ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস (Trichomonas vaginalis) – ( যৌন রোগ পর্ব -৬ )


ভুমিকা ঃ

t 01

ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস যৌন জীবাণুর দ্বারা অনুমানিক সারা বিশ্বে ১৭০ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত – এটি প্যারাব্যাসিলাইটস শ্রেণীর অন্তরভুক্ত ( parabasalids) এক কোষী পরজীবী প্রাণী – জীবাণুটি দেখতে ডিম্বাকৃতির এবং শ্বেতকণিকার চেয়ে কিছুটা বড়। ( about 10-20 μm long and 2-14 μm wide—) – এটি পরজিবি জীবাণু হিসাবে রক্তের হুয়াইট সেল সমুহ কে ধ্বংস করতে থাকে , যার অবস্থান মহিলাদের যোনী, জরায়ুর মুখ ও কিডনিতন্ত্রের নিচের অংশ ও পুরুষের মুত্রনালী, বীর্য ও প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডে দেখা যায় -মাঝে মধ্যে জীবাণুগুলোর লিঙ্ক মুখ গহব্বর এবং পায়ু পথে দেখা গেলেও সেখানে দীর্ঘ সময় বাঁচেনা – আমারা মজা করে ওকে যৌন ছারপোকা বলতাম । কারন অসুখটি পুরুষের চাইতে মহিলাদের ক্ষতি বেশী করে বা এই জীবাণুর আক্রমণে মহিলাদের শ্বেতস্রাব জাতীয় অসুখের বেশী লক্ষন দেখা দেয় বিধায় একে কেউ কেউ ট্রিচ বা নির্যাস বলে থাকেন ।

 

 

কীভাবে সংক্রামিত হয় ঃ

t 03
সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থান অনুসারে একেক অঞ্চল বা দেশে একেক রকমের হলেও , যারা মহিলা সমকামী, ভাসমান পতিতা, বা যে সকল পুরুষ বা মহিলা গোফনে যৌন সঙ্গির পরিবর্তন করে , তাদের সাথে যৌন মিলনে সুস্থ ব্যাক্তির দেহে সংক্রামিত হয়ে থাকে । এক কথায় অবৈধ যৌন মিলনের মাধ্যমেই জীবাণুটি বেশী সংক্রামিত হয় এবং তার মধ্যে সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকেন সমাজের অর্ধ শিক্ষিত রক্ষণশীল পুরুষ শাসিত নারীরা । তা ছাড়া যদি উক্ত মহিলা গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে অসুখটি দ্রুত গর্ভপাত অথবা গরভস্থ সন্তান ক্ষিন জন্মা হওয়ার সম্মবাভনা বেশী আছেই ।
অনেক মহিলার যৌনাঙ্গে সুপ্ত অবস্থায় জীবাণুটি অনেকদিন লুকিয়ে থাকতে পারে বিধায় ৭৪% বেলায় মহিলারাই ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণুর আশ্রয়কারী এবং বিপরীত দিকে অসুখটি ৮০% বেলায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থনাতরিত হয় পুরুষের মাধ্যমে অর্থাৎ সংক্রামণকারী –
জীবাণুটি নতুন ভাবে সংক্রামিত হওয়ার পর, পুরুষ বা নারী কেউ তেমন একটা বুজতে পারেন না, তার কারন সামান্য চুলকানি ও প্রস্রাবে অল্প জ্বলা যন্ত্রণা ছাড়া অনেকের বেলায় তেমন একটা লক্ষন দেখা যায়না, সে জন্য জিবানুটিকে অনেকের অজান্তেই লালন পালন করে থাকেন ।

 

