়ে থাকেন  । বিশেষ করে যারা দীর্ঘ মেয়াদী গনোরিয়া অসুখে আক্রান্ত —তাদের জন্য …

ইনজেকশন Ceftriaxone 250 mg intramuscular (IM) single dose PLUS + ট্যাবলেট   Azithromycin 1 g PO single dose  ।
অথবা
If ceftriaxone is unavailable, patients can be given a single oral dose of cefixime 400 mg plus a single dose of azithromycin 1 g PO
অথবা
Single-drug therapy (one of the following, based on recent local resistance data confirming susceptibility to the antimicrobial): Ceftriaxone 250 mg IM as a single dose; cefixime 400 mg orally as a single dose; or spectinomycin 2 g IM as a single dose
এবং
চুখে ইনফেকশনের সন্দেহ থাকলে Erythromycin 0.5% eye ointment বা ক্রিম ব্যাবহার করতে পারেন

বিদ্রঃ কোন অবস্থাতেই  অসুখটি তৃতীয়বার যাতে আর সংক্রামিত না হয়  সে দিকে খেয়াল রাখবেন , কেননা অসুখটি তৃতীয় স্থরে চলে গেলে স্থায়ী বন্ধ্যাত্ব সহ ক্যানসার অথবা শরীরের  অন্যান্য  মারাত্মক ব্যাধি সহ যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু হওয়া অবাস্থব কিছু নয় ।
 
গনোরিয়ার তৃতীয় স্তরের চিকিৎসা  বা শেষ চিকিৎসা মনে করতে পারেন  ( যা বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে রেখেই চিকিৎসা করা ভাল – যখন সকল ড্রাগস ফেইল হয়ে যায় তখন বিশেষজ্ঞরা রিপ্লেইস্মেন্ট থ্যারাপি হিসাবে ড্রাগস সমুহ ব্যাবহারের উপদেশ দিয়ে থাকেন  )
Ceftriaxone 500 mg IM as a single dose PLUS azithromycin 2 g orally as a single dose or Cefixime 800 mg orally as a single dose PLUS azithromycin 2 g orally as a single dose or Gentamicin 240 mg IM as a single dose PLUS azithromycin 2 g orally as a single dose or Spectinomycin 2 g IM as a single dose (if not an oropharyngeal infection) PLUS azithromycin 2 g orally as a single dose.
নবজাতকদের জন্য ঃ
Ceftriaxone 50 mg/kg (maximum 150 mg) IM as a single dose or Kanamycin 25 mg /kg (maximum 75 mg) IM as a single dose or  Spectinomycin 25 mg/kg (maximum 75 mg) IM as a single dose

 

তৃতীয় স্তরের ড্রাগস যখন কাজ করবেনা তখন মনে করতে হবে শরীরের যে কোন একটা দুর্ঘটনা জাতীয়  বড় ধরণের পরিবর্তন আস্তেছে অথবা অসুখটি    সুপার গনোরিয়ার পর্যায়ে চলে গেছে ।  এর জন্য নতুন কোন এন্টিবায়োটিক এখন ও বাহির হয়নি । সেই হিসাবে  এই ব্যাক্টোরিয়াগুলো সংক্রামিত হলে কোটি কোটি জীবন বিনষ্ট করা অসম্বভ কিছু নয় যা এইডসের চাইতে ও মারাত্মক হতে পারে বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা মনে করেন ।
ধন্যবাদ ………………………………………………… ।
References ( Created By Dr Helal KAmaly – MPH & Hon Stud of PhD ( PH & MR ) UK
Centers for Disease Control and Prevention. Sexually transmitted disease surveillance 2013. UK . Department of health and Human Services; 2014. Updated March 30, 2015. www.cdc.gov/std/stats13. Accessed July 15, 2015.

Final Recommendation Statement: Chlamydia and Gonorrhea: Screening. U.S. Preventive Services Task Force. December 2014. www.uspreventiveservicestaskforce.org/Page/Document/RecommendationStatementFinal/chlamydia-and-gonorrhea-screening. Accessed July 15, 2015.

Marrazzo JM, Apicell MA. Neisseria gonorrhoeae (Gonorrhea). In: Bennett JE, Dolin R, Blaser MJ, eds. Mandell, Douglas, and Bennett's Principles and Practice of Infectious Diseases. 8th ed. Philadelphia, PA: Elsevier Saunders; 2015:chap 214.

Workowski KA, Bolan GA; Centers for Disease Control and Prevention (CDC). Sexually transmitted diseases treatment guidelines, 2015. MMWR Recomm Rep. 2015;64(3):1-137.

হেপাটাইটিস- বি-ভাইরাস ( যৌন রোগ পর্ব -৮ )HBV – STD 8


b-8

মেডিক্যাল হিষ্ট্রি ঃ

ইতিহাস অনুসারে খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে হিপোক্রেটিসের আমলে মহামারী হিসেবে জন্ডিসের প্রমান পাওায়া যায় এবং পরবর্তীতে ড. সাউল ক্রুগম্যান ১৯৫০ সালে প্রথম এ ভাইরাসটি শনাক্ত করেন । তার দেয়া তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে ড. ব্লুমবার্গ ১৯৬৩ সালে হেপাটাইটিস বি ভ্যাক্সিন তৈরি করেন। বর্তমানে ড. ব্লুমবার্গ এর তৈরিকৃত ভ্যাক্সিন এর পরিবর্তে রিকমবিন্যান্ট ভ্যাক্সিন ব্যবহার করা হয়।
আমাদের দেশের শতকরা ৪ ভাগ মানুষ হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের বাহক। তাদের থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে অন্যান্য সুস্থ দেহে সংক্রামিত হলেও ৯০% বেলায় অবৈধ যৌনতার কারনেই ভাইরাসটি সংক্রামিত বেশী হয়ে থাকে । এশিয়ান দেশের গর্ভবর্তী মায়েরা গড়ে ৩.০৯% হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে আক্রান্ত । সারা বিশ্বে প্রতি বছর এইডস (AIDS) রোগে যে পরিমাণ মানুষ মারা যায় তার চেয়ে বেসি লোক মারা যায় হেপাটাইটিস-বি (HBV) ভাইরাস সংক্রামনে।

 

হেপাটাইটিস বি কি ?

b-17
হেপাটাইটিস বি একটি যৌন সংক্রামক রোগ। হেপাটাইটিস বি ভাইরাস সংক্রমণের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি দেখা দেয় যা যকৃতে মারাত্মক সংক্রমণ ঘটায়। রক্ত, বীর্য অথবা শরীরের অন্যান্য তরল পদার্থের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। বড়দের ক্ষেত্রে এর সংক্রমণ ৫০% এমনিতেই ভালো হয়ে গেলেও শিশুদের ক্ষেত্রে এর সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হয় ( ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের ) । চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে সিরাম হেপাটাইটিস ও বলা হয়ে থাকে । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভাইরাসটি সুস্থ শরীরের প্রবেশ করার ১ থেকে ৪ মাসের ভিতর প্রকাশিত হয় ।

 

 

এ রোগের ২ টি অবস্থা আছে। একটি হল অ্যাকিউট বা স্বল্প মেয়াদী এবং অপরটি হল ক্রনিক বা দীর্ঘ মেয়াদী ।
অ্যাকিউট বা স্বল্পমেয়াদী ( Acute hepatitis B )

b-12
বি ভাইরাসে আক্রেন্ত হওয়ার পর কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাসের ( ৬ মাস ) মধ্যে ভাল হয়ে যায় । যার কারনে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যাদের শরীরের ইমিউনিটিস শক্তি প্রচুর থাকে তারা প্রথম অবস্থায় বিনা চিকিৎসাতেই সুস্থ হওয়ার কথা এবং এ সময় অ্যাকিউট হেপাটাইটিস বি এর জন্য তেমন চিকিৎসার প্রয়োজন হয়না । মনে রাখবেন সে সময় লিভারের জন্য ক্ষতি কারক ঔষধ , লিভারের জন্য ক্ষতিকারক ভেষজ খাবার ও মদ পান এবং ক্যামিকেল মিশ্রিত পিজি ড্রিঙ্ক ইত্যাদি এড়িয়ে চলা উচিৎ – ।

 

দীর্ঘমেয়াদী বা ক্রনিক হেপাটাইটিসঃ- ( chronic hepatitis B )

b-03
হেপাটাইটিস বি-ভাইরাস সাধারণত ৬ মাস থেকে আজীবন স্থায়ী হতে পারে । যদি কোন কারনে দীর্ঘ দিন পর ও শরীরের ইমিউনিটি শক্তি নস্ট না করতে পারে তাহলে ৯০% বেলায় শেষ অবধি , যখন শরীরের ইমিউনিটি শক্তি দুর্বল হতে থাকে তখন দীর্ঘমেয়াদী হেপাটাইটিস বি-ভাইরাস লিভার সিরোসিস ও ক্যান্সার হওয়ার সবাভনা শতভাগ – অর্থাৎ আক্রান্ত ব্যাক্তির বার্ধক্য জনিত সময় আসার আগেই জীবন নাসের হুমকি খুব বেশী ।
তবে সু সংবাদ একটাই সদ্য গবেষণা অনুসারে দেখানু হয়েছে যারা একবার আক্রান্ত হয়ে ভাল হয়ে যান পরবর্তীতে তারা পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার সম্বাভনা না থাকলেও তাদের কাছ থেকে ও সুস্থ শরীরে তা সংক্রামিত হতে পারে বিধায় যে কোন পরিবারের যে কেউ একবার আক্রান্ত হলে উক্ত পরিবারের সকলের ই প্রতিষেধক হিসাবে ভ্যাকসিন নেওয়া কর্তব্য । দুঃখ জনক হলে ও সত্য ক্রনিক হেপাটাইটিস বি ভাইরাস যখন লিভার কে প্রথম অবস্থায় আক্রমণ করে তখন তেমন খারাপ লক্ষন বুজাই যায়না, কিন্তু যখন লিভার সেল সমুহ কে ধংস করে ফেলে তখন ৯৬% বেলায় কিছুই করার থাকেনা ।

 

 

ভাইরাস টি কীভাবে সংক্রামিত হয় ?  ( Red Alert !!!!

b-06
১- একের অধিক ব্যক্তির সাথে অনিরাপদ শারীরিক সর্ম্পকে লিপ্ত হলে বা ( তৃতীয় বিশ্বের দেশ গুলোতে যারা পতিতা অথবা ভাসমান কারও সাথে যৌন মিলন করেন তারাই এই ভাইরাসটি স্বীকার বেশী হয়ে থাকেন এবং পরবর্তীতে আক্রান্ত ব্যাক্তি পুরুষ থাকলে তার কাছ থেকে গর্ভবতী মা এবং তার গর্ভস্থ শিশু আক্রান্ত হওয়ার সম্বাভনা শতভাগ , বিপরীত দিকে আক্রান্ত ব্যাক্তি মহিলা হলে তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক যুক্ত যে কেউ এর স্বীকার অনিবার্য । ইউরোপ অ্যামেরিকার দেশ সমুহে পুরুষ সমকামীরা বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকেন ) আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক হয়ে থাকলে । প্রসঙ্গত জেনে রাখার জন্য উল্লেখ করতেই হয় অনেকেই মনে করে নিরাপদ যৌন মিলন ( কনডম ) করলে তা সংক্রামিত হয়না , বিষয়টি সব ক্ষেত্রে সঠিক নয় বিশেষ করে আক্রান্ত ব্যাক্তির মুখের লালা রস থেকে শরীরের যে কোন রক্ত প্রবাহে ঢোকে পরে এইডসের চাইতে খুব সহজে ( টোঠ, ও স্পরশকাতর চামড়ার মাধ্যমে ) অর্থাৎ ওড়াল যৌন ক্রীড়ায় ও তা প্রবাহিত হয়ে থাকে ।
২- এ ছাড়া আক্রান্ত ব্যাক্তির একই সিরিঞ্জ, সুঁই , শরীরে উল্কি আঁকা, স্যালুনে ব্যবহৃত ক্ষুর, রেজর, ব্লেডঃ, হাসপাতালে হেপাটাইটিস বি আক্রান্তদের পরিচর্যার কারণে, ডেন্টিষ্টের ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, অপারেশন থিয়েটারে ব্যবহৃত(অনিরাপদ) যন্ত্রপাতি, সিরিঞ্জ এ মাদক নেয়া, আক্রান্ত ব্যাক্তির মুখের সিগারেট ইত্যাদি ব্যাবহার করলে ।
মোট কথায় আক্রান্ত ব্যাক্তির রক্ত, বীর্য, যোনি রস, মুখের লালা থেকে সুস্থ দেহে এর বিস্তৃতি ঘটে থাকে । তবে মনে রাখবেন এই ভাইরাস সামাজিক মেলামেশায় (হ্যান্ড শেক, কোলাকুলি) ,দুধ দান এবং কাশির মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায় না। এমনকি রোগীর ব্যবহার্য দ্রব্যাদি যেমন- গ্লাস, চামচ, জামা কাপড়ের মাধ্যমেও এই রোগ ছড়ায় না।।

 

 

হেপাটাইটিস- বি এর উপসর্গ সমূহঃ

b-09
৫০% বেলায় আক্রান্ত রোগীর প্রাথমিক ভাবে তেমন কোন কোন উপসর্গ নাও থাকতে পারে বা অনেক ক্ষেত্রে জ্বর, ক্লান্তিবোধ, শরীর টনটন করা, ব্যাথা, বমি ভাব এবং ক্ষুধামন্দা দেখা দেওয়া ছাড়া আর তেমন কিছু বুজা যায়না – তখন হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস লিভারে মৃদু ইনফেকশন চালিয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে লিভারের ক্ষতি করতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত অসুখটি রোগীর অজান্তেই সেকেন্ডারী পর্যায়ে চলে যায় যাকে আমরা ক্রনিক হেপাটাইটিস বা দীর্ঘস্থায়ী ইনফেকশন বলে থাকি । এই রোগের সুপ্তবস্থা (ভাইরাস সংক্রমন থেকে রোগের লক্ষণ পর্যন্ত) প্রায় ৪ সপ্তাহ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে ।