যৌন মিলন ছাড়াও যে ভাবে জীবাণুটি সংক্রামিত হতে পারে –

t 1
মহিলাদের মাসিক চলাকালীন সময়ে মহিলাদের কাছ থেকে যৌন মিলন ছাড়া ও তার মাসিকের ব্যাবহার কৃত কাপড় চোপড় বা উক্ত জীবাণু আক্রান্ত ব্যাক্তির জীবাণুযুক্ত টয়লেট পেপার, টাওয়াল, নোংরা কাপড় পরলেও সুস্থ দেহে সংক্রামিত হতে পারে -এমন কি উক্ত জীবাণু আক্রান্ত ব্যাক্তির ব্যাবহার কৃত গোসল বা সাওারের পানি থেকেও সুস্থ ব্যাক্তি আক্রান্ত হতে পারেন – ।
মোট কথায় জীবাণুটি স্যাঁতসেঁতে ও আর্দ্র পরিবেষে ৬ ঘন্টা এবং প্রস্রাব, পানি ও বীর্যতে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে বিধায় গামছা, ভিজা পোশাক, অথবা টয়লেট আসন ইত্যাদি থেকে যৌনাঙ্গ এলাকায় সংক্রামিত হতে পারে , যার পরিমাণ ২১% ।

 

 

লক্ষন ঃ-

t 4

প্রাথমিক অবস্থায় ( পুরুষ )
ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণু সংক্রামণের লক্ষন প্রাথমিক লক্ষন ৪-২৮ দিনের ভিতর দেখা দিতে পারে যা পুরুষের বেলায় প্রসাবের রাস্তায় সামান্য পরিমাণ জ্বালা-যন্ত্রণা ও  সামান্য চুলকানি ছাড়া আর তেমন কিছু দেখা যায়না । কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় গুরত্ত না দিলে  পরবতিতে বিশেষ করে এর সাথে অন্যান্য ভাইরাস ব্যাক্টোরিয়া যুক্ত হয়ে (  মাইকোপ্লাসমা হোমিনিস, ইউরিয়াপ্লাসমা ইউরিয়া লাইটিকাম, গনোকক্কাস, ক্লামাইডিয়া, হারপিস সিমপ্লেক্স ইত্যাদি  ) যুক্ত হয়ে  অসুখটিকে গুরুত্বর পর্যায়ে নিয়ে যায় ।

 

সেকেন্ডারি পর্যায়ের লক্ষন ঃ

t 08

পুরুষের বেলায় ঃ- পুরুষের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের নালির অগ্রভাগে লক্ষ্য করলে প্রদাহজনিত লালচে ভাব এবং প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া বা যন্ত্রণা অনুভূত হওয়া সহ মূত্রনালি তে ইনফেকশন দেখা দিয়ে থাকে । সেই সাথে সাদা পানির মত পিচ্ছিল পদার্থ বের হওয়া বা সকালের প্রস্রাবে খুবী অল্প হলদে আঠালো অল্প পুজ দেখা দিতে পারে, বা অনেকে প্রস্রাব বন্ধ হওয়ার মত ভাব অনুভব করে থাকেন – যার মধ্যে ১২% বেলায় জীবাণু সমুহ প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড কে আক্রমণ করে প্রস্টাইটিস জাতীয় অসুখের সৃষ্টি করে ।

 

 

মহিলাদের বেলায় ঃ

t 09
প্রাথমিক ভাবে ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণু সংক্রামন হওয়ার পর যোনির নিঃসরণ যা পাতলা থেকে শুরু করে হলদে রঙের হতে পারে। যোনিপথের চুলকানি ( বিশেষ করে যোনির ভুলবা এবং লেবিয়াতে চুল্কানির পরিমাণ বেশী দেখা দেয় ) – তলপেটের ব্যাথা, ঘন ঘন প্রসাব হওয়া এবং জ্বালা যন্ত্রণা সহ যৌনমিলনের সময় ব্যথা এবং যোনীদ্বারে ফোলা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে । সে সময় সাময়িক ঔষধ সেবন অথবা শরীরের এন্টিবডির কারনে কিছুদিন পর অসুখটি এমনিতেই কমে গেলেও পরজীবী হিসাবে যৌন তন্ত্রে থেকে যায় এবং সুস্থ ব্যাক্তির দেহে সংক্রামিত করে থাকে । পরবর্তীতে যখন অন্যান্য জীবাণু এর সাথে মিলিত হয় তখন দেখা দেয় শ্রী -রোগ জাতীয় নানা সমস্যা বিশেষ করে ইউ টি আই এবং ও টি আই জনিত ইনফেকশন ইত্যাদি ।

 

অসুখটি ক্রনিক পর্যায়ে চলে গেলে যা দেখা দেয় ঃ

t 010

যোনি স্রাব যাকে সাধারণ ভাবে অনেকে লিউকোরিয়া মনে করেন , তা হলুদ, সবুজ বা পাতলা ধূসর বর্ণের এবং মাছের আচের গন্ধের মত দুর্গন্ধ মনে হয় । সেই সাথে তলে পেটের ব্যাথা বিনা কারনেই বৃদ্ধি পায় , বিশেষ করে মাসিক স্রাবের সময় বেশী বৃদ্ধি পায় এবং প্রস্রাব করতে জ্বালা পোড়া সহ প্রস্রাবের নালীর ভিতর ইনফেকশন বাড়তে থাকে ( ইউ টি আই এবং ও টি আই জাতীয় অসুখের প্রদাহ বৃদ্ধি পায় ) একি সাথে যোনির ভিতরের ফোলা বৃদ্ধি পেয়ে জরায়ুর সারভিক্সের মুখে ইনফেকশন এবং সেখানে চুলকানি অনুভুত হতে পারে । সে সময় যোনিপথ পরীক্ষা করলে প্রদাহের কারণে ফোলা লালচে ভাব দেখা যায় , যা সামান্য একটু আঘাতেই রক্ত ঝরতে পারে এবং ভেতরে যে নিঃসরণ স্রাব দেখা যায় তা পানির মতো এমনকি চুনের পানির মতো দেখা যেতে পারে। উক্ত মহিলাদের ফ্যালোপিয়ান টিউব ইনফেকশন সহ জরায়ুর মুখে ক্যানসার জাতীয় অসুখ হওয়া এমন অবাস্থব কিছু নয় বা উক্ত মহিলারা এইচ আই ভি ভাইরাসের স্বীকার বেশী হয়ে থাকেন ।
সেই সাথে নিয়ম অনুসারে পর্যায়ক্রমে গন-কক্ষাস , ইস্ট ভাইরাস বা ক্যান্ডিডা জীবাণু যুক্ত হয়ে স্থায়ী ভাবেই পুরাতন শ্বেতস্রাব জাতীয় অসুখের লক্ষন সহ হাজার ও সমস্যা তৈরি করে এবং তখন অসুখটি সম্পূর্ণ সুস্থ হতে কয়েকমাস থেকে বছর ও চলে যেতে পারে ।
গবেষণা অনুসারে দেখা যায় জীবাণুটি সংক্রামণের পর মহিলাদের যৌনাঙ্গে ( his structure allows the protist to attach to and tear the urethra or vaginal walls) কয়েক মাস বা বছর পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় পরজীবী হিসাবে বসবাস করে থাকে এবং সহবাসের মাধ্যমে তা সুস্থ দেহে সংক্রামিত হতে থাকে কিন্তু পুরুষের বেলায় সুপ্ত অবস্থায় ২৮ দিনের বেশী থাকতে পারে না – গবেষণা অনুসারে আরও দেখা যায় স্বল্প উন্নত দেশ সমুহে, অসুখটির প্রাইমারী লক্ষন দেখা দেওয়ার পর ৩১.২০% বেলায় সঠিক মান সম্মত এন্টিবায়োটিক , সঠিক ডোজে ঔষধ সেবন না করার ফলেই জিবানুটি শরীরে থেকে যায় এবং পরবর্তীতে অন্যান্য সংক্রামণ জনিত অসুখের সাথে মিলিত হয়ে অসুখটির আত্মপ্রকাশ করে , যার মধ্যে গনরিয়া ও মহিলাদের শ্বেতস্রাব বা লিউকোরিয়া জাতীয় অসুখের লক্ষন সহ জনন জনন তন্ত্রের অন্যান্য মারাত্মক অসুখ দেখা দিয়ে থাকে । ( ডাঃ হেলাল, পাবলিক হেলথ এন্ড মেডিঃ সাইন্স )