তারপর ও হেপাটাইটিস বি ভাইরাস দ্বারা সংক্রমণের ২৮ দিন থেকে থেকে ৬ মাসের ভিতর যে যে লক্ষণ ও উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে তা নিম্নরূপ ঃ
*পেট ব্যথা * গাঢ় রংয়ের প্রস্রাব *অস্থিসন্ধিতে ব্যথা *ক্ষুধা মন্দা * ক্লান্ত এবং অবসাদ অনুভব করা *শরীরের চামড়া ফ্যাঁকাসে হলুদ হয়ে যাওয়া , চোখ সাদা ফ্যাকাশে হওয়া ( গ্রামের অনেকেই একে মাটিয়া হল্মি বলে অবহিত করেন )

অসুখটি ক্রনিক পর্যায়ে চলে গেলে যে সব লক্ষন দেখা যায় ঃ
– লিভারে ব্যথা করা – খাদ্যে অরুচি – দুর্বলতা (কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হয়, যদি কোন কারন বশত হঠাত দুরবলতা বেশী বৃদ্ধি পায় বা রোগী গুরতর দুর্বল হয়ে পরে তাহলে অবশ্যই রোগীকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করা উচিৎ । একে Fulminate hepatitis বলা হয় , নিচে এর লক্ষন সমুহ দেওয়া আছে )
– জ্বর ও বমি, – পেট ব্যথা , পেটের ডান পাশে ব্যথা অথবা অস্বস্তিবোধ করা, লিভার ও প্লীহা বেড়ে যাওয়ার উপসর্গ ও লক্ষণ দেখা দেওয়া ( ৬% বেলায় সেকেন্ডারি পর্যায়ে যাওয়ার সাথে সাথেই তা দেখা দেখা দেয় ) ,
– শরীর চুলকানো ( এটি সকল হেপাটাইটিস রোগের লক্ষণ) – প্রসাব চা এর মত কালো হয়ে যাবে – পায়খানার রঙ ফ্যাকাশে (ধূসর বা কাদামাটি রঙের মত )
( এ ক্ষেত্রে যারা হাইপার এসিডিটিতে ভোগে থাকেন তাদের প্রায় ই অনিয়ন্ত্রিত পায়খানা বা আই বি এসের মত লক্ষন দেখা দিয়ে থাকে ) বা তাদের বেলায় কালচে হলদে বর্ণের চোখ এবং ত্বক হতে পারে ।
ধীরে ধীরে অসুখটি বৃদ্ধির সাথে – রক্তস্বল্পতা- ওজন কমে যাওয়া- মাংসপেশী এবং হাড়ের সংযোগস্থলে (গিটে) ব্যথা ও চুলকানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে ।

 
ফ্লামিনেট হেপাটাইটিস ( fulminant hepatitis). ঃ

b-010
যে সকল ক্রনিক হেপাটাইটিস রোগী হঠাত করেই খুব দ্রুত দুর্বল ও অজ্ঞান হয়ে পরেন তাদের কেই বলা হয় – যা ২% বেলায় দেখা যায় – সে সয় রোগীর মানসিক বিভ্রান্তি , তন্দ্রা, নিদ্রাহীনতা বা হ্যালুসিনেশন ও দেখা দিতে পারে ( স্বপ্নে পাওয়া অনেক কিছু ) , একি সাথে বমি বমি ভাব দীর্ঘায়িত হওয়া সহ প্রস্রাবের মাত্রা কমে যাওয়া, ডিহাইড্রেশন সহ পেটের ফোলা বৃদ্ধি পেতে ( ধরে নিতে হবে রোগী কয়েক সপ্তাহের ভিতর লিভার ফেইলার হতে পারে ) ইত্যাদি সহ শারীরিক অনেক জঠিলতা দেখা দিতে পারে বা তখন অনেক ক্ষেত্রে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করে ও তেমন সুস্থ হওয়ার কথা নয় , অর্থাৎ মৃত্যু নিশ্চিত …………………।

 

কি ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে

b-08

এইচবিএস এজি’ও (Hbs Ag- Hepatitis B surface antigen ) ( এর অর্থ হলো হেপাটাইটিস-বি সারফেস এন্টিজেন যা হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের দেহ থেকে নি:সৃত হয়ে থাকে ) । হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হলেই রক্তের এইচবিএস এজি (Hbs Ag) পরীক্ষা পজিটিভ হয়। অর্থাৎ আপনি নিশ্চিত সাম্প্রতিক বা দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত — !
হেপাটাইটিস বি টাইপ ই অ্যান্টিজেন ( Hepatitis B type e antigen – HBeAg) পজেটিভ হলে বুজে নিতে হবে আপনি দীর্ঘ স্থায়ী হেপাটাইটিস বি দ্বারা আক্রান্ত এবং আপনার শরীরের এই ভাইরাস একটিভ বিধায় আপনি একজন সংক্রামক বা আপনার শরীরের রক্ত, লালা, বীর্য বা যোনি রস ইত্যাদি যে কোন সুস্থ শরীরে ঢোকতে পারলে সুস্থ ব্যাক্তি ও সংক্রামিত হবে ।
Antibody to HBsAg (Anti-HBs) পজেটিভ হলে বুজতে হবে আপনার এন্টি- হেপাটাইটিস ভ্যাকসিন দেওয়া আছে এবং আপনি সংক্রামিত হওয়ার সম্বাভনা কম ।
যকৃতের পরীক্ষা ঃ- ( এ সব পরিক্ষা পুরাতন রোগীদের বেলায় করতেই হয় যকৃতের কর্ম ক্ষ্যামতা পরিষ্কার ভাবে বুজার জন্য )
AST(SGOT অর্থাৎ আপনার রক্তে এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে কিনা তা দেখা ) HBV- DNA বা ভাইরাল লোড PCR (polymerase chain reaction) ইত্যাদি ।
যদি রোগী দীর্ঘ স্থায়ী বা ক্রনিক হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং লিভারের কিছুটা গোলাযোগ পরিলক্ষিত হয় বা লিভার ড্যামেজ হওয়ার সম্বাভনা থাকে তাহলে আপনার চিকিৎসক লিভার বায়োস্পি করার কথা বলতে পারেন ( লিভার বায়োস্পি হচছে চিকিৎসক সিরিঞ্জের মাধ্যমে আপনার লিভার থেকে কিছু কোষ সংগ্রহ করে ল্যাব্রোটারিতে পরিক্ষা করা, ইহা করার আগে কিছু উপদেশ আছে পানার চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিবেন )

 

হেপাটাইটিস- বি ভাইরাসে চিকিৎসা কি?

b-011
( রিসার্চ ঃ মুলত হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের কোন ঔষধ বাহির হয়নি, যাই হয়েছে তা শুধু মাত্র যকৃতের প্রদাহ বিরোধী ঔষধ বাহির হচ্ছে, জেনে রাখা ভাল বি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মুলত তা আমাদের যকৃতকে অকার্যকর করা ছাড়া শরীরের অন্যান্য অঙ্গের তেমন কোন ক্ষতি করতে পারেনা – সেই সুত্র ধরেই – বি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর যকৃত কে যে কোন ভাবে প্রদাহ মুক্ত রাখতে পারলেই উক্ত রোগীর তেমন বড় ধরণের ক্ষতি হওয়ার সম্বাভনা নাই — অর্থাৎ রোগী সারা জীবন ই সুস্থ থাকবে ।
তবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বি-ভাইরাস নিম্নের যে কোন একটি পদ্ধতির মাধ্যমে শতভাগ ভাল হওয়ার সমাভনা আছেই । DNA Inhibitors- Capsid Inhibitors – Immune System Activators– Natural Antiviral Agents– ( এর মধ্যে Natural Antiviral Agents এর উপর বেশ গুরুত্ব দেওয়া হইতেছে ) ————

একিউট বি- ভাইরাসের
একিউট বি- ভাইরাসের জন্য তেমন কোন কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয়না কেননা শরীরের এন্টিবডি ৫০% বেলায় তা এমনিতেই প্রতিহিত করতে পারে তবে সে সময় রোগীর বিশ্রাম এবং পরিপূরক শরীরের ইমিউনিটি শক্তি বৃদ্ধিকারক খাবার খাওয়া অবশ্যই জরুরী । মনে রাখবেন এই ভাইরাস ৩০-৩৫ বছর পরও সুপ্ত অবস্থা থেকে সক্রিয় হতে পারে ! ( HBeAg)

 

 

সেকেন্ডারি বা দীর্ঘ মেয়াদী এইচবিএস এজি পজেটিভ রোগীদের বেলায় ঃ
এইচবিএস এজি পজেটিভ থেকে নেগেটিভ করতে হলে প্রথমেই রোগীর শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং সেই সাথে যাদের লিভারের কার্যক্ষমতা স্বাভাবিকের চাইতে কম তাদের জন্য — লিভাররের কার্যক্ষমতা সঠিক রাখার জন্য বর্তমানে আবিষ্কৃত নতুন কিছু ঔষধ বাহির হয়েছে যা ৭০% রোগীর বেলায় কার্যকর ।
যদি রোগীর ইতিহাসে এইচবিএস এজি পজেটিভ ৬ মাসের উপরে থাকে এবং যকৃ্ত সঠিক কাজ করে তাহলে নিচের ঔষধ সমুহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ব্যাবহার করার পরামর্ষ দিয়ে থাকেন —
পেগালিটেড ইন্টারফেরন আলফা ২-বি বা পেগাসিস ইনজেকশন ব্যাবহারে ৬ মাসের মধ্যেই অনেকের এইচবিএস এজি নেগেটিভ হতে দেখা যায় , কিন্তু ইনজেকশন সমুহ খুব বেশী ব্যাবহুল ( ৪/৫ লক্ষ টাকা ) যা সকলের পক্ষে এর ব্যায়ভার বহন করা সম্বভ নাও হতে পারে –
সে ক্ষেত্রে ট্যাবলেট সেবনের পরামর্ষ দেওয়া হলে ও মুখে খাওয়ার ঔষধ ব্যাবহারে ভাইরাস ন্যাগেটিভ হতে কয়েক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে । বিপরীত দিকে দীর্ঘদিন ঔষধ সেবনের ফলে ১০% বেলায় অন্যান্য প্রতিক্রিয়া ও দেখা দিতে পারে , সে দিকে খেয়াল রাখা উচিৎ ।
Interferon alfa (Intron A, Roferon A, Sylatron). ইনজেকশন ঃ
যে কোন একটি ইনজেকশন প্রতি সপ্তায় ১টি করে (180 mcg ) ২৪ সতাহ থেকে ৪৮ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রয়োজন হতে পারে – তবে চাইলে আপনার চিকিৎসক অসুখের উপর ভিত্তি করে মাত্রার রদ বদল করতে পারেন যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এইচবিএস এজি ৬ মাসের মধ্যেই তা নেগেটিভ পর্যায়ে চলে যায় —

b-1
আর ও বিস্তারিত জানতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন ঃ
( https://www.drugs.com/pegasys.html )
অথবা – আপনার চিকিৎসকের পরামর্ষ অনুসারে নিচের যে কোন একটি এন্টি-ভাইরাল ড্রাগস দীর্ঘ দিন সেবন করতে হবে এবং সে সময় সঠিক ডোজ সেবন শেষে রক্তের HBsAg পরিক্ষার প্রয়োজন — ইত্যাদি
lamivudine: 100mg per day (note that this dose differs from the dose used in drug combinations to treat HIV infection এবং তা লিকোইড হিসাবে ও পাওয়া যায় ।
অথবা – adefovir: 10mg per day ( lamivudine এর চাইতে আরেকটু উন্নত )

অথবা – entecavir – 0.5 or 1.0mg per day, depending on previous treatment history অথবা entecavir লিকোইড সেবন করতে পারেন ।
অথবা – telbivudine: 600mg per day অথবা tenofovir: 245mg per day. ( ইহা পাউডার হিসাবে ও বাজারে পাওয়া যায় )

উপরের ঔষধ সমুহ কম পক্ষে এক বছরের জন্য ব্যাবহার করতে হয় …………………………………।
দুর্ভাগ্য ক্রমে জীবাণু গুলো নেগেটিভ না হলে এবং যকৃতের প্রদাহ বৃদ্ধি পেলে পরবর্তীতে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা ছাড়া আর বিকল্প ব্যাবস্থা নাই —– ! ( মুলত উপরের ঔষধ গুলো ব্যবহার করা হয় লিভারের ক্ষতি না করার জন্য এবং এর ভিতরেই শরীরের ইমিউনিটি শক্তি বৃদ্ধি পেয়ে ভাইরাস সমুহ কে ধ্বংস করে দেয় )
সাথে আপনার চিকিৎসকের পরামর্ষ অনুসারে মাঝে মধ্যে ভিটামিন-সি 500 – 1,000 mg 1 – 3 times daily এবং প্রোবাইয়োটিক সাপ্লিমেন্ট (containing Lactobacillus acidophilus, Engerix-B-/ Recombivax HB )প্রতিদিন সেবন করলে আপনার লিভারের ইমিউনিটি শক্তি বৃদ্ধি করতে একটু সহায়ক হতে পারে ।

 

 