আমার ব্যাক্তিগত দৃষ্টিতে ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণু সংক্রামিত মহিলাদের সন্তান ধারন করা ঠিক নয় ! কারন – উক্ত মহিলা সময়ের আগে সন্তান প্রসব অথবা থ্রেটেন্ড এবরশন হওয়ার ঝুঁকি বেশী থাকে ( PROM – উক্ত জীবাণুগুলো জরায়ুর মুখ কে ছিদ্র করে ফেলে বিধায় গর্ভথলীর পানি ফুটো হয়ে বের হয়ে যায় ) – আর যদি ঠিক সময় মত প্রসব হয় ও তাহলে উক্ত শিশুটির ওজন অতা্ন্ত কম হবে এবং সেই সাথে শিশুটির নিউমোনিয়া , ব্রংকাইটিস, মুখের ঘা সহ আজীবন পুস্টিহিনতায় ভুগতে পারে । তবে চাইলে বিশেষজ্ঞের পরামর্ষে সঠিক সময়ের আগে সিজারিয়ান অপারেশন করে শিশুটিকে ক্ষীণকার প্রজন্ম থেকে রক্ষা করা সম্বভ । ( যদি ও বিষয়টি অনেক ব্যায়বহুল )

 

 

মহিলাদের বেলায় একটা ভুল ধারনা প্রচলিত শ্বেতপ্রদর বা লিউকোরিয়া নিয়ে ঃ

t 011
মহিলাদের লিউকোরিয়া বা শ্বেতপ্রদর জাতীয় অসুখ বৃদ্ধি পাওয়ার আরেকটি অন্যতম কারন এই ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণু – মুলত মহিলাদের লিউকোরিয়া বা শ্বেতপ্রদর বলতে বুজায় যোনিপথ , জরায়ু বা তার জনন তন্ত্রের যে কোন একটা প্রদাহ জনিত অসুখের একটা লক্ষন – ৭০% বেলায় ট্রাইকোমোনাস ভ্যাজিনালিস এবং ক্যানডিডা অ্যালবিকানস এই দুটি জীবাণুর সাথে ইস্ট ও অন্যান্য ব্যাক্টোরিয়া যুক্ত হয়ে এই সাদা স্রাব উৎপাদিত হয় এবং যার মধ্যে ৯০% যৌন জীবাণু জনিত কারনেই অসুখটি হয়ে থাকে ( বিস্তারিত শ্রী -রোগ পর্বে তুলে ধরা হবে, কীভাবে এই শ্বেতস্রাবের উৎপত্তি হয় বা শরীরের কি কি ক্ষতি করে ইত্যাদি ) মুলত ইহা অসুখ নয় বরং অন্য অসুখের লক্ষণ ।

 

 

পরীক্ষানিরীক্ষা ঃ

t 012
প্রথমত ফিজিক্যালি পরিক্ষা হিসাবে একজন শ্রী- রোগ চিকিৎসক যোনির ভিতরের অবস্থা দেখেই বলতে পারেন ইহা ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত কি না – বিশেষ করে যোনির ভিতর বা জরায়ুর মুখে লাল অসংখ্য ফুস্কুড়ি সহ যোনির দেওয়াল ফোলে থাকে, সেই সাথে তাথে সামান্য চাপ দিলে খুব সহজেই রক্ত বেরিয়ে আসে ইত্যাদি ছাড়া ও রোগীর অসুখের লক্ষন ( উপরে এবং ছবি দেখে মিলিয়ে নিন ) বিদ্যমান থাকে –

এ রোগটি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সাধারণত ল্যাবরেটরি পরীক্ষার সাহায্য ছাড়াই চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে ( মেডিক্যাল আইন অনুসারে যদিও নিয়ম সঠিক পরিক্ষার পর ঔষধ প্রয়োগ করা ) তবে অনুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্য রোগটি খুব সহজেই শনাক্ত করা যায় । কিন্তু যদি তা 104 organisms/mL আয়াতনের নিচে হয় তাহলে ধরা পড়েনা অন্তত লিম্পসাইটের সমান (10 µm to 20 µm) হলে জীবাণুটি সুন্দর ভাবেই দেখা যায় – অথবা এন্টিজেন টেস্ট (antibodies bind if the Trichomonas parasite is present, causing a color change that indicates infection) অথবা সর্বশেষ আধুনিক পদ্ধতিতে হিসাবে Trichomonas DNA করে নিশ্চিত হতে পারেন এবং একি সাথে মহিলাদের বেলায় জরায়ুর মুখে ক্যানসার বা ঐ জাতীয় সেলের সন্দেহ দুর করার জন্য পেপ-টেস্ট করে নেওয়া ভাল ।
যিনি আক্রান্ত হবেন তার স্বামী বা শ্রী-কে ও পরিক্ষার প্রয়োজন হতে পারে , তিনিও অন্য কোন যৌন জীবাণুর দ্বারা সংক্রামিত কি না ?

 

 

চিকিৎসা ঃ

t 07
চিকিৎসার আগে জীবাণু বহনকারী নারী বা পুরুষের ব্যাবহারিক কাপড় চোপর একটু সাবধানে সরিয়ে রাখা উচিৎ কেননা উক্ত কাপড়ে জীবাণুগুলো আদ্র পরিবেষে ৬ /২৪ ঘন্টা পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে বিধায়- অন্য কেউ তা ভালভাবে পরিষ্কার না করে, পরিধান করা মোটেই উচিৎ নয় এবং সেই সাথে তাও মনে রাখতে হবে যেহেতু ইহা ব্যাক্টোরিয়া ( প্রটোজোয়া ) জনিত সংক্রামণ তাই এন্টিমাইক্রোবিয়াল প্যারাসাইটিক্স ড্রাগস ছাড়া অন্যান্য সকল পদ্ধতির চিকিৎসা বা ঔষধ এই অসুখটির বেলায় সম্পূর্ণ অকার্যকর ( ডাঃ হেলাল )

এন্টিমাইক্রোবিয়াল প্যারাসাইটিক্স ড্রাগস হিসাবে চিকিৎসকের পরামর্ষ অনুসারে , প্রাইমারী চিকিৎসা হিসাবে – মেট্রোনিডাজোল গ্রোফের ঔষধ পূর্ণ ডোজ স্বামী শ্রী উভয়য়ের সেবন করে যাওয়া উচিৎ । (৪০০ মিলিগ্রামের ট্যাবলেট প্রতিদিন ২টি করে ৫ থেকে ৭ দিন )। দুধ দাতা মায়ের বেলায় ঔষধ টি সেবন করলে ১০/১২ ঘন্টা পর সন্তান কে দুধ দেওয়া উচিৎ —
অথবা আপনার চিকিৎসকের পরামর্ষে টিনিডাজল গ্রোফের ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন তবে দুধ দাতা মা এবং গর্ভবতীর বেলায় তা সেবন করা নিষেধ ।

সেই সাথে চুলাকানি থাকলে ক্লোট্রিমাজল ১% ভ্যাজিনাল ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন অথবা যোনিতে ক্লোট্রিমাজল ভ্যাজিনাল ট্যাবলেট রোজ দুবার ছয় দিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন ।
মেডিক্যাল জার্নালের রিপোর্ট অনুসারে দেখা যায়, তৃতীয় বিশ্বের কয়েকটি দেশে পুরাতন রোগীদের বেলায় মেট্রোনিডাজল গ্রোফের ঔষধ উক্ত জীবাণুকে ধ্বংস করতে অনেকের রেসিস্টেন্স ক্যাপাসিটি ঠিক মত কাজ করেনা তখন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্ষে টিনিডাজলের সাথে প্যারোমমাইসিন ( paromomycin in combination with high-dose tinidazole ) সেবন করে ৯৫% বেলায় সুস্থ হওয়ার কথা — এরপর ও যদি কাজ না হয় তাহলে বিশেষজ্ঞরা এন্টি-প্যারাসাইটিক্স ড্রাগস হিসাবে নিটাজক্সনাইড ( একটু বেশী ব্যায়বহুল বা এন্টিভাইরাল হিসাবে ও ঔষধ টি বেশী কার্যকরি nitazoxanide ) গ্রোফের ঔষধ সেবন সহ অন্যান্য ক্রিম বা ভ্যাজিনাল ট্যাবলেট ব্যাবহার করে ১০০% সুস্থ হওয়ার কথা ।
একি সাথে বিকল্প পদ্ধতি অনুসারে শরীরের এন্টিবডি বৃদ্ধি করার জন্য এন্টিওক্সাইডেন্ট খাবার সহ ভিটামিন এ, সি, ই, এবং জিঙ্ক সাপ্লিমেন্টারী ঔষধ সেবন করলে ভাল । সেই সাথে মিস্টি ও শরকরা জাতীয় খাবার একটু কমিয়ে খেতে হবে ……………।।