২- Natural Antiviral Agents সবচেয়ে বেশী কার্যকর ভেষজ সমুহ ঃ

h-20
সুত্রঃ কোন ভেষজ ই হেপাটাইটিস ভাইরাস কে ধ্বংস করেনা , তারপর ও গবেষণা অনুসারে কিছু ভেষজ আছে যা শরীরের ইমিউনিটি শক্তি বৃদ্ধি কারক এবং এন্টি-ভাইরাল হিসাবে কাজ করে ইহা সত্য এবং সে জন্য- বিশ্বে সবচেয়ে ভাল লিভারের বল বর্ধক হিসাবে, যা বায়ো-মেডিক্যাল রিসার্চ অনুসারে প্রমাণিত আমি তাই নিচে তুলে ধরলাম -( যদি ও অনেকে হাজার ও ভেষজের কথা বলে থাকেন লিভারের বলবর্ধক বা ভাইরাল বিরোধী কিন্তু ড্রাগস এন্ড মেডিসিন রিসার্চ অনুসারে মাত্র ১% সত্য এবং তাও ৩-৪% কার্যকর । তাই শুনা কথার উপর ভিত্তি করে এই সব শুনা বা আইডিও-লজিক্যাল চিকিৎসা থেকে দূরে থাকাই ভাল ।
(নিম্নের ভেষজ গুলো বাংলাদেশে পাওয়া যায় কিনা আমার জানা নেই , যদি না পাওয়া যায় তাহলে অনলাইনে চেক করে কিনে নিতে পারেন , ইউকে অ্যামেরিকা বা চায়নার ভেষজ সমুহ মান উন্নত ও মান সম্মত । অনুরুধ থাকবে তা যেন স্বীকৃত কোম্পানির হয় )
পৃথিবীতে লিভারের প্রতিরোধ ক্ষ্যামতা বৃদ্ধি কারক হিসাবে ঋষি মাশরুম ই সবচেয়ে ভাল একটি হারবাল ভেষজ Reishi mushroom (Ganoderma lucidum), সে জন্য ঋষি মাশরুমের পাউডার বা ক্যাপসুল সেবন করতে পারেন লিভারের ইমিউনিটি শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য । জি লোসিডিয়াম একমাত্র ঋষি মাশরুমেই সবচেয়ে বেশী থাকে ( সেবন ও বিধি নিষেধ ইত্যাদি বিস্তারিত ঋষি মাশরুম ঔষধের লিফলেট থেকে জেনে নিন ) – যা ক্যানসার প্রতিরোধ করার জন্য বিশেষ একটি বায়বীয় উপাদান —
রিসার্চ পেইজ ( https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmedhealth/PMH0046740/ )

h-21
মিল্ক থিস্লে ঃ Milk thistle (Silybum marianum): এই ভেষজ টি রোমান যুগ থেকেই লিভারের প্রতিরোধ ক্ষ্যামতা বৃদ্ধির জন্য ব্যাবহার করা হইতেছে এবং আধুনিক বিজ্ঞানে ও তা স্বীকৃত by the U.S. Agency for Healthcare Research and Quality (AHRQ), …।। ( সেবন ও বিধি নিষেধ ইত্যাদি বিস্তারিত ঔষধের লিফলেট থেকে জেনে নিন )
রিসার্চ পেইজ ( http://umm.edu/health/medical/altmed/herb/milk-thistle )
কাল জীরার তৈল ঃ Black Seed Oil – যদি ও ভেষজটি ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের জন্য বেশ উপকারী তাথে সন্দেহ নেই তবে যে সকল লিভার হেপাটাইটিস রোগীর রক্তে কোলেস্টারলের মাত্রা বেশী তাদের বেলায় , তা সেবনে ভালর চাইতে খারাপ রিজাল্ট বেশী দেখা দিতে পারে । তাই রক্ত পরিক্ষা না করে তা সেবন করা মোটেই উচিৎ নয় ।
অলিভ লিফ ক্যাপসুল ( Olive Leaf Capsules )- এই ভেষজ টি নিঃসন্দেহে লিভারের জন্য একটি এন্টি- ব্যাক্টোটোরিয়েল, এন্টি-ফাঙ্গাল এবং এন্টি- ভাইরাল ভেষজ হিসাবে স্বীকৃত এবং খুবি ভাল একটি এন্টি-অক্সাইডেন্ট এজেন্ট , তাই ওলিব লিফ এক্সট্র্যাক্ট ক্যাপসুল সেবন করতে পারেন – জাপানের বাজারে আরেকটু উন্নত পর্যায়ে জ্যাল অক্সিজেন ক্যাপসুল বা পাউডার নাম দিয়ে বাজারজাত করা হয়েছে ( Zell Oxygen ) .. ( সেবন ও বিধি নিষেধ ইত্যাদি বিস্তারিত ঔষধের লিফলেট থেকে জেনে নিন )
Licorice root (Glycyrrhiza glabra): ………………………।। ( পরবর্তী আপডেটের অপেক্ষায় )
( উপরের ভেষজ সমুহ আন্তর্জাতিক বায়ো-রিসারচ অনুসারে লিভারের এন্টি-বডি শক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রমাণিত ভেষজ )

 

 

৩- হেপাটাইটিস এ ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়মাবলী ঃ ( রক্ত পরিক্ষায় হেপাটাইটিস ভাইরাস পজেটিভ হলে ভ্যাকসিন কাজ করবেনা )
ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম- ( Hepatitis B vaccination )

b-012
একজন প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য – প্রথম ভ্যাকসিন দেওয়ার ২৮ দিন পর ২য় ভ্যাকসিন দিতে হয় ( ২য় ভ্যাকসিন টি খুব বেশী গুরুত্বপূর্ণ বিধায় ২৮ দিন অথবা ৩০ দিনের ভিতর দিতেই হয় , তবে কোন অবস্থায় ২৮ দিনের আগেও নয় ) ৩য় ভ্যাকসিন ৬ মাস পর দিলেই হয় তবে তবে কোন অবস্থায় ১৬ সপ্তাহের আগে নয় এবং যদি কাক্ষিত টাইটার অর্জিত না হলে ৩য় ডোজের পর অতিরিক্ত আর একটি ডোজ (বুস্টার ডোজ) নিতে হয় । ( সর্বশেষ তথ্যঅনুসারে জানানো হয়েছে বোস্টার ডোজের প্রয়োজন নেই ) । যদি ভ্যাকসিন গুলো প্রাইভেট দিতে হয় তাহলে চেস্টা করবেন ভ্যাকসিন সমুহ যেন প্রথম শ্রেণীর উচ্চমানের হয় ।
RX/ Recombivax HB (40 mcg/mL): 40 mcg IM OR Engerix-B (20 mcg/mL): 40 mcg IM at

 
নবজাতক শিশু এবং তার মায়ের জন্য হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীরা যা করতে হয়, তা নিম্নরূপ ( যদি মা HBsAg পজেটিভ থাকেন তাহলে অবশ্যই সন্তান প্রসবের ১২ ঘন্টার ভিতরেই প্রথম ভ্যাকসিন দিতেই হবে )

b-013
Routine vaccination
⦁ First dose: Administer first dose to all newborns before hospital discharge
⦁ Infants born to HBsAg-positive mothers: 0.5 mL IM within 12 hr of birth PLUS hepatitis B immune globulin (HBIG); test for HBsAg and antibody to HBsAg (anti-HBs) 1-2 months after completion of hepatitis B vaccination series, at age 9 through 18 months
⦁ Mother’s HBsAg status unknown: 0.5 mL IM within 12 hr of birth PLUS give HBIG if newborn wt <2 kg; determine mother’s HBsAg status as soon as possible and, if she is HBsAg-positive, also administer HBIG for infants weighing 2 kg or more (no later than age 1 week)

used for doses administered before age 6 weeks
⦁ Infants who did not receive a birth dose should receive 3 doses of a HepB-containing vaccine on a schedule of 0, 1 to 2 months, and 6 months starting as soon as feasible
⦁ Minimum interval between dose 1 and dose 2 is 4 weeks, and between dose 2 and 3 is 8 weeks
⦁ Final (3rd or 4th) dose in the HepB vaccine series should be administered no earlier than age 24 weeks, and at least 16 weeks after the first dose
⦁ A total of 4 doses of HepB vaccine is recommended when a combination vaccine containing HepB is administered after the birth dose

( বাংলাদেশ সরকার সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিনকে ইতিমধ্যেই সংযোজন করেছেন । এই কর্মসূচিতে শিশুকে ০.৫ মিলি ডোজের মোট তিনটি ডোজ দেয়া হয়। প্রথমটি ডিপিটির সাথে ছয় সপ্তাহ বয়সে, দ্বিতীয়টি ডিপিটি ২-এর সাথে ১০ সপ্তাহ বয়সে, তৃতীয়টি ডিপিটি ৩-এর সাথে ১৪ সপ্তাহ বয়সে। হেপাটাইটিস বি ভ্যাক্সিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। তাই সকলেরই এই ভ্যাকসিন নিয়ে রাখা উচিত। )

অথবা ভিজিট করুন নিচের লিঙ্কে ( http://www.immunize.org/catg.d/p HYPERLINK “http://www.immunize.org/catg.d/p2081.pdf”HYPERLINKhttp://www.immunize.org/catg.d/p2081.pdf&#8221; )

 

হেপাটাইটিস- বি ( HBsAg Positive) পজেটিভ রোগীদের যা অবশ্যই করনীয় ?

b-14
নিরাপদ উপায়ে শারীরিক বা যৌন সম্পর্ক স্থাপন , যার সাথে যৌন মিলন করবেন তাকে অবগত করে প্রতিষেধক ভ্যাকসিন দেওয়া বাধ্যতামূলক । ( যদিও বাংলাদেশে এর জন্য বাধ্যবাধকতা মুলক আইন নেই, তারপর ও ইহা আপনার মানবিক দবায়িত্ত )
আক্রান্ত ব্যাক্তির ব্যবহৃত সুচ/সিরিঞ্জ, রেজার ব্লেড এবং দাঁত মাজার ব্রাশ ইত্যাদি অন্য কাউকে ব্যাবহার করতে না দেওয়া এবং অবশ্যই রক্ত অথবা অন্য কোন অঙ্গ দান করা থেকে বিরত থাকতে হবে ।
যদি তিনি গর্ভবতী মহিলা হন এবং তিনি যদিHBsAg পজেটিভ থাকেন তাহলে তিনির ডেলিভারি ও চিকিৎসার সাথে জড়িত চিকিৎসক কে জানিয়ে রাখতে হবে অথবা জরুরী ভিত্তিতে ইমারজেন্সি ডেলিভারির প্রয়োজন হলে সেখানের চিকিৎসক কে অভহিত করে রাখা বাধ্যতামূলক , নতুবা সেখানের অনেক সুস্থ মা ও শিশু বা তার সাথে সম্পর্কযুক্ত যে কেউ সংক্রামিত হতে পারেন এবং গর্ভবতী মায়ের ও জানতে হবে এতে তার শিশু জন্মের আগ পর্যন্ত কোন ক্ষতি হবেনা বা জন্মের পর পর ভ্যাকসিন দিলে তা ঠিক হয়ে যাবে ।

 

হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের জটিলতা ?

h-3
যকৃত কলায় ক্ষত বা সিরোসিস ( হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস সংক্রমণে লিভারের কোষগুলো তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে থাকে এবং ক্রমান্বয়ে লিভারের প্রায় সব কোষই নষ্ট হয়ে যায়। এক পর্যায়ে লিভার সংকুচিত হয়ে ছোট হয়ে লিভার অকার্যকর হয়ে পরে ) যকৃতের ক্যানসার – হেপাটাইটিস ডিব’র সংক্রমণ — কিডনীর বিভিন্ন সমস্যা ও রক্তনালীর ধমনীতে প্রদাহ হয়ে শারা শরীর ফোলে যাওয়া ইত্যাদি …………………… ।
চলবে ——- ধন্যবাদ

 

( Created By Dr.Helal Kamaly ( MPH, UK ) Hon PhD … Last pt ( PHMR )

50 years of liver research: BMC Medicine joins ILC 2016
Ferrucci LM, Bell BP, Dhotre KB, et al. Complementary and alternative medicine use in chronic liver disease patients. J Clin Gastroenterol. 2010;44(2):e40-e45.
Ferenci P, Scherzer TM, Kerschner H, et al. Silibinin is a potent antiviral agent in patients with chronic hepatitis C not responding to pegylated interferon/ribavirin therapy. Gastroenterology. 2008;135(5):1561-7.
Firpi RJ, Nelson DR. Current and future hepatitis C therapies. Arch Med Res. 2007;38(6):678-90.
Gish RG. Improving outcomes for patients with chronic hepatitis B. Hepatol Res. 2007;37(s1):S67-S78.
Goldman. Goldman’s Cecil Medicine. 24th ed. Philadelphia, PA: Elsevier Saunders. 2011.
Gorban EM, Orynchak MA, Virstiuk NG, Kuprash LP, Panteleimonov TM, Sharabura LB. [Clinical and experimental study of spirulina efficacy in chronic diffuse liver diseases.] Lik Sprava. 2000(6):89-93.
Honer zu Siederdissen C, Manns MP, Cornberg M. Which treatment options are validated for chronic viral hepatitis? Internist (Berl). 2013;54(12):1427-8.
Hou JK, Velayos F, Terrault N, Mahadevan U. Viral hepatitis and inflammatory bowel disease. Inflamm Bowel Dis. 2010;16(6):925-32.
Langmead L, Rampton DS. Herbal treatment in gastrointestinal and liver disease–benefits and dangers. Aliment Pharmacol Ther. 2001;15(9):1239-52.

হেপাটাইটিস এ ভাইরাস ( যৌন রোগ পর্ব -৭) HAV- STD


–                  হেপাটাইটিস এ  ভাইরাস ( যৌন রোগ পর্ব -৭  ) Hepatitis A virus-HAV
( অসুখটি সম্মন্ধে  সকলের অল্প ধারনা থাকা  উচিৎ ) –
ভুমিকাঃ
h-9
যৌন জীবাণুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিকারক   ভাইরাসের মধ্যে   এইডসের পরেই  হেপাটাইটিস ভাইরাস কে দায়ি করা হয়  – হেপাটাইটিস ভাইরাস প্রধানত ৫ টি হলে ও  হেপাটাইটিস  এ (HAV), বি (  HBV) , এবং  সি (HCV)  যৌনমিলনের মাধ্যমে সংক্রামিত হতে পারে বিধায় এই তিনটি ভাইরাস  যৌন সংক্রামক জীবাণুর অন্তর্ভুক্ত  এবং তার মধ্যে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস হচ্ছে সবচেয়ে বেশী ভয়ঙ্কর  যা এইডস ভাইরাসের চাইতে ১০০ গুন বেশী সহজতর অবস্থায় সংক্রামিত হয়ে থাকে , সে জন্য প্রত্যেকের এই অসুখটি নিয়ে অবশ্যই জানা প্রয়োজন ।
হেপাটাইটিস বা যকৃত প্রদাহ কি তা জানা উচিৎ ?
h-17
হেপাটাইটিস একটি গ্রীক  ল্যাটিন শব্দ , যার অর্থ হেপাট ( liver/ যকৃত  ) +  আইটিস ( inflammation/প্রদাহ  ) = Hepatitis / যকৃত প্রদাহ ।  যে সকল ভাইরাস হেপাটাইটিস ঘটাতে সক্ষম তাদের হেপাটাইটিস ভাইরাস (hepatitis virus) বলে অর্থাৎ এই ভাইরাস গুলো নীরবে  যকৃতের কোষ সমুহ কে ধ্বংস করে ফেলে ( লিভার সিরোসিস )  বিধায়  ৯০% বেলায়  অসুখটির  পূর্ণ লক্ষন দেখা দেওয়ার পর ৯৭%  বেলায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে শেষ বিদায় নিতেই হয় । যদি ও লিভার ট্রান্সপারেন্সি করে রোগীকে কয়েক বছর পর্যন্ত ধরে রাখা সম্বভ কিন্তু তা খুব বেশী ব্যায় বহুল থাকায় সকলের জন্য সম্বব না ও হতে পারে । সে জন্য হেপাটাইটিস অথবা জণ্ডিসের ( হলমি ) মত  যে কোন অসুখের প্রাথমিক লক্ষন দেখা দেওয়া মাত্রই সাথে সাথে তার যথা যত ব্যাবস্তা নেওয়া উচিৎ এবং দুর্ভাগ্য বশত ভাইরাস জনিত হেপাটাইটিস  পজেটিভ হয়ে গেলে ( বিশেষ করে বি অথবা সি ভাইরাস ) উক্ত রুগীর সাথে দৈহিক  সম্পর্ক যুক্ত ব্যাক্তি কে  প্রতিরুধ মুলক ভ্যাকসিন নেওয়া বাধ্যতা মুলক  ( ডাঃ হেলাল ) ।
৫ টি হেপাটাইটিস ভাইরাস ঃ
h-14
হেপাটাইটিস ভাইরাস গুলো হচ্ছে — হেপাটাটিস এ ভাইরাস  Hepatitis A virus (HAV ) ভাইরাসটি  যৌন সংক্রামকের অন্তর্ভুক্ত — বিস্তারিত নিম্নে দেওয়া আছে
হেপাটাইটিস বি ভাইরাস Hepatitis B virus (HBV) , ভাইরাসটি  যৌন সংক্রামকের অন্তর্ভুক্ত — বিস্তারিত পরবর্তী পর্বে  দেওয়া আছে ।
হেপাটাইটিস সি ভাইরাস Hepatitis C virus (HCV) , ভাইরাসটি  যৌন সংক্রামকের অন্তর্ভুক্ত — বিস্তারিত পরবর্তী পর্বে  দেওয়া আছে ।
হেপাটাইটিস ডি ভাইরাস Hepatitis D virus (HDV), হেপাটাইটিস সি ভাইরাস  Hepatitis E virus (HEV)
এই ভাইরাসদ্বয় পানি , খাবার, যৌন মিলন ইত্যাদির  মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশের ১৫-৬০ দিন পর জন্ডিসের মত লক্ষন  দেখা দেয়। আমরা জানি, ভাইরাস কোষের ভেতর প্রবেশ করে কোষের ভেতরের ডিএনএ ও বিভিন্ন এনজাইম ব্যবহার করে বংশবৃদ্ধি করে। হেপাটাইটিস ভাইরাস লিভারের কোষকে আক্রমণ করে। ফলে আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় নিয়োজিত কণিকাগুলোর মধ্যে শ্বেত রক্তকণিকা ও হিস্টিওসাইট লিভারের আক্রান্ত কোষকে নষ্ট করে দেয়ার মাধ্যমে ভাইরাসকে ধ্বংস করে দিয়ে সুস্থ কোষগুলোকে রক্ষা করতে চেষ্টা করে।
লিভারের অনেকগুলো কাজের মধ্যে একটি হলো মেয়াদোত্তীর্ণ হিমোগ্লোবিন ভেঙে বিলিরুবিন তৈরি করা এবং পিত্তনালির মাধ্যমে খাদ্যনালিতে বের করে দেয়া। কিন্তু লিভারের কোষ নষ্ট হলে এ বিলিরুবিন রক্তে প্রবেশ করে থাকে । ফলে রক্তে বিলিরুবিন বেড়ে যায় বিধায় আমাদের শরীরের চামড়া, প্রস্রাব ইত্যাদি  হলুদ রঙ ধারন করে অর্থাৎ  যাকে আমরা সহজ  ভাবে  জন্ডিসের লক্ষন মনে করে থাকি ।
h-11
– তাই  শরীরে জণ্ডিসের লক্ষন ( হলুদ হওয়া ) দেখা দেওয়া বলতে হেপাটাটিস মনে করা হলে ও অনেক ক্ষেত্রেই অন্যান্য কারনে ও রক্তের বিলিরুবিন বৃদ্ধি পেতে  পারে বিধায় সকল জন্ডিস রোগ কিন্তু হেপাটাইটিস জাতীয় অসুখ  নয় বরং যকৃত, অগ্নাশয় বা পিত্ত থলির যে কোন একটা ত্রুটি,  জীবাণু বা বিষক্রিয়ার  ধারা আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব সঙ্কেত মনে করতে পারেন  এবং তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য সাথে সাথে রক্ত পরিক্ষা করে নেওয়া উচিৎ ।  মানব দেহে বিলুরুবিনের স্বভাবিক পরিমাণ ১ হতে ১.৫ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার ।
বিপরীত দিকে অনেক ভাইরাল হেপাটাটিস অসুখ আছে ( বিশেষ করে হেপাটিটিস বি এবং সি  আক্রান্তদের বেলায় অনেক কে দেখতে সুস্থ মনে হলেও ) যা জণ্ডিসের মত লক্ষন অনেক দেরিতে দেখা দিয়ে থাকে ( রোগীর ইমিউনিটি শক্তির কারনে  … ) এবং যখন জণ্ডিসের মতে লক্ষন দেখা দেয় তার অনেক আগেই রোগীর লিভার সেকেন্ডারি  প্রদাহে চলে যায়  বিধায় তখন আর কিছুই করার থাকেনা ।  তবে সে ক্ষেত্রে  অবশ্যই জণ্ডিসের লক্ষন ছাড়া ( হলুদ হওয়া ) ও আর অন্যান্য লক্ষন বিদ্যমান থাকবে  যা রোগী বা তার গার্জিয়ানরা প্রাথমিক অবস্থায়  বুজতে পারেন না  ।
উপরের ৫টি ভাইরাস ছাড়াও অন্য আরেক ধরনের ভাইরাস আছে যেগুলো অন্যান্য ভাইরাসের সাথে মিল নেই, তাদের কে  জি ভাইরাস বলে ।
যাই হউক যকৃতের প্রদাহ ৯০% হয়ে থাকে ভাইরাস জনিত কারনে এবং বাদ বাকি ১০% হয়ে থাকে বিষ ক্রিয়া জনিত কারনে ,
যেমন-  অটোইমিউনি  হেপাটাইটিস  ( Autoimmune Hepatitis ) , যার প্রকৃত কারন খুঁজে পাওয়া যায়নি বা অনেক সময় বংশগত  ডি এন এ র মিশ্রিত প্রভাবেই হয়ে থাকে । এ ছাড়া  থ্যালাসেমিয়া ও হিমোগ্লোবিন ই-ডিজিজ ইত্যাদি অসুখ জনিত কারনে ও হেপাটাইটিস দেখা দিতে পারে ।
মদ জনিত হেপাটাইটিস  ( Alcoholic Hepatitis ) যারা অতিরিক্ত মদ পান করেন তাদের মধ্যে ২০% বেলায় লিভার হেপাটাইটিস হওয়ার সম্বাভনা আছে- ( ৪–৬০ বয়সেই বেশী হয়ে থাকে )- যকৃতের চর্বি জনিত অসুখের কারনে   (NAFLD)- ড্রাগস হেপাটাইটিস ( Drug-Induced Hepatitis ) অনেক ঔষধ আছে যা দীর্ঘদিন ব্যাবহারের ফলে যকৃতের  মেটাবোলিজম পক্রিয়াকে ব্যাহত করে লিভার হেপাটাটিস অসুখে রূপান্তরিত করে । যেমন halothane, isoniazid, methyldopa, phenytoin, valproic acid, and the sulfonamide drugs ইত্যাদি ।  । ( একমাত্র ভাইরাস জনিত লিভার হেপাটাটিস ছাড়া অন্য কোন কারনে হেপাটাটিস হলে অসুখটির লক্ষন সাথে সাথেই দেখা দিয়ে  থাকে ) ।( Depth Report #75: Cirrhosis )
যৌনমিলনের মাধ্যমে নিম্নের ৩ টি ভাইরাস  সংক্রামিত হতে পারে ঃ
h-10
হেপাটাইটিস  এ (HAV), বি (  HBV)  এবং  সি (HCV) এবং তার মধ্যে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস হচ্ছে সবচেয়ে বেশী ভয়কর যা এইডস ভাইরাসের চাইতে ১০০ গুন বেশী সহজতর অবস্থায় সুস্থ দেহে  সংক্রামিত হয়ে থাকে ।

                             হেপাটাটিস এ ভাইরাস  Hepatitis A virus (HAV )

 

h-13
অসুখটি হেপাটাইটিস এ ভাইরাস দ্বারা যকৃত আক্রান্ত হওয়ার ফলে যে  যে  তীব্র সমস্যার সৃষ্টি হয় তাকেই বুজায় , মুলত ৯০% বেলায় এই ভাইরাসের আক্রমণ ও লক্ষন  ৭/৮ সপ্তাহের উপর থাকেনা এবং সে সময় শরীরের ইমিউনিটি শক্তি নিজে নিজেই তার প্রতিরোধ গড়ে তুলে বিধায় অসুখটি এমনিতেই সেরে যায় , সে জন্য একে সেল্ফ লিমিটিং ডিজিজ বলা হয় ।

১০% মধ্যে  ৪% বেলায় ৭/৯  মাস পর্যন্ত গড়াতে দেখা যায় এবং  সে সময় যকৃতে প্রয়াহের সৃষ্টি করে লিভার ফেইলার হওয়ার সম্বাভনাই  খুব বেশী । অন্য দিকে  ৩% বেলায়  অসুখটি কিছুদিন পর কমে যাওয়ার পর আবারও  ফিরে আসলে মনে করতে হবে উক্ত রুগীর শরীরের  ইমিউনিটি শক্তি হেপাটাইটিস ভাইরাস কে প্রতিহত করতে পারেনাই ।   সে সময় সঠিক চিকিৎসা না হলে  এবং বারে বারে এ রকম দেখা দিলে,   বছর ২/১ এর মধ্যেই উক্ত রুগীর  লিভার কার্সিনোমা অথবা লিভার ফেইলার হতে পারে বিধায়  রুগীকে  আর বাঁচানো সম্বভ হয়না । গর্ভবতী মা  এবং ৬০ এর উপরে যাদের বয়স তারা এই   ভাইরাসে আক্রান্ত হলে জঠিলতা একটু বেশী দেখা দিতে পারে ।

আগেই বলেছি জন্ডিস এবং হেপাটাইটিস দুটি বিষয় – বা জন্ডিস বলতে বুজায় শরীর ও তার রেচন তন্ত্রের নিঃসৃত পদার্থ হলদে হয়ে যাওয়া – অর্থাৎ  যকৃত, পিত্ত থলি বা অন্য যে কোন কারনে রক্তের বিলুরিবিন বেড়ে যাওয়া কেই বুজায় এবং সে জন্য ভাইরাস জনিত যকৃতের প্রদাহে  জণ্ডিসের প্রাথমিক লক্ষন  দেখা দিয়ে থাকে । তাই  জন্ডিসের লক্ষন দেখা দিলে রক্ত ও অন্যান্য  পরিক্ষা নিরীক্ষা  ছাড়া  ভাইরাল হেপাটাইটিস কি না তা নিশ্চিত হওয়া সম্বভ নয় ।  তা ছাড়া অনেকের বেলায় জণ্ডিসের লক্ষন দেখা না দিয়ে ও  নিরবে হেপাটিটিস এ ভাইরাস  যকৃতকে আক্রান্ত করে এবং পরবর্তীতে  গুরতর অবস্থায় জণ্ডিসের লক্ষন দেখা দিতে পারে ।

 

হেপাটাইটিস এ ভাইরাস  শরীরের বাহিরে কতদিন পর্যন্ত বাঁচতে পারে :-
এই ভাইরাসটি খাদ্য, পানি, পায়খানা , বীর্য অথবা ভাসমান যে কোন  কিছুতে ১ মাস পর্যন্ত এবং ৮৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রায়  বেঁচে থাকতে পারে ।

হেপাটাইটিস এ ভাইরাস কীভাবে সংক্রামিত হয় ?