 

সাবধানতা ঃ

t 014

ঔষধ সেবন করার পরও কোন অবস্থায় সেইফ ম্যাথড ছাড়া পূর্ণ ২৮ দিন সহবাস করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং অসুখটি দীর্ঘদিনের পুরাতন হলে জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন করা থেকে বিরত থাকা ভাল যদি ইস্ট ভাইরাস সাথে সংযোক্ত থাকে , সেই কারনে —

 

 

 

রিসার্চ এবং ফলাফল ঃ

t 5
১- মেডিক্যাল সাইন্স এন্ড রিসার্চের গবেষণা অনুসারে দেখা যায় কনডম বা ঐ জাতীয় ব্যাবস্থা জন্ম নিয়ন্ত্রণ ব্যাবস্তায় শত ভাগ কার্যকরী হলে ও যৌন জীবাণু প্রতিরোধের বেলায় শতভাগ প্রতিরোধক নয় , বিশেষ করে ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণু মহিলাদের বেলায় ৮৯% প্রতিরোধক , তার কারন বেশীরভাগ একটিভ জীবাণু মহিলাদের ক্লিটরের নিচে ভুলবা তে অবস্থান করে বিধায় কনডম ব্যবহারে যৌন মিলনের সময় সরাসরি লিঙ্গে আক্রমণ করতে না পারলেও ভুলবা থেকে পুরুষের সুস্থ শরীরে প্রবেশ করতে পারে ।
২- এ ছাড়া উক্ত জীবাণুটি পুরুষদের কাছ থেকে মহিলাদের বেশী সংক্রামিত হয় মাসিক শেষ হওয়ার পর প্রথম সপ্তায় ।
৩- যে সকল মহিলারা দীর্ঘদিন ধরে ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস যৌন জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত তাদের মধ্যে ১৯.৫% বেলায় দীর্ঘদিন পর সন্তান জন্ম দেওয়ার সক্ষমতা ফিরে আসে এবং ৪% বেলায় বন্ধ্যাত্ত হওয়ার সম্বাভনা আছে — তবে এর সাথে অন্যান্য যৌন জীবাণু ও মিশ্রিত থাকে এবং ওভারিয়ান ইনফেকশন জাতীয় সমস্যা প্রায় ই দেখা দিবে ।
৪- গর্ভ অবস্থায় ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হলে উক্ত গভবতি মায়ের ( PROM ) জীবাণুগুলো জরায়ুর মুখ কে ছিদ্র করে ফেলে বিধায়, ৫/৬ মাসে ভিতর গর্ভপাত হওয়ার সম্বাভনা ৮০% ( যদি সঠিক চিকিৎসা করা না হয় ) – বিপরীত দিকে যদি গভপাত না হয় , তাহলে জন্মজাত শিশুটির শারীরিক আকৃতি অত্তান্ত ছোট হয়ে থাকে ( ক্ষিন জন্ম ) , সেই সাথে যদি সিজারিয়ান ডেলিভারি ছাড়া নরমাল ডেলিভারি করা হয় তাহলে নবজাতক শিশুটি জন্মের সাথে সাথে নিউমোনিয়া ও কঠিন ব্রংকাইটিস সহ অন্যান্য নবজাতক অসুখে ভোগবেই । অর্থাৎ কোন মা ই সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার আশা করা ঠিক নয় ।
৫- যাহারা যৌনক্রীড়া করার সময় লেহন ক্রিড়া করেন তাদের বেলায় ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস জীবাণু টি অন্ত্রে যাওয়ার পর সেখানে অন্যান্য পক্ষের প্যারাসাইট সমুহ ( Trichonympha ) কে উক্তেজিত করে বিধায় অনেকের আই বি এস বা অনিয়িন্ত্রিত পায়খানা জাতীয় অসুখের সৃষ্টি করে থাকে অথবা ট্রাইকোমোনিয়াস থিন্যাক্স Trichomonas tenax ইত্যাদি জীবাণুর সাথে মিলিত হয়ে ফুস্ফুসের প্রদাহ থাকলে তা বৃদ্ধি করতে পারে ( যখন অনেকের ফুস্ফসের প্রদাহ জনিত অসুখে সঠিক ঔষধ প্রয়োগ করার পর ও কাজ হয়না , তখন অন্যান্য ভাইরালের সাথে ট্রাইকোমোনিয়াসিস প্যারাসাইটের সন্ধান পাওয়া যায় )
এ ছাড়া জীবাণুটির লাইফ সার্কেল – টি-স্পাইরালের প্রায় সমান ( টি-স্পাইরাল প্যারাসাইট শুঁয়োর, ইদুরের মাংসে বেশী থাকলেও সদ্য রিসার্চ অনুসারে দেখা যায়, যারা ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিসে পুরাতন ভাবে আক্রান্ত তাদের দেহেও এর উপস্থিতি একটু বেশী — ) — ইত্যাদি..ইত্যাদি .।
৬- এখানে সতর্কতার জন্য মেডিক্যাল ক্রিমিনেলজি থেকে একটি বিষয় উল্লেখ করতে হয় , পুরুষ শাসিত মুসলিম সমাজে সুখী দাম্পত্য নারীদের জন্য – বিশেষ করে যে সকল মহিলারা তার স্বামীকে পরকীয়া জাতীয় অথবা ভাসমান পতিতাদের সাথে মিলিত হওয়ার সন্দেহ করে থাকেন এবং তিনি স্বামীর সাথে মিলনের ৩ থেকে ১৩ দিনের ভিতর যদি অন্য কোন কারন ছাড়া ( আবহাওয়া, পরিবেষ , বা অন্য কোন জীবাণু সংক্রামণে আক্রান্ত না থাকেন ) তার যোনির ভিতর উপরের প্রাথমিক লক্ষন সমুহ দেখা দেয় , তাহলে সাথে সাথে দুজনের জীবাণু কালচার করে এর সঠিক কারন বাহির করতে পারেন, যার ৮০% বেলায় পজেটিভ রেজাল্টই দেখা যায়, প্রমান সাপেক্ষ ! এতে করে সমাজের যৌন লোভী পুরুষদের যৌন হিস্রতা একধাপ কমিয়ে আনা সম্বভ । কেননা পুরুষ শাসিত সমাজে পুরুষরাই জীবাণুটির সংক্রামণ বাহক
ধন্যবাদ ……………………………………………………………।

 