h-12
এ ভাইরাস আক্রান্ত রুগীর ব্যাবহিত কাপড় চোপর, পানি , পায়খানা , খাদ্য ইত্যাদি থেকেই মুলত এর বিস্তৃতি ঘটে থাকে । তৃতীয় বিশ্বের দেশ গুলোতে রুগীর, গোসল ও  পায়খানা থেকেই পুকুর-জলাশয় ইত্যাদিতে এর বেপক বিস্তৃতি ঘটে থাকে । এমন কি আক্রান্ত ব্যাক্তি পায়খানা করার পর হাত ভালভাবে পরিষ্কার না করলে সে যেখানেই হাত দিবে সেখানেই জীবাণুগলো স্থানান্তরিত হয়ে থাকে । এভাবেই জীবাণুটি এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে ফ্লু ভাইরাসের মত ।
ইহা একটি যৌন সংক্রাম জাতীয় অসুখ (STDs)  । সে জন্য আক্রান্ত ব্যাক্তির , বীর্য, রক্ত, রক্তরস অথবা  ঠোঁট- মুখের লালা, আক্রান্ত ব্যাক্তির  ব্যবহৃত ব্লেড, কাঁচি, ক্ষুর , টুথ ব্রাশ ইত্যাদি থেকে ও সুস্থ শরীরে ভাইরাসটি স্থানাতরিত হতে পারে ।
এ ভাইরাস আক্রান্ত ব্যাক্তির সাথে দৈহিক মিলনে শত  ভাগ নিশ্চিত,  সুস্থ  ব্যাক্তি আক্রান্ত হওয়ার ।  বিশেষ করে ওড়াল এবং এনাল সেক্সের মাধ্যমে খুব দ্রুত সুস্থ ব্যাক্তির দেহে তা ছড়িয়ে পরে । এ ক্ষেত্রে কনডম ব্যাবহারে ও তা প্রতিরোধ করা সম্বভ হয়না বিধায় এইডসের চাইতে ও বেশী ছোঁয়াচে  । দৈহিক মিলন সঙ্গীর  যে কোন একজন সহবাসের  ২৮   দিনের ভিতরে  জণ্ডিস অথবা হেপাটাইটিসের লক্ষন দেখা দিলে  যিনি সুস্থ থাকবেন তার ও রক্ত পরিক্ষা করে ভাইরাসটি সংক্রামিত হয়েছে কিনা নিশ্চিত হওয়া উচিৎ ।
রিসার্চ অনুসারে প্রমাণিত ,যে কোন কারন ছাড়াই  ইউরোপ-আমেরিকার দেশ সমুহে  যারা পুরুষ সমকামী অথবা  ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ড্রাগস ব্যবহার করে তাদের ২১% এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত  ।

লক্ষন ঃ

h-16
হেপাটাইটিস এ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হবার ১৪ দিন থেকে ৪৫  দিন  পর্যন্ত এর  তেমন কোন লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয় না বিশেষ করে ৬ মাস বয়েসের  কম  বয়সী শিশুদের বেলায় লিভার ফেইল হওয়ার আগ পর্যন্ত তেমন লক্ষন দেখা না ও দিতে পারে –
পরবর্তীতে  যেসব লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়— অবসাদ অনুভব করা- বমি বমি ভাব হওয়া এবং বমি করা–পেট ব্যথা (পেটের ডান দিকে বুকের নিচে ব্যথা ও অস্বস্থি জাতীয় সমস্যা দেখা দেয় )  — ক্ষুদা মন্দা–হাল্কা জ্বর– গাঢ় রংয়ের প্রস্রাব– মাংসপেশীতে ও জোড়ায় জোড়ায় ব্যথা– গায়ে চুলকানি দেখা দেওয়া– চোখ এবং শরীরের চামড়া জন্ডিসে মত  হলুদ হয়ে যাওয়া এবং প্রস্রাব হুলদে বা ধুয়াটে বর্ণের হওয়া –ডায়রিয়া অথবা ধূসর বর্ণের পায়খানা হওয়া –ইত্যাদি নানা লক্ষন দেখে দিতে পারে ।
৯০% বেলায় আক্রান্ত ব্যাক্তির ভাইরাস এ শরীরের ইমিউনিটি শক্তি ১২ সপ্তাহের  ভিতরেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম বা কারও কারও বেলায় ৬ মাস পর্যন্ত অতিবাহিত হতে পারে ।
( বিদ্রঃ  মনে  রাখবেন অসুখটির লক্ষন দেখা দেয়ার পর যদি  রোগীর জন্ডিস ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাতে থাকে এবং  সে সময় অস্থিরতা , অস্বাভাবিক আচরণ ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে রোগী  অজ্ঞান হয়ে যায়, তখন বুঝে নিতে হবে যে রোগীর লিভারের অবস্থা তেমন ভাল নয় এবং কাল-বিলম্ব না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে অথবা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করাতেই হবে )

 পরীক্ষা-নিরীক্ষা ঃ

h-18
শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় ডান দিকে পাকস্থলীর বিপরীত দিকে একটু চাপ দিলে রোগী ব্যাথা অনুভব করবে সেই সাথে আপনার চিকিৎসক লিভারের অন্যান্য পরিক্ষা নিরীক্ষার কলাকৌশল ব্যাবহার করে কি ধরণের সমস্যা তা বুজার চেস্টা করবেন  । (https://depts.washington.edu/physdx/liver/tech.html )
রক্ত পরিক্ষা ঃ রক্তের ইমিউনগ্লোবিন  এম এন্টিবডির  ( Immunoglobulin M -IgM ) উপস্থিতি বা পজেটিভ মানেই হেপাটাইটিস ভাইরাস এ  নতুন ভাবে সংক্রামিত হয়েছে মনে করা হয় এবং যদি এর উপস্থিতি না থাকে বা নেগেটিভ হয় তাহলে মনে করতে  হেপাটাইটিস ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত নয় ।
সাথে রক্তে ইমিউনিগ্লোবিন  জি  immunoglobulin G – IgG উপস্থিতি বা পজেটিভ  মানেই রোগী বহু আগ থেকেই হেপাটাইটিস এ দ্বারা সংক্রামিত ।
সাথে অবশ্যই এলিভ্যাটেড লিভার এনজাইম বা transaminase enzyme levels টেস্ট করা ভাল । প্রয়োজনে লিভারের সামগ্রিক অবস্থা বুজার জন্য অন্যান্য পরিক্ষা – নিরীক্ষা করার  প্রয়োজন হতে পারে ।

চিকিৎসা

h-19মনে রাখবনে ভাইরাল এ  হেপাটাইটিস চিকিৎসায় ওষুধের কোনো ভূমিকা নেই বললেই চলে। সে জন্য নিজের ইছছা শক্তি দিয়ে যে সকল খাবার খেলে শরীরের ইমিউনিটি শক্তি বৃদ্ধি পায় তা খাওয়ার চেস্টা করা । অর্থাৎ শরীরের ইমিউনিটি শক্তি বৃদ্ধির উপর নিভর করে রোগীর দ্রুত ভাল হওয়ার । সেই  সাথে খুব সতর্কতার সহিত লক্ষ রাখতে হবে খাওয়ার পানি যাতে অবশ্যই ভালো করে ফোটানো ও  টাটকা থাকে   । চাইলে কিছু ভিটামিন জাতীয় ন্যাচারেল ঔষধ এবং গ্লকোজ সেবন করতে পারেন এবং বায়ো  ফার্মা ক্যামস্ট্রির  প্রমান সাপেক্ষ যে সকল ভেষজ লিভারের জন্য ভাল বলে  প্রমাণিত তা সেবন করাতে পারেন। লিভারের ভাইটাল ফোরস বৃদ্ধি করার জন্য  । ( যদি ও ভাইরাস কে  ধ্বংস করা সমবভ নয় )

 

এ সময় রোগীর পথ্য হিসাবে চর্বিজাতীয় খাবার ছাড়া সব ধরণের  খাবার দিতে পারেন । ( চর্বি জাতীয় খাবার লিভারের মেটাবোলিজম প্রক্রিয়া ব্যাহত করে ) অনেকে মনে করেন, জন্ডিস হয়েছে তাই এখন বেশি বেশি ফলের রস ও পানি খেতে হবে এবং হলুদ মরিচ খাওয়া যাবে না ইত্যাদি  যা  রিসার্চ অনুসারে ও  সম্পূর্ণ ভুল ধারনা বরং  এ সব অপরিষ্কার  ঠান্ডা ফলের রসেই হেপাটাইটিস এ সুপ্ত অবস্থায় জীবিত থাকে – তবে এ সময় অবশ্যই প্রচুর পানি পান সহ সহজপাচ্য ও মুখরোচক খাবার ভাল  ।
 ( প্রশ্ন আসবেই জন্ডিস হলে সবাইতো ভাল হইতেছে গাছের লতা পাতা খেয়ে  ?   না !  তা সম্পূর্ণ ভুল একটা শুনা ধারনা থেকে আইডিয়প্যাথিক চিকিৎসা  — সঙ্কেপে ঃ এসব কাল্পনিক বা স্বপ্নে পাওয়া চিকিৎসা ১% ও সত্য নয় — প্রথমত জন্ডিস লক্ষন দেখা দিলেই যে হেপাটাইটিস ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত তাও বলা মুশকিল, দ্বিতীয়ত – ফ্লু ভাইরাসের মত এ  ভাইরাস সমুহ  সুস্থ মানুষকে আক্রমণ করে থাকে ।
। গবেষণা অনুসারে দেখা যায় যখন একজন সুস্থ মানুষ কে হেপাটাইটিস এ আক্রান্ত করে তখন ৯১% বেলায় শরীরের ইমিউনিটি শক্তি তা প্রতিহত করে এবং শেষ পর্যন্ত উক্ত হেপাটাইটিস এ ভাইরাস শরীরের পক্কের শক্তি হিসাবে কাজ করে থাকে  সারা জীবন  এবং তাও ২৮ দিনের ভিতর রিকভার করে থাকে ।  এরপর  ও যদি দেখা যায় ভাইরাস সমুহ নেগেটিভ হয়নাই তাহলে সে ক্ষেত্রে ৯০% বেলায় মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং এর কয়েক মাসের মধ্যেই লিভারের কোষ সমুহ ধ্বংস করে লিভার ফেইলার বা ক্যান্সারের সৃষ্টি হয় । ড্রাগস রেসিস্ট্যান্স পদ্ধতির নিয়ম অনুসারে যে কোন ঔষধ   ব্যাক্টোরিয়া সম্পূর্ণ ধংস করতে পারলেও  ভাইরাস ধংস করা যায়না বরং ভাইরাস কে ধ্বংস করতে হলে উক্ত শরীরের সেই ভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষ্যামতা গড়ে তুলে প্রতিরোধ করতে হয় , যাকে ভ্যাকসিন বলতে পারেন । তাই  প্রাথমিক ভাবে কেউ ভাইরাল এ পজেটিভ হলে  পরিষ্কার ও মান সম্মত খাবারের মাধ্যমে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষ্যামতা বৃদ্ধি করাই হল সবচেয়ে বুদ্ধি মানের কাজ । অর্থাৎ এ সময় রোগীকে তৈলাক্ত ও চর্বি জাতীয় খাবার বাদে  সব কিছুই  খাওয়ানো যাবে ( তৈলাক্ত চর্বি যুক্ত খাবার লিভার মেটাবলজিম প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে ) , যেমন  ভাত, রুটি, সুজি, বার্লি, শাক-সবজি, গ্লুকোজ, মাখন তোলা দুধ, ছানা, চর্বিহীন মাছ সহ খসহজপাচ্য ও মুখরোচক  বেশী করে খেতে দিন, সেই সাথে অবশ্যই প্রচুর পানি অথবা গ্লকুজ বা ডাবের পানি খেতে দেওয়া ভাল  । জন্ডিস হলে হলুদ বা ঐ জাতীয় স্পাইস খাওয়া যায়না তাও ঠিক নয় বরং হলুদ একটি ভাল এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট । এর পর ও জণ্ডিসের মত লক্ষন ভাল না হলে এবং আক্রান্ত রোগী অস্থিরতা, অস্বাভাবিক আচরণ করলে বা অজ্ঞান হলে মনে করতে হবে মারাত্মক জরুরি অবস্থা ? দেরি না করে অনতিবিলম্বে হাসপাতাল অথবা লিভার বিশেষজ্ঞের পরামর্ষ নেওয়া ভাল । )

১-
৯০% রোগী ২৮ দিনের ভিতর এমনিতেই ভাল হয়ে যান +  ৩% রোগীর বেলায় হেপাটাটিস এ রিকভার করতে ২ ৮৮ দিন থেকে  ৯ মাস  পর্যন্ত সময় লাগতে পারে তবে যদি সঠিক চিকিৎসা হয় তাহলে ভয়ের  কিছু নাই  এবং বাকি ৪% বেলায় রোগী সুস্থ হতে পারেন না বা দীর্ঘ মেয়াদী ভাইরাল হেপাটাইটিসে ভুগে শেষ পর্যন্ত লিভার সিরোসিস বা ঐ জাতীয় কিছু হয়ে মৃত্যু যাত্রী হতেই  হয় , যদিও  রোগীর লিভার ট্রান্সপারেন্সি করে কয়েক বছর পর্যন্ত ঠিকিয়ে রাখা যায় ।
২-
মনে রাখবেন হেপাটাইটিস এ  দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পর আক্রান্ত রুগীর ইমিউনিটি শক্তি বৃদ্ধি করা ছাড়া আর অন্য কোন চিকিৎসা নাই বিধায় , চর্বি মুক্ত পরিষ্কার ও পুস্টি বর্ধক খাবার অত্তান্ত জরুরী  ।  পরিবারের যে কেউ হেপাটাইটিস এ  পজেটিভ হলে তিনির সাথে সম্পর্ক যুক্ত সকলের হেপাটাইটিস এ ভাইরাসের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন সাথে সাথে নেওয়া ভাল, কারন হেপাটাইটিস এ পজেটিভ হওয়ার পর ভ্যাকসিন আর কাজ করেনা –  এবং সেই সাথে রোগীর লক্ষন অনুসারে আপনার চিকিৎসক সিম্পটম্যাটিক চিকিৎসা দিতে পারেন , এ ক্ষেত্রে অবশ্যই সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে লিভারের জন্য ক্ষতিকারক যে কোন ভেষজ অথবা ঔষধ ব্যাবহার সম্পূর্ণ নিষেধ । কোনো কোনো অঞ্চলে কবিরাজি ঝাড়ফুঁক, নাকে নস্যি দেয়া, লতাপাতা খাওয়া সহ  নানাবিধ চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলিত যা ভাইরাস জাতীয় অসুখের তীব্রতা বাড়িয়ে দিতে পারে বা চিকিৎসা বিজ্ঞানে ইহা সম্পূর্ণ অ-প্রমাণিত হিসাবেই বিবেচিত । মোট কথায় জণ্ডিসের মত লক্ষন দেখা দেওয়ার পর সাথে সাথেই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের সরনাপন্ন হয়ে কেন হইতেছে তা খুঁজে বাহির করা উচিৎ । একি সাথে  সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে, প্রচুর বিশুদ্ধ পানি পান করবেন সে সময় মদ এবং বাজারের নানা ক্যামিকেল জাতীয় পানীয়  পান করা  থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে ।