 By: Dr.Helal Kamaly ( MPH ) Std of PhD ( PH & Med Sc ) 
References from: 
 "Metronidazole". HealthExpress. Retrieved 31 July 2013.
Jump up ^ "Sexually Transmitted Diseases Treatment Guidelines, 2010" (PDF). Morbidity and Mortality Weekly Report, CDC. Centers for Disease Control and Prevention. December 17, 2010. Retrieved 2016-06-11.
Jump up ^ Cudmore, S. L.; Delgaty, K. L.; Hayward-Mcclelland, S. F.; Petrin, D. P.; Garber, G. E. (2004). "Treatment of Infections Caused by Metronidazole-Resistant Trichomonas vaginalis". Clinical Microbiology Reviews. 17 (4): 783–93, table of contents. doi:10.1128/CMR.17.4.783-793.2004. PMC 523556free to read. PMID 15489348.
Jump up ^ Ryan, Kenneth James; Ray, C. George; Sherris, John C., eds. (2004). Sherris Medical Microbiology (4th ed.). McGraw Hill. ISBN 978-0-8385-8529-0.[page needed]
Jump up ^ Upcroft, P.; Upcroft, J. A. (2001). "Drug Targets and Mechanisms of Resistance in the Anaerobic Protozoa". Clinical Microbiology Reviews. 14 (1): 150–64. doi:10.1128/CMR.14.1.150-164.2001. PMC 88967free to read. PMID 11148007.
Jump up ^ Arroyo, R.; Engbring, J.; Alderete, J. F. (1992). "Molecular basis of host epithelial cell recognition by Trichomonas vaginalis". Molecular Microbiology. 6 (7): 853–862. doi:10.1111/j.1365-2958.1992.tb01536.x. PMID 1602965.
Jump up ^ Mendoza-Lopez, M. R.; Becerril-Garcia, C.; Fattel-Facenda, L. V.; Avila-Gonzalez, L.; Ruiz-Tachiquin, M. E.; Ortega-Lopez, J.; Arroyo, R. (2000). "CP30, a Cysteine Proteinase Involved in Trichomonas vaginalis Cytoadherence". Infection and Immunity. 68 (9): 4907–12. doi:10.1128/IAI.68.9.4907-4912.2000. PMC 101697free to read. PMID 10948104.
Jump up ^ Carlton, J. M.; Hirt, R. P.; Silva, J. C.; Delcher, A. L.; Schatz, M.; Zhao, Q.; Wortman, J. R.; Bidwell, S. L.; et al. (2007). "Draft Genome Sequence of the Sexually Transmitted Pathogen Trichomonas vaginalis". Science. 315 (5809): 207–12. doi:10.1126/science.1132894. PMC 2080659free to read. PMID 17218520.
Jump up ^ Lehker, M. W.; Alderete, J. F. (1999). "Resolution of Six Chromosomes of Trichomonas vaginalis and Conservation of Size and Number among Isolates". The Journal of Parasitology. 85 (5): 976–9. doi:10.2307/3285842. JSTOR 3285842. PMID 10577741.
Jump up ^ Zimmer, C. (2007). "EVOLUTION: Jurassic Genome". Science. 315 (5817): 1358–9. doi:10.1126/science.315.5817.1358. PMID 17347424.
Jump up ^ Aurrecoechea, Cristina; Brestelli, John; Brunk, Brian P.; Carlton, Jane M.; Dommer, Jennifer; Fischer, Steve; Gajria, Bindu; Gao, Xin; et al. (2009). "GiardiaDB and TrichDB: integrated genomic resources for the eukaryotic protist pathogens Giardia lamblia and Trichomonas vaginalis". Nucleic Acids Research. 37 (Database issue): D526–30. doi:10.1093/nar/gkn631. PMC 2686445free to read. PMID 18824479.
Jump up ^ Mulla, Summaiyaa; Kosambiya, JK; Desai, Vikask; Shethwala, Nimishad (2009). "Sexually transmitted infections and reproductive tract infections in female sex workers". Indian Journal of Pathology and Microbiology. 52 (2): 198–9. doi:10.4103/0377-4929.48916. PMID 19332911.
Jump up ^ Mavedzenge, Sue Napierala; Van der Pol, Barbara; Cheng, Helen; Montgomery, Elizabeth T.; Blanchard, Kelly; de Bruyn, Guy; Ramjee, Gita; Van der Straten, Ariane (2010). "Epidemiological Synergy of Trichomonas vaginalis and HIV in Zimbabwean and South African Women". Sexually Transmitted Diseases. 37 (7): 460–6. doi:10.1097/OLQ.0b013e3181cfcc4b. PMID 20562586.
^ Jump up to: a b Malik SB, Pightling AW, Stefaniak LM, Schurko AM, Logsdon JM (2008). "An

Leave a comment