বিদ্রঃ  কিছু নিত্য  প্রয়োজনীয় ঔষধ আছে যা লিভারের জন্য খুবি মারাত্মক ক্ষতিকারক  এবং তা ব্যাবহারের অভ্যাস থাকলে আপনার চিকিৎসকের পরামর্ষ অনুসারে বিকল্প ব্যাবস্থা গ্রহন করতে হবে – যেমন, ব্যাথা নাশক ঔষধ (NSAIDs ) , বাত জাতীয় অসুখের ঔষধ, ভিটামিন এ , Tylenol, Piper methysticum  ইত্যাদি ।

ভেষজ  ( Herbs ) ঃ

h-20
সুত্রঃ  কোন ভেষজ ই  হেপাটাইটিস ভাইরাস কে ধ্বংস করেনা , তারপর ও গবেষণা অনুসারে কিছু ভেষজ আছে যা শরীরের ইমিউনিটি শক্তি বৃদ্ধি কারক ইহা সত্য এবং সে জন্য লিভারের বল বর্ধক হিসাবে বায়ো-মেডিক্যাল রিসার্চ অনুসারে যে সকল ভেষজ কার্যকর আমি তাই নিচে তুলে ধরলাম –
( বাংলাদেশে এই ভেষজ সমুহ না পাওয়া যায় কিনা আমার জানা নেই , যদি না পাওয়া  যায়  তাহলে অনলাইনে চেক করে কিনে নিতে পারেন , ইউকে অ্যামেরিকা বা চায়না ভেষজ সমুহ মান উন্নত ও মান সম্মত  । অনুরুধ থাকবে  তা যেন স্বীকৃত কোম্পানির হয় )
পৃথিবীতে লিভারের প্রতিরোধ ক্ষ্যামতা বৃদ্ধি কারক হিসাবে ঋষি মাশরুম ই সবচেয়ে ভাল একটি হারবাল ভেষজ Reishi mushroom (Ganoderma lucidum), সে জন্য ঋষি মাশরুমের পাউডার বা ক্যাপসুল সেবন করতে পারেন লিভারের ইমিউনিটি শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য ।  জি লোসিডিয়াম একমাত্র ঋষি মাশরুমেই সবচেয়ে বেশী থাকে  ( সেবন ও বিধি নিষেধ ইত্যাদি  বিস্তারিত ঋষি মাশরুম ঔষধের লিফলেট থেকে জেনে নিন ) – যা ক্যানসার প্রতিরোধ করার জন্য বিশেষ একটি বায়বীয় উপাদান —
রিসার্চ পেইজ ( https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmedhealth/PMH0046740/ )
h-21
মিল্ক থিস্লে ঃ Milk thistle (Silybum marianum): এই  ভেষজ টি  রোমান যুগ থেকেই লিভারের প্রতিরোধ ক্ষ্যামতা বৃদ্ধির জন্য ব্যাবহার করা হইতেছে এবং আধুনিক বিজ্ঞানে ও তা স্বীকৃত  by the U.S. Agency for Healthcare Research and Quality (AHRQ), …।। ( সেবন ও বিধি নিষেধ ইত্যাদি  বিস্তারিত ঔষধের লিফলেট থেকে জেনে নিন )
রিসার্চ পেইজ ( http://umm.edu/health/medical/altmed/herb/milk-thistle )
কাল জীরার তৈল ঃ Black Seed Oil – যদি ও ভেষজটি  ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের জন্য বেশ উপকারী তাথে সন্দেহ নেই তবে যে সকল  লিভার হেপাটাইটিস  রোগীর রক্তে কোলেস্টারলের মাত্রা বেশী   তাদের বেলায় , তা সেবনে ভালর চাইতে খারাপ রিজাল্ট বেশী দেখা দিতে পারে । তাই রক্ত পরিক্ষা না করে তা সেবন করা মোটেই উচিৎ নয় ।
h-22
অলিভ লিফ ক্যাপসুল ( Olive Leaf Capsules )- এই ভেষজ টি নিঃসন্দেহে লিভারের জন্য  একটি এন্টি- ব্যাক্টোটোরিয়েল, এন্টি-ফাঙ্গাল এবং এন্টি- ভাইরাল  ভেষজ হিসাবে স্বীকৃত এবং খুবি ভাল একটি এন্টি-অক্সাইডেন্ট এজেন্ট  , তাই ওলিব লিফ এক্সট্র্যাক্ট ক্যাপসুল সেবন করতে পারেন –  জাপানের বাজারে আরেকটু উন্নত পর্যায়ে জ্যাল অক্সিজেন ক্যাপসুল বা পাউডার নাম দিয়ে বাজারজাত করা হয়েছে  ( Zell Oxygen )  .. ( সেবন ও বিধি নিষেধ ইত্যাদি  বিস্তারিত ঔষধের লিফলেট থেকে জেনে নিন )
Licorice root (Glycyrrhiza glabra): ………………………।। ( পরবর্তী আপডেটের অপেক্ষায় )
এ ছাড়া আর অনেক ভেষজ আছে যা লিভারের জন্য ভাল হলে ও উপরের ভেষজ সমুহ আন্তর্জাতিক বায়ো-রিসারচ অনুসারে লিভারের এন্টি-বডি শক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রমনাইত ভেষজ ।
৩-হেপাটাইটিস এ ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়মাবলী ঃ ( রক্ত পরিক্ষায়  হেপাটাইটিস ভাইরাস পজেটিভ হলে  ভ্যাকসিন কাজ করবেনা )
h-23
Hepatitis A vaccines: Recommended dosages and schedules
vaccine age group volume # doses dosing intervals
Havrix
(GlaxoSmithKline)
1 through 18 yrs 0.5 mL 2 0, 6–12 mos
19 yrs and older 1.0 mL 2 0, 6–12 mos
Vaqta
(Merck)
1 through 18 yrs 0.5 mL 2 0, 6–12 mos
19 yrs and older 1.0 mL 2 0, 6–12 mos
অথবা ভিজিট করুন নিচের লিঙ্কে (  http://www.immunize.org/catg.d/pHYPERLINKhttp://www.immunize.org/catg.d/p2081.pdf&#8221; )

প্রতিরোধ ঃ

জীবন যাপন পদ্ধতি ( স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, খাবার ভালো করে সিদ্ধ করা, খালি,বাসী,পঁচা খাবার এবং হোটেলের খাবার না খাওয়া, রান্না করার আগে হাত ধোয়া, খাওয়ার আগে হাত ধোয়া, দূষিত পানি না খাওয়া, পায়খানা ব্যবহারের পর হাত ভালোমত পরিষ্কার করা ইত্যাদি )
যৌন সম্পর্ক ঃ (  আক্রান্ত ব্যাক্তির সাথে সহবাস না করা বা তার ব্যাবহারিক সব কিছু পরিষ্কার করেই ব্যবহার করা , হেপাটাইটিস এ দ্বারা আক্রান্ত ব্যাক্তির রক্ত দান থেকে বিরত থাকা বা তার ব্যাবহারিক বেল্ড, ক্ষুর , সিরিঞ্জ ইত্যাদি ব্যাবহার নাকরা , এমন কি  উক্ত ব্যাক্তির খাবার অন্য কেউ না খাওয়া ইত্যাদি )
সামাজিক ভাবে ঃ আক্রান্ত ব্যাক্তি কোন অবস্থায় যেন বাহিরের পরিবেষে গোসল না করেন বা উক্ত ব্যাক্তির পায়খানা ভাসমান খাল বিলে যেন না ছড়ায় সেই দিকে খেয়াল রাখা…।  ইত্যাদি , কেননা বাঙ্গালদেশ তথা তৃতীয় বিশ্বের দেশ সনুহে হেপাটাইটিস ভাইরাস ৯০% সংক্রামিত হয়ে থাকে দূষিত পানি ও খাবার থেকে এবং ১০% আক্রান্ত হয়ে থাকেন যৌন সহবাস জাতীয় কারনে  —— ধন্যবাদ    —–

 

( Created By Dr.Helal Kamaly ( MPH, UK ) Hon PhD … Last pt ( PHMR )
ৃSupporting and reference  Help :

50 years of liver research: BMC Medicine joins ILC 2016


Ferrucci LM, Bell BP, Dhotre KB, et al. Complementary and alternative medicine use in chronic liver disease patients. J Clin Gastroenterol. 2010;44(2):e40-e45.
Ferenci P, Scherzer TM, Kerschner H, et al. Silibinin is a potent antiviral agent in patients with chronic hepatitis C not responding to pegylated interferon/ribavirin therapy. Gastroenterology. 2008;135(5):1561-7.
Firpi RJ, Nelson DR. Current and future hepatitis C therapies. Arch Med Res. 2007;38(6):678-90.
Gish RG. Improving outcomes for patients with chronic hepatitis B. Hepatol Res. 2007;37(s1):S67-S78.
Goldman. Goldman’s Cecil Medicine. 24th ed. Philadelphia, PA: Elsevier Saunders. 2011.
Gorban EM, Orynchak MA, Virstiuk NG, Kuprash LP, Panteleimonov TM, Sharabura LB. [Clinical and experimental study of spirulina efficacy in chronic diffuse liver diseases.] Lik Sprava. 2000(6):89-93.
Honer zu Siederdissen C, Manns MP, Cornberg M. Which treatment options are validated for chronic viral hepatitis? Internist (Berl). 2013;54(12):1427-8.
Hou JK, Velayos F, Terrault N, Mahadevan U. Viral hepatitis and inflammatory bowel disease. Inflamm Bowel Dis. 2010;16(6):925-32.
Langmead L, Rampton DS. Herbal treatment in gastrointestinal and liver disease–benefits and dangers. Aliment Pharmacol Ther. 2001;15(9):1239-52.

ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস (Trichomonas vaginalis) – ( যৌন রোগ পর্ব -৬ )


ভুমিকা ঃ

t 01

ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস যৌন জীবাণুর দ্বারা অনুমানিক সারা বিশ্বে ১৭০ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত – এটি প্যারাব্যাসিলাইটস শ্রেণীর অন্তরভুক্ত ( parabasalids) এক কোষী পরজীবী প্রাণী – জীবাণুটি দেখতে ডিম্বাকৃতির এবং শ্বেতকণিকার চেয়ে কিছুটা বড়। ( about 10-20 μm long and 2-14 μm wide—) – এটি পরজিবি জীবাণু হিসাবে রক্তের হুয়াইট সেল সমুহ কে ধ্বংস করতে থাকে , যার অবস্থান মহিলাদের যোনী, জরায়ুর মুখ ও কিডনিতন্ত্রের নিচের অংশ ও পুরুষের মুত্রনালী, বীর্য ও প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডে দেখা যায় -মাঝে মধ্যে জীবাণুগুলোর লিঙ্ক মুখ গহব্বর এবং পায়ু পথে দেখা গেলেও সেখানে দীর্ঘ সময় বাঁচেনা – আমারা মজা করে ওকে যৌন ছারপোকা বলতাম । কারন অসুখটি পুরুষের চাইতে মহিলাদের ক্ষতি বেশী করে বা এই জীবাণুর আক্রমণে মহিলাদের শ্বেতস্রাব জাতীয় অসুখের বেশী লক্ষন দেখা দেয় বিধায় একে কেউ কেউ ট্রিচ বা নির্যাস বলে থাকেন ।

 

 

কীভাবে সংক্রামিত হয় ঃ

t 03
সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থান অনুসারে একেক অঞ্চল বা দেশে একেক রকমের হলেও , যারা মহিলা সমকামী, ভাসমান পতিতা, বা যে সকল পুরুষ বা মহিলা গোফনে যৌন সঙ্গির পরিবর্তন করে , তাদের সাথে যৌন মিলনে সুস্থ ব্যাক্তির দেহে সংক্রামিত হয়ে থাকে । এক কথায় অবৈধ যৌন মিলনের মাধ্যমেই জীবাণুটি বেশী সংক্রামিত হয় এবং তার মধ্যে সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকেন সমাজের অর্ধ শিক্ষিত রক্ষণশীল পুরুষ শাসিত নারীরা । তা ছাড়া যদি উক্ত মহিলা গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে অসুখটি দ্রুত গর্ভপাত অথবা গরভস্থ সন্তান ক্ষিন জন্মা হওয়ার সম্মবাভনা বেশী আছেই ।
অনেক মহিলার যৌনাঙ্গে সুপ্ত অবস্থায় জীবাণুটি অনেকদিন লুকিয়ে থাকতে পারে বিধায় ৭৪% বেলায় মহিলারাই ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণুর আশ্রয়কারী এবং বিপরীত দিকে অসুখটি ৮০% বেলায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থনাতরিত হয় পুরুষের মাধ্যমে অর্থাৎ সংক্রামণকারী –
জীবাণুটি নতুন ভাবে সংক্রামিত হওয়ার পর, পুরুষ বা নারী কেউ তেমন একটা বুজতে পারেন না, তার কারন সামান্য চুলকানি ও প্রস্রাবে অল্প জ্বলা যন্ত্রণা ছাড়া অনেকের বেলায় তেমন একটা লক্ষন দেখা যায়না, সে জন্য জিবানুটিকে অনেকের অজান্তেই লালন পালন করে থাকেন ।

 

যৌন মিলন ছাড়াও যে ভাবে জীবাণুটি সংক্রামিত হতে পারে –

t 1
মহিলাদের মাসিক চলাকালীন সময়ে মহিলাদের কাছ থেকে যৌন মিলন ছাড়া ও তার মাসিকের ব্যাবহার কৃত কাপড় চোপড় বা উক্ত জীবাণু আক্রান্ত ব্যাক্তির জীবাণুযুক্ত টয়লেট পেপার, টাওয়াল, নোংরা কাপড় পরলেও সুস্থ দেহে সংক্রামিত হতে পারে -এমন কি উক্ত জীবাণু আক্রান্ত ব্যাক্তির ব্যাবহার কৃত গোসল বা সাওারের পানি থেকেও সুস্থ ব্যাক্তি আক্রান্ত হতে পারেন – ।
মোট কথায় জীবাণুটি স্যাঁতসেঁতে ও আর্দ্র পরিবেষে ৬ ঘন্টা এবং প্রস্রাব, পানি ও বীর্যতে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে বিধায় গামছা, ভিজা পোশাক, অথবা টয়লেট আসন ইত্যাদি থেকে যৌনাঙ্গ এলাকায় সংক্রামিত হতে পারে , যার পরিমাণ ২১% ।

 

 

লক্ষন ঃ-

t 4

প্রাথমিক অবস্থায় ( পুরুষ )
ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণু সংক্রামণের লক্ষন প্রাথমিক লক্ষন ৪-২৮ দিনের ভিতর দেখা দিতে পারে যা পুরুষের বেলায় প্রসাবের রাস্তায় সামান্য পরিমাণ জ্বালা-যন্ত্রণা ও  সামান্য চুলকানি ছাড়া আর তেমন কিছু দেখা যায়না । কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় গুরত্ত না দিলে  পরবতিতে বিশেষ করে এর সাথে অন্যান্য ভাইরাস ব্যাক্টোরিয়া যুক্ত হয়ে (  মাইকোপ্লাসমা হোমিনিস, ইউরিয়াপ্লাসমা ইউরিয়া লাইটিকাম, গনোকক্কাস, ক্লামাইডিয়া, হারপিস সিমপ্লেক্স ইত্যাদি  ) যুক্ত হয়ে  অসুখটিকে গুরুত্বর পর্যায়ে নিয়ে যায় ।

 

সেকেন্ডারি পর্যায়ের লক্ষন ঃ

t 08

পুরুষের বেলায় ঃ- পুরুষের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের নালির অগ্রভাগে লক্ষ্য করলে প্রদাহজনিত লালচে ভাব এবং প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া বা যন্ত্রণা অনুভূত হওয়া সহ মূত্রনালি তে ইনফেকশন দেখা দিয়ে থাকে । সেই সাথে সাদা পানির মত পিচ্ছিল পদার্থ বের হওয়া বা সকালের প্রস্রাবে খুবী অল্প হলদে আঠালো অল্প পুজ দেখা দিতে পারে, বা অনেকে প্রস্রাব বন্ধ হওয়ার মত ভাব অনুভব করে থাকেন – যার মধ্যে ১২% বেলায় জীবাণু সমুহ প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড কে আক্রমণ করে প্রস্টাইটিস জাতীয় অসুখের সৃষ্টি করে ।

 

 

মহিলাদের বেলায় ঃ

t 09
প্রাথমিক ভাবে ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণু সংক্রামন হওয়ার পর যোনির নিঃসরণ যা পাতলা থেকে শুরু করে হলদে রঙের হতে পারে। যোনিপথের চুলকানি ( বিশেষ করে যোনির ভুলবা এবং লেবিয়াতে চুল্কানির পরিমাণ বেশী দেখা দেয় ) – তলপেটের ব্যাথা, ঘন ঘন প্রসাব হওয়া এবং জ্বালা যন্ত্রণা সহ যৌনমিলনের সময় ব্যথা এবং যোনীদ্বারে ফোলা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে । সে সময় সাময়িক ঔষধ সেবন অথবা শরীরের এন্টিবডির কারনে কিছুদিন পর অসুখটি এমনিতেই কমে গেলেও পরজীবী হিসাবে যৌন তন্ত্রে থেকে যায় এবং সুস্থ ব্যাক্তির দেহে সংক্রামিত করে থাকে । পরবর্তীতে যখন অন্যান্য জীবাণু এর সাথে মিলিত হয় তখন দেখা দেয় শ্রী -রোগ জাতীয় নানা সমস্যা বিশেষ করে ইউ টি আই এবং ও টি আই জনিত ইনফেকশন ইত্যাদি ।

 

অসুখটি ক্রনিক পর্যায়ে চলে গেলে যা দেখা দেয় ঃ

t 010

যোনি স্রাব যাকে সাধারণ ভাবে অনেকে লিউকোরিয়া মনে করেন , তা হলুদ, সবুজ বা পাতলা ধূসর বর্ণের এবং মাছের আচের গন্ধের মত দুর্গন্ধ মনে হয় । সেই সাথে তলে পেটের ব্যাথা বিনা কারনেই বৃদ্ধি পায় , বিশেষ করে মাসিক স্রাবের সময় বেশী বৃদ্ধি পায় এবং প্রস্রাব করতে জ্বালা পোড়া সহ প্রস্রাবের নালীর ভিতর ইনফেকশন বাড়তে থাকে ( ইউ টি আই এবং ও টি আই জাতীয় অসুখের প্রদাহ বৃদ্ধি পায় ) একি সাথে যোনির ভিতরের ফোলা বৃদ্ধি পেয়ে জরায়ুর সারভিক্সের মুখে ইনফেকশন এবং সেখানে চুলকানি অনুভুত হতে পারে । সে সময় যোনিপথ পরীক্ষা করলে প্রদাহের কারণে ফোলা লালচে ভাব দেখা যায় , যা সামান্য একটু আঘাতেই রক্ত ঝরতে পারে এবং ভেতরে যে নিঃসরণ স্রাব দেখা যায় তা পানির মতো এমনকি চুনের পানির মতো দেখা যেতে পারে। উক্ত মহিলাদের ফ্যালোপিয়ান টিউব ইনফেকশন সহ জরায়ুর মুখে ক্যানসার জাতীয় অসুখ হওয়া এমন অবাস্থব কিছু নয় বা উক্ত মহিলারা এইচ আই ভি ভাইরাসের স্বীকার বেশী হয়ে থাকেন ।
সেই সাথে নিয়ম অনুসারে পর্যায়ক্রমে গন-কক্ষাস , ইস্ট ভাইরাস বা ক্যান্ডিডা জীবাণু যুক্ত হয়ে স্থায়ী ভাবেই পুরাতন শ্বেতস্রাব জাতীয় অসুখের লক্ষন সহ হাজার ও সমস্যা তৈরি করে এবং তখন অসুখটি সম্পূর্ণ সুস্থ হতে কয়েকমাস থেকে বছর ও চলে যেতে পারে ।
গবেষণা অনুসারে দেখা যায় জীবাণুটি সংক্রামণের পর মহিলাদের যৌনাঙ্গে ( his structure allows the protist to attach to and tear the urethra or vaginal walls) কয়েক মাস বা বছর পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় পরজীবী হিসাবে বসবাস করে থাকে এবং সহবাসের মাধ্যমে তা সুস্থ দেহে সংক্রামিত হতে থাকে কিন্তু পুরুষের বেলায় সুপ্ত অবস্থায় ২৮ দিনের বেশী থাকতে পারে না – গবেষণা অনুসারে আরও দেখা যায় স্বল্প উন্নত দেশ সমুহে, অসুখটির প্রাইমারী লক্ষন দেখা দেওয়ার পর ৩১.২০% বেলায় সঠিক মান সম্মত এন্টিবায়োটিক , সঠিক ডোজে ঔষধ সেবন না করার ফলেই জিবানুটি শরীরে থেকে যায় এবং পরবর্তীতে অন্যান্য সংক্রামণ জনিত অসুখের সাথে মিলিত হয়ে অসুখটির আত্মপ্রকাশ করে , যার মধ্যে গনরিয়া ও মহিলাদের শ্বেতস্রাব বা লিউকোরিয়া জাতীয় অসুখের লক্ষন সহ জনন জনন তন্ত্রের অন্যান্য মারাত্মক অসুখ দেখা দিয়ে থাকে । ( ডাঃ হেলাল, পাবলিক হেলথ এন্ড মেডিঃ সাইন্স )

আমার ব্যাক্তিগত দৃষ্টিতে ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণু সংক্রামিত মহিলাদের সন্তান ধারন করা ঠিক নয় ! কারন – উক্ত মহিলা সময়ের আগে সন্তান প্রসব অথবা থ্রেটেন্ড এবরশন হওয়ার ঝুঁকি বেশী থাকে ( PROM – উক্ত জীবাণুগুলো জরায়ুর মুখ কে ছিদ্র করে ফেলে বিধায় গর্ভথলীর পানি ফুটো হয়ে বের হয়ে যায় ) – আর যদি ঠিক সময় মত প্রসব হয় ও তাহলে উক্ত শিশুটির ওজন অতা্ন্ত কম হবে এবং সেই সাথে শিশুটির নিউমোনিয়া , ব্রংকাইটিস, মুখের ঘা সহ আজীবন পুস্টিহিনতায় ভুগতে পারে । তবে চাইলে বিশেষজ্ঞের পরামর্ষে সঠিক সময়ের আগে সিজারিয়ান অপারেশন করে শিশুটিকে ক্ষীণকার প্রজন্ম থেকে রক্ষা করা সম্বভ । ( যদি ও বিষয়টি অনেক ব্যায়বহুল )

 

 

মহিলাদের বেলায় একটা ভুল ধারনা প্রচলিত শ্বেতপ্রদর বা লিউকোরিয়া নিয়ে ঃ

t 011
মহিলাদের লিউকোরিয়া বা শ্বেতপ্রদর জাতীয় অসুখ বৃদ্ধি পাওয়ার আরেকটি অন্যতম কারন এই ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণু – মুলত মহিলাদের লিউকোরিয়া বা শ্বেতপ্রদর বলতে বুজায় যোনিপথ , জরায়ু বা তার জনন তন্ত্রের যে কোন একটা প্রদাহ জনিত অসুখের একটা লক্ষন – ৭০% বেলায় ট্রাইকোমোনাস ভ্যাজিনালিস এবং ক্যানডিডা অ্যালবিকানস এই দুটি জীবাণুর সাথে ইস্ট ও অন্যান্য ব্যাক্টোরিয়া যুক্ত হয়ে এই সাদা স্রাব উৎপাদিত হয় এবং যার মধ্যে ৯০% যৌন জীবাণু জনিত কারনেই অসুখটি হয়ে থাকে ( বিস্তারিত শ্রী -রোগ পর্বে তুলে ধরা হবে, কীভাবে এই শ্বেতস্রাবের উৎপত্তি হয় বা শরীরের কি কি ক্ষতি করে ইত্যাদি ) মুলত ইহা অসুখ নয় বরং অন্য অসুখের লক্ষণ ।

 

 

পরীক্ষানিরীক্ষা ঃ

t 012
প্রথমত ফিজিক্যালি পরিক্ষা হিসাবে একজন শ্রী- রোগ চিকিৎসক যোনির ভিতরের অবস্থা দেখেই বলতে পারেন ইহা ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত কি না – বিশেষ করে যোনির ভিতর বা জরায়ুর মুখে লাল অসংখ্য ফুস্কুড়ি সহ যোনির দেওয়াল ফোলে থাকে, সেই সাথে তাথে সামান্য চাপ দিলে খুব সহজেই রক্ত বেরিয়ে আসে ইত্যাদি ছাড়া ও রোগীর অসুখের লক্ষন ( উপরে এবং ছবি দেখে মিলিয়ে নিন ) বিদ্যমান থাকে –

এ রোগটি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সাধারণত ল্যাবরেটরি পরীক্ষার সাহায্য ছাড়াই চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে ( মেডিক্যাল আইন অনুসারে যদিও নিয়ম সঠিক পরিক্ষার পর ঔষধ প্রয়োগ করা ) তবে অনুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্য রোগটি খুব সহজেই শনাক্ত করা যায় । কিন্তু যদি তা 104 organisms/mL আয়াতনের নিচে হয় তাহলে ধরা পড়েনা অন্তত লিম্পসাইটের সমান (10 µm to 20 µm) হলে জীবাণুটি সুন্দর ভাবেই দেখা যায় – অথবা এন্টিজেন টেস্ট (antibodies bind if the Trichomonas parasite is present, causing a color change that indicates infection) অথবা সর্বশেষ আধুনিক পদ্ধতিতে হিসাবে Trichomonas DNA করে নিশ্চিত হতে পারেন এবং একি সাথে মহিলাদের বেলায় জরায়ুর মুখে ক্যানসার বা ঐ জাতীয় সেলের সন্দেহ দুর করার জন্য পেপ-টেস্ট করে নেওয়া ভাল ।
যিনি আক্রান্ত হবেন তার স্বামী বা শ্রী-কে ও পরিক্ষার প্রয়োজন হতে পারে , তিনিও অন্য কোন যৌন জীবাণুর দ্বারা সংক্রামিত কি না ?

 

 

চিকিৎসা ঃ

t 07
চিকিৎসার আগে জীবাণু বহনকারী নারী বা পুরুষের ব্যাবহারিক কাপড় চোপর একটু সাবধানে সরিয়ে রাখা উচিৎ কেননা উক্ত কাপড়ে জীবাণুগুলো আদ্র পরিবেষে ৬ /২৪ ঘন্টা পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে বিধায়- অন্য কেউ তা ভালভাবে পরিষ্কার না করে, পরিধান করা মোটেই উচিৎ নয় এবং সেই সাথে তাও মনে রাখতে হবে যেহেতু ইহা ব্যাক্টোরিয়া ( প্রটোজোয়া ) জনিত সংক্রামণ তাই এন্টিমাইক্রোবিয়াল প্যারাসাইটিক্স ড্রাগস ছাড়া অন্যান্য সকল পদ্ধতির চিকিৎসা বা ঔষধ এই অসুখটির বেলায় সম্পূর্ণ অকার্যকর ( ডাঃ হেলাল )

এন্টিমাইক্রোবিয়াল প্যারাসাইটিক্স ড্রাগস হিসাবে চিকিৎসকের পরামর্ষ অনুসারে , প্রাইমারী চিকিৎসা হিসাবে – মেট্রোনিডাজোল গ্রোফের ঔষধ পূর্ণ ডোজ স্বামী শ্রী উভয়য়ের সেবন করে যাওয়া উচিৎ । (৪০০ মিলিগ্রামের ট্যাবলেট প্রতিদিন ২টি করে ৫ থেকে ৭ দিন )। দুধ দাতা মায়ের বেলায় ঔষধ টি সেবন করলে ১০/১২ ঘন্টা পর সন্তান কে দুধ দেওয়া উচিৎ —
অথবা আপনার চিকিৎসকের পরামর্ষে টিনিডাজল গ্রোফের ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন তবে দুধ দাতা মা এবং গর্ভবতীর বেলায় তা সেবন করা নিষেধ ।

সেই সাথে চুলাকানি থাকলে ক্লোট্রিমাজল ১% ভ্যাজিনাল ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন অথবা যোনিতে ক্লোট্রিমাজল ভ্যাজিনাল ট্যাবলেট রোজ দুবার ছয় দিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন ।
মেডিক্যাল জার্নালের রিপোর্ট অনুসারে দেখা যায়, তৃতীয় বিশ্বের কয়েকটি দেশে পুরাতন রোগীদের বেলায় মেট্রোনিডাজল গ্রোফের ঔষধ উক্ত জীবাণুকে ধ্বংস করতে অনেকের রেসিস্টেন্স ক্যাপাসিটি ঠিক মত কাজ করেনা তখন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্ষে টিনিডাজলের সাথে প্যারোমমাইসিন ( paromomycin in combination with high-dose tinidazole ) সেবন করে ৯৫% বেলায় সুস্থ হওয়ার কথা — এরপর ও যদি কাজ না হয় তাহলে বিশেষজ্ঞরা এন্টি-প্যারাসাইটিক্স ড্রাগস হিসাবে নিটাজক্সনাইড ( একটু বেশী ব্যায়বহুল বা এন্টিভাইরাল হিসাবে ও ঔষধ টি বেশী কার্যকরি nitazoxanide ) গ্রোফের ঔষধ সেবন সহ অন্যান্য ক্রিম বা ভ্যাজিনাল ট্যাবলেট ব্যাবহার করে ১০০% সুস্থ হওয়ার কথা ।
একি সাথে বিকল্প পদ্ধতি অনুসারে শরীরের এন্টিবডি বৃদ্ধি করার জন্য এন্টিওক্সাইডেন্ট খাবার সহ ভিটামিন এ, সি, ই, এবং জিঙ্ক সাপ্লিমেন্টারী ঔষধ সেবন করলে ভাল । সেই সাথে মিস্টি ও শরকরা জাতীয় খাবার একটু কমিয়ে খেতে হবে ……………।।

 

সাবধানতা ঃ

t 014

ঔষধ সেবন করার পরও কোন অবস্থায় সেইফ ম্যাথড ছাড়া পূর্ণ ২৮ দিন সহবাস করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং অসুখটি দীর্ঘদিনের পুরাতন হলে জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন করা থেকে বিরত থাকা ভাল যদি ইস্ট ভাইরাস সাথে সংযোক্ত থাকে , সেই কারনে —

 

 

 

রিসার্চ এবং ফলাফল ঃ

t 5
১- মেডিক্যাল সাইন্স এন্ড রিসার্চের গবেষণা অনুসারে দেখা যায় কনডম বা ঐ জাতীয় ব্যাবস্থা জন্ম নিয়ন্ত্রণ ব্যাবস্তায় শত ভাগ কার্যকরী হলে ও যৌন জীবাণু প্রতিরোধের বেলায় শতভাগ প্রতিরোধক নয় , বিশেষ করে ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণু মহিলাদের বেলায় ৮৯% প্রতিরোধক , তার কারন বেশীরভাগ একটিভ জীবাণু মহিলাদের ক্লিটরের নিচে ভুলবা তে অবস্থান করে বিধায় কনডম ব্যবহারে যৌন মিলনের সময় সরাসরি লিঙ্গে আক্রমণ করতে না পারলেও ভুলবা থেকে পুরুষের সুস্থ শরীরে প্রবেশ করতে পারে ।
২- এ ছাড়া উক্ত জীবাণুটি পুরুষদের কাছ থেকে মহিলাদের বেশী সংক্রামিত হয় মাসিক শেষ হওয়ার পর প্রথম সপ্তায় ।
৩- যে সকল মহিলারা দীর্ঘদিন ধরে ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস যৌন জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত তাদের মধ্যে ১৯.৫% বেলায় দীর্ঘদিন পর সন্তান জন্ম দেওয়ার সক্ষমতা ফিরে আসে এবং ৪% বেলায় বন্ধ্যাত্ত হওয়ার সম্বাভনা আছে — তবে এর সাথে অন্যান্য যৌন জীবাণু ও মিশ্রিত থাকে এবং ওভারিয়ান ইনফেকশন জাতীয় সমস্যা প্রায় ই দেখা দিবে ।
৪- গর্ভ অবস্থায় ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হলে উক্ত গভবতি মায়ের ( PROM ) জীবাণুগুলো জরায়ুর মুখ কে ছিদ্র করে ফেলে বিধায়, ৫/৬ মাসে ভিতর গর্ভপাত হওয়ার সম্বাভনা ৮০% ( যদি সঠিক চিকিৎসা করা না হয় ) – বিপরীত দিকে যদি গভপাত না হয় , তাহলে জন্মজাত শিশুটির শারীরিক আকৃতি অত্তান্ত ছোট হয়ে থাকে ( ক্ষিন জন্ম ) , সেই সাথে যদি সিজারিয়ান ডেলিভারি ছাড়া নরমাল ডেলিভারি করা হয় তাহলে নবজাতক শিশুটি জন্মের সাথে সাথে নিউমোনিয়া ও কঠিন ব্রংকাইটিস সহ অন্যান্য নবজাতক অসুখে ভোগবেই । অর্থাৎ কোন মা ই সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার আশা করা ঠিক নয় ।
৫- যাহারা যৌনক্রীড়া করার সময় লেহন ক্রিড়া করেন তাদের বেলায় ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণু টি অন্ত্রে যাওয়ার পর সেখানে অন্যান্য পক্ষের প্যারাসাইট সমুহ ( Trichonympha ) কে উক্তেজিত করে বিধায় অনেকের আই বি এস বা অনিয়িন্ত্রিত পায়খানা জাতীয় অসুখের সৃষ্টি করে থাকে অথবা ট্রাইকোমোনিয়াস থিন্যাক্স Trichomonas tenax ইত্যাদি জীবাণুর সাথে মিলিত হয়ে ফুস্ফুসের প্রদাহ থাকলে তা বৃদ্ধি করতে পারে ( যখন অনেকের ফুস্ফসের প্রদাহ জনিত অসুখে সঠিক ঔষধ প্রয়োগ করার পর ও কাজ হয়না , তখন অন্যান্য ভাইরালের সাথে ট্রাইকোমোনিয়াসিস প্যারাসাইটের সন্ধান পাওয়া যায় )
এ ছাড়া জীবাণুটির লাইফ সার্কেল – টি-স্পাইরালের প্রায় সমান ( টি-স্পাইরাল প্যারাসাইট শুঁয়োর, ইদুরের মাংসে বেশী থাকলেও সদ্য রিসার্চ অনুসারে দেখা যায়, যারা ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিসে পুরাতন ভাবে আক্রান্ত তাদের দেহেও এর উপস্থিতি একটু বেশী — ) — ইত্যাদি..ইত্যাদি .।
৬- এখানে সতর্কতার জন্য মেডিক্যাল ক্রিমিনেলজি থেকে একটি বিষয় উল্লেখ করতে হয় , পুরুষ শাসিত মুসলিম সমাজে সুখী দাম্পত্য নারীদের জন্য – বিশেষ করে যে সকল মহিলারা তার স্বামীকে পরকীয়া জাতীয় অথবা ভাসমান পতিতাদের সাথে মিলিত হওয়ার সন্দেহ করে থাকেন এবং তিনি স্বামীর সাথে মিলনের ৩ থেকে ১৩ দিনের ভিতর যদি অন্য কোন কারন ছাড়া ( আবহাওয়া, পরিবেষ , বা অন্য কোন জীবাণু সংক্রামণে আক্রান্ত না থাকেন ) তার যোনির ভিতর উপরের প্রাথমিক লক্ষন সমুহ দেখা দেয় , তাহলে সাথে সাথে দুজনের জীবাণু কালচার করে এর সঠিক কারন বাহির করতে পারেন, যার ৮০% বেলায় পজেটিভ রেজাল্টই দেখা যায়, প্রমান সাপেক্ষ ! এতে করে সমাজের যৌন লোভী পুরুষদের যৌন হিস্রতা একধাপ কমিয়ে আনা সম্বভ । কেননা পুরুষ শাসিত সমাজে পুরুষরাই জীবাণুটির সংক্রামণ বাহক
ধন্যবাদ ……………………………………………………………।

 

 By: Dr.Helal Kamaly ( MPH ) Std of PhD ( PH & Med Sc ) 
References from: 
 "Metronidazole". HealthExpress. Retrieved 31 July 2013.
Jump up ^ "Sexually Transmitted Diseases Treatment Guidelines, 2010" (PDF). Morbidity and Mortality Weekly Report, CDC. Centers for Disease Control and Prevention. December 17, 2010. Retrieved 2016-06-11.
Jump up ^ Cudmore, S. L.; Delgaty, K. L.; Hayward-Mcclelland, S. F.; Petrin, D. P.; Garber, G. E. (2004). "Treatment of Infections Caused by Metronidazole-Resistant Trichomonas vaginalis". Clinical Microbiology Reviews. 17 (4): 783–93, table of contents. doi:10.1128/CMR.17.4.783-793.2004. PMC 523556free to read. PMID 15489348.
Jump up ^ Ryan, Kenneth James; Ray, C. George; Sherris, John C., eds. (2004). Sherris Medical Microbiology (4th ed.). McGraw Hill. ISBN 978-0-8385-8529-0.[page needed]
Jump up ^ Upcroft, P.; Upcroft, J. A. (2001). "Drug Targets and Mechanisms of Resistance in the Anaerobic Protozoa". Clinical Microbiology Reviews. 14 (1): 150–64. doi:10.1128/CMR.14.1.150-164.2001. PMC 88967free to read. PMID 11148007.
Jump up ^ Arroyo, R.; Engbring, J.; Alderete, J. F. (1992). "Molecular basis of host epithelial cell recognition by Trichomonas vaginalis". Molecular Microbiology. 6 (7): 853–862. doi:10.1111/j.1365-2958.1992.tb01536.x. PMID 1602965.
Jump up ^ Mendoza-Lopez, M. R.; Becerril-Garcia, C.; Fattel-Facenda, L. V.; Avila-Gonzalez, L.; Ruiz-Tachiquin, M. E.; Ortega-Lopez, J.; Arroyo, R. (2000). "CP30, a Cysteine Proteinase Involved in Trichomonas vaginalis Cytoadherence". Infection and Immunity. 68 (9): 4907–12. doi:10.1128/IAI.68.9.4907-4912.2000. PMC 101697free to read. PMID 10948104.
Jump up ^ Carlton, J. M.; Hirt, R. P.; Silva, J. C.; Delcher, A. L.; Schatz, M.; Zhao, Q.; Wortman, J. R.; Bidwell, S. L.; et al. (2007). "Draft Genome Sequence of the Sexually Transmitted Pathogen Trichomonas vaginalis". Science. 315 (5809): 207–12. doi:10.1126/science.1132894. PMC 2080659free to read. PMID 17218520.
Jump up ^ Lehker, M. W.; Alderete, J. F. (1999). "Resolution of Six Chromosomes of Trichomonas vaginalis and Conservation of Size and Number among Isolates". The Journal of Parasitology. 85 (5): 976–9. doi:10.2307/3285842. JSTOR 3285842. PMID 10577741.
Jump up ^ Zimmer, C. (2007). "EVOLUTION: Jurassic Genome". Science. 315 (5817): 1358–9. doi:10.1126/science.315.5817.1358. PMID 17347424.
Jump up ^ Aurrecoechea, Cristina; Brestelli, John; Brunk, Brian P.; Carlton, Jane M.; Dommer, Jennifer; Fischer, Steve; Gajria, Bindu; Gao, Xin; et al. (2009). "GiardiaDB and TrichDB: integrated genomic resources for the eukaryotic protist pathogens Giardia lamblia and Trichomonas vaginalis". Nucleic Acids Research. 37 (Database issue): D526–30. doi:10.1093/nar/gkn631. PMC 2686445free to read. PMID 18824479.
Jump up ^ Mulla, Summaiyaa; Kosambiya, JK; Desai, Vikask; Shethwala, Nimishad (2009). "Sexually transmitted infections and reproductive tract infections in female sex workers". Indian Journal of Pathology and Microbiology. 52 (2): 198–9. doi:10.4103/0377-4929.48916. PMID 19332911.
Jump up ^ Mavedzenge, Sue Napierala; Van der Pol, Barbara; Cheng, Helen; Montgomery, Elizabeth T.; Blanchard, Kelly; de Bruyn, Guy; Ramjee, Gita; Van der Straten, Ariane (2010). "Epidemiological Synergy of Trichomonas vaginalis and HIV in Zimbabwean and South African Women". Sexually Transmitted Diseases. 37 (7): 460–6. doi:10.1097/OLQ.0b013e3181cfcc4b. PMID 20562586.
^ Jump up to: a b Malik SB, Pightling AW, Stefaniak LM, Schurko AM, Logsdon JM (2008). "